বর্ণিল শোভাযাত্রায় জনতার ঢল
‘অনেক আলো জ্বালতে হবে মনের অন্ধকারে’ এ স্লোগানের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ১৪২২ বাংলা নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রা।
মঙ্গলবার সকাল ৯টা ১৭ মিনিটে শোভাযাত্রাটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে শুরু হয়। শোভাযাত্রাটি শাহবাগ ও রূপসী বাংলা মোড় ঘুরে টিএসসি হয়ে আবার চারুকলা অনুষদে এসে শেষ হবে। শোভাযাত্রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন। সাম্প্রদায়িক চেতনায় উজ্জিবিত হয়ে যুদ্ধাপরাধ ও জঙ্গিবাদমুক্ত দেশ গড়ার প্রত্যয়ে বের করা হয় এবারের শোভাযাত্রা।
বর্ণিল প্রাণের উচ্ছ্বাসে বাংলা নববর্ষকে বরণ করেছে গোটা জাতি। ‘মুছে যাক গ্লানি ঘুচে যাক জরা, অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা’- এই আহবানে মঙ্গলবার নতুন বছরকে বরণ করে নিতে সারা দেশে নেমেছে জনতার ঢল। জাগ্রত চিত্তে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে উদ্যত হতে নির্ভীক পথচলার অঙ্গীকার নির্যাস ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বব্যাপী।
বর্ষবরণের এ উৎসবে কেউ এসেছেন পরিবার পরিজনদের নিয়ে, কেউ এসেছেন যুগলভাবে। আবার অনেকেই এসেছেন দল বেধে। যে যেভাবেই আসুক না কেন দেশীয় পোশাক-পরিচ্ছদে সবাই বিশেষ পরিপাটি। তরুণ-তরুণী এবং শিশুরাসহ সব বয়সের নারী-পুরুষ সেজেছে রঙিন সাজে। নারীরা সাদা জমিনে লাল পেড়ে শাড়িতে খোপায় সাদা ফুল, আর পুরুষদের লাল-সাদা পাঞ্জাবি-পাজামার সাজের অনুকরণে শিশু-কিশোরদের এক বর্ণিল সাজে সেজেছে বাংলাদেশ। পহেলা বৈশাখে মঙ্গল শোভাযাত্রার সাথে নতুন দিনের পথে এগোনোর শপথ নিয়েছে সবাই। মঙ্গল শোভাযাত্রা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আর লোকজ মেলায় ভিন্ন এক সাজে সেজেছে গোটা বাংলাদেশ। পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পৃথক পৃথক বর্ষবরণ অনুষ্ঠান পুরো ক্যাম্পাস এলাকায় তৈরি করেছে ভিন্ন এক আবহ।
শোভাযাত্রা উপলক্ষে মঙ্গলবার সকাল থেকেই দোয়েল চত্বর, টিএসসি, শাহবাগ ও এর আশপাশের এলাকায় মানুষ জড়ো হতে থাকেন। ৯টা বাজতেই পুরো এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। লাল-সাদা পোশাকে উচ্ছল নারীদের মাথায় শোভিত নানান রঙের ফুল। তরুণদের ভেপুর শব্দে আনন্দের উষ্ণতা ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়। তপ্ত রোদে ঘামছেন সবাই, হাতে হাতে বর্ণিল পাখা। ‘অনেক আলো জ্বালতে হবে মনের অন্ধকারে’-মানব মনকে কলুষতা মুক্ত করে অপশক্তির কাছে বন্দি সাধারণ মানুষকে মুক্ত করতে সামনের দিকে প্রকাশিত হয়েছে বড় একটি হাত। শিল্পী জামিনী রায়ের স্মরণে রয়েছে হাতির প্রতিকৃতি। আর এর সাথে রয়েছে নানা রঙের মুখোশ, রং বে-রঙয়ের চরকি। এ ছাড়া বাঘ, হাঁস, বিড়াল, শখের হাঁড়ি, শিশু হরিণ, পেঁচা, কাগুজে বাঘ, ছোট-বড়-মাঝারি আকৃতির তুহিন পাখিসহ দারুণ সব মোটিভের কাঠামোও প্রদর্শিত হচ্ছে শোভাযাত্রায়।
মন্তব্য চালু নেই