বন্ধ হবে হাতির দাঁতের ব্যবসা?

হাতির দাঁতের উপর নকশা করে নানারকম শৌখিন জিনিসপত্র তৈরি করা চীনে শত শত বছরের পুরনো ব্যবসা। তবে এই হস্তশিল্পীদের যুগ এখন শেষ হতে চলেছে।
বন্য প্রাণী রক্ষা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা, সাইটিসের কর্মকর্তা জন স্কানলন বলছেন, বুনো হাতি রক্ষায় এটি একটি যুগ সন্ধিক্ষণ।
তিনি বলেন, “চীনে এটি একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময়, যখন আমরা দেখছি যে, হাতির দাঁতের ব্যবসা বন্ধের সিদ্ধান্তটি খুবই কার্যকর ভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে। এখানে অনেক হাতির দাঁতের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে, আরো কিছু বন্ধের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। একে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সময় বলা যেতে পারে”।
চীনের এই সিদ্ধান্ত একটু দেরী করেই এলো। দাঁত আছে, আফ্রিকার এমন হাতিগুলো এখন বিলুপ্তির ঝুঁকিতে পড়েছে। আর এসব হাতি হত্যার সবচেয়ে বড় কারণ হাতির দাঁত, যার সবচেয়ে বড় চাহিদা চীনে। দেশটিতে এসব দাঁতের অন্তত ৭০ শতাংশ পাচার হয়ে থাকে।
চীনে এরকম দাঁতের একজন ব্যবসায়ী লিও ফাঙহাই। চীনা সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়েছে তার ব্যবসাতেও, আর তাই তিনি বেশ ক্ষুণ্ণ।
তিনি দাবি করছিলেন, চীনের সরকারের নিয়মনীতি মেনেই তার দাঁতের সরবরাহ আসে।
“আমার খারাপ লাগছে, কারণ এই শিল্পটি আমি ভালোবাসি। তবে এভাবে ব্যবসা বন্ধ করেও, হাতির দাঁতের বেআইনি ব্যবসা বন্ধ করতে পারবেন না। বরং হয়তো এটা অবৈধ ব্যবসায় অনেককে উৎসাহিত করবে”।
এখানেও আপত্তি রয়েছে সংরক্ষণ বাদীদের। ক্ষুদ্র আকারে হলেও, যদি আইনের মধ্যে হাতির দাঁতের ব্যবসা করতে দেয়া হয়, তা সমস্যাটি ঠেকাতে সামান্যই কাজে আসবে। হয়তো ভোক্তারা মনে করবে, হাতির দাঁত কিনতে কোন সমস্যা নেই। তা হয়তো অপরাধীদেরও সহায়তা করবে।
আরো বড় সমস্যা হলো, চীনে ইন্টারনেটে হাতির দাঁত কেনাবেচা করতে এখনো কোন বাধা নেই।
সেখানে আফ্রিকা থেকে আসা হাতির দাঁতও কিনতে পাওয়া যায়।
বিবিসির তদন্তে দেখা যায়, চীনের এই নতুন নিষেধাজ্ঞা এই ইন্টারনেট অপরাধীদের আওতায় আনতে পারছে না।
তবে সেসব সমালোচনা যাই থাকুক না কেন,চীন নিঃসন্দেহে একটি বড় আর গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে।
প্রাচীন একটি প্রাণী রক্ষার জন্য তারা তাদের প্রাচীন একটি শিল্পকে বিসর্জন দিতে যাচ্ছে।



মন্তব্য চালু নেই