বন্ধুর স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণ

বাবার বন্ধুর ফাঁদে সাতক্ষীরায় অষ্টম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রী গণধর্ষিত হয়েছে। বাবার বন্ধু পরিচয়দানকারী লম্পটসহ চরজনে মিলে ওই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করে।

স্কুলছাত্রীর মায়ের সঙ্গেও বাবার ওই কথিত বন্ধুর অবৈধ সম্পর্ক ছিল বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে।

তারা জানায়, শনিবার মধ্যরাতে শহরের অদুরে এল্লারচর এলাকায় স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণ করা হয়। ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেছে পুলিশ।

স্থানীয় জনতা ওই স্কুলছাত্রীর বাবা কথিত বন্ধুসহ দুই ধর্ষককে হাতেনাতে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছে। পালিয়ে গেছে আরও দুইজন।

এদিকে ডালিয়া বেগম ও লিলি খাতুন নামের দুই মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।

সাতক্ষীরা সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল কাদের জানান, রাত ১২টার দিকে মেয়েটিকে এল্লারচর গ্রামের ডালিয়া বেগমের বাড়ির উঠান থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। রাতেই তার ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।

এসআই আবদুল কাদের জানান, মেয়েটির বাড়ি আশাশুনি উপজেলার সুভদ্রাকাটি গ্রামে। সে পার্শ্ববর্তী কয়রা উপজেলার কালনা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়ে।

স্কুলছাত্রীকে তার বাবার কথিত বন্ধু সোহরাব হোসেন চেতনানাশক অথবা মাদক জাতীয় কিছু খাইয়ে শনিবার রাতে বাড়ি থেকে কৌশলে তুলে নিয়ে আসে। পরে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে সোহরাব হোসেন তার সহযোগী এল্লারচর গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমান বাবু, বালিথা গ্রামের নুর হক এবং একই গ্রামের ওবায়দুল ইসলামকে নিয়ে মেয়েটিকে উপর্যুপরি ধর্ষণ করে।

এক পর্যায়ে তারা ওই স্কুলছাত্রীকে এল্লারচর গ্রামের রফিকুল ইসলামের স্ত্রী ডালিয়া বেগমের বাড়িতে নিয়ে আসে। এ সময় গ্রামবাসী তাদের ধাওয়া দিয়ে সোহরাব ও বাবুকে আটক করে। পালিয়ে যায় নুর হক ও ওবায়দুল ইসলাম।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন মোল্লা জানান, ওই স্কুলছাত্রী এখন সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

তিনি জানান, ধর্ষণের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। মামলায় চারজনকে আসামি করা হয়েছে। এদের মধ্যে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন জানান, সোহরাব হোসেন তার ইউনিয়নের সুভদ্রাকাটি গ্রামের শওকত সানার ছেলে।

তিনি জানান, এলাকায় একজন লম্পট হিসেবে পরিচিত সোহরাব হোসেন ধর্ষিতা মেয়েটির বাবার সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে ওই বাড়িতে (স্কুলছাত্রীর) দীর্ঘদিন ধরে যাতায়াত করছে। এই সুযোগে সোহরাব তার তার কথিত বন্ধুর স্ত্রী আসমা খাতুনের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলে।

চেয়ারম্যান আরও জানান, বিষয়টি নিয়ে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত করা হয়। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে উভয়পক্ষকে সতর্ক করে দেয়া হয়।

তিনি জানান, ‘সোহরাব তার কথিত বন্ধুর স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে তুলে এনে সহযোগীদের নিয়ে ধর্ষণ করবে তা ভাবতেও পারিনি।’

একই ইউনিয়নের ওয়ার্ড সদস্য আসলাম হোসেন জানান, ধর্ষক সোহরাব একজন ঘের ব্যবসায়ী। সাতক্ষীরা শহরের মনজিতপুরে তার চারতলা বাড়ি রয়েছে। এই বাড়িতে প্রায়ই সে বিভিন্ন স্থান থেকে নারীদের ফুসলিয়ে নিয়ে আসে বলে অভিযোগ রয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই