বঙ্গবন্ধুর শোকে ভাত না খেয়ে ৪০ বছর!
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার খবর নিজের রেডিওতে শোনার পর থেকে শোকে ৪০ বছর ধরে ভাত খান না ঈশ্বরগঞ্জের জাটিয়া ইউনিয়নের কুমারুল গ্রামের হারুন সালেহ। হারুন সালেহ জানান, ১৯৭৫ সালে প্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর শোকে তিনি টানা এক মাস না খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
যখন তার সামনে ভাত দেওয়া হয়, তখন কেবল বঙ্গবন্ধুর রক্তাক্ত নিথর দেহের ছবি চোখে ভেসে ওঠে। ওই ছবি চোখে ভাসায় তিনি ভাত মুখে দিতে পারেন না। ৪০ বছর ধরে শুধু ভাতের ফেন ও নানা তরল জাতীয় খাদ্য খেয়ে কঙ্কালসার বঙ্গবন্ধুভক্ত হারুন সালেহ বেঁচে আছেন।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার সম্পন্ন হলেও কেন তিনি ভাত খাচ্ছেন না_ এমন প্রশ্নের জবাবে হারুন সালেহ জানান, খাদ্যনালি শুকিয়ে যাওয়ায় তিনি এখন তরল জাতীয় খাবার ছাড়া কিছু গিলতে পারেন না। ভাত না খাওয়ার জন্য নিজের সংসার ভেঙে যেতে বসলেও তিনি অভিমান ভাঙেননি। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর মতো মানুষ খুন হতে পারেন না। তিনি আমাদের মধ্যে আছেন, বেঁচে থাকবেন চিরকাল। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমার এই প্রতিবাদ চলবে।’ নিজেও ১৫ আগস্টে যেন মরতে পারেন সেই প্রতীক্ষা করছেন হারুন সালেহ।
হারুন সালেহ কুমারুলী গ্রামের মৃত আবদুল মোতালেবের ছেলে। এখন কঙ্কালসার অসুস্থ শরীর নিয়ে প্রতিদিন কুমারুলী বাজারের তার ছোট্ট পান দোকানে বাঁশি ও হারমোনিয়ামে করুণ সুর তুলে ডুকরে কাঁদেন। হারুন সালেহের স্ত্রী হাজেরা খাতুন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর শোকে তার স্বামী না খেয়ে মৃত্যুর প্রহর গুনছেন; তবুও তার খোঁজ নেননি কেউ।’
মন্তব্য চালু নেই