বাঁচা হলো না কারোই…
সাঁতার জানা না জানলেও পুকুরের অথৈ পানিতে ঝাঁপ দেয় বড় ভাই মারজান। যদি কোনোভাবে তলিয়ে যাওয়া ছোট ভাই মিজানকে বাঁচানো যায়। প্রাণপণ চেষ্টাও করে সে ছোট ভাইটিকে পানির ওপরে তুলতে।
কিন্তু না, এক পর্যায়ে নিজেই তলিয়ে যেতে থাকে। দুই ভাই মিলেই তলিয়ে যায় পুকুরের গভীরে। পরে এলাকাবাসী পুকুর থেকে দুই ভাইয়ের মৃতদেহ উদ্ধার করে।
এ ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার দুপুর ১টার দিকে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার মোক্তারপুর গ্রামে। এক সঙ্গে দুই ভাইয়ের মৃত্যুতে তাদের মা-বাবা পাগলপ্রায়। গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে গ্রামে।
নিহতরা হচ্ছে- মিজানুর রহমান মিজান (৬) ও তার বড় ভাই মারজান আলী (৮)। তাদের বাবা তারা মিয়া সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির হাবিলদার পদে কর্মরত।
চারঘাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাজ্জাদ হোসেন জানান, তারা মিয়া পুলিশ একাডেমির পাশে মোক্তারপুর গ্রামের আজিজুল হকের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। দুপুর ১টার দিকে তারা মিয়ার ছোট ছেলে মিজান বাড়ির পাশের একটি পুকুরে গোছল করতে নামে। এসময় মিজান পানিতে ডুবে যেতে থাকে। দূর থেকে বড় ভাই ঘটনা দেখার পর ছুটে আসে। ঝাঁপিয়ে পড়ে পুকুরের পানিতে। প্রাণপণ চেষ্টা করে মিজানকে পানি থেকে তুলতে। তবে সাঁতার না জানার জন্য এক পর্যায়ে মারজানও পানিতে তলিয়ে যায়।
পরে স্থানীয়রা দ্রুত তাদের উদ্ধার করে চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। কিন্তু সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক দুই ভাইকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে, এক সঙ্গে দুই ভাইয়ের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীরা ছুটে আসে তাদের বাড়িতে। এসময় সবার কান্না ও আর্তনাদে পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে।
মিজান ও মারজানের মা শাপলা বেগম এখন দুই ছেলেকে হারিয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন। দুই ছেলের লাশ দেখে বার বার জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন। বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।
পুলিশের হাবিলদার তারা মিয়া বলেন, দুই ছেলের মৃতদেহ গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেখানেই তাদের দাফন করা হবে।
মন্তব্য চালু নেই