বকেয়া বেতনের দাবিতে সিটিসেল কার্যালয় ঘেরাও
বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে বেসরকারি মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান সিটিসেল কার্যালয় ঘেরাও করেছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মচারীরা। মঙ্গলবার দুপুর থেকেই কর্মচারীরা কার্যালয়ে অবস্থান নেন। তারা প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী মেহবুব চৌধুরীসহ চার কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন।
সিটিসেলের কর্মচারীদের সূত্রে জানা গেছে, কর্মচারীদের বকেয়া বেতন-বোনাস আজ (২২ নভেম্বর) পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু কর্মকর্তারা বকেয়া পরিশোধে আরও সময় চাওয়ায় কার্যালয়ে অবস্থান নিয়েছেন কর্মচারীরা।
সিটিসেল এম্প্লয়িজ ইউনিয়নের সভাপতি আশরাফুল করিম জানান, ‘২২ নভেম্বর ছিল আমাদের বকেয়া বেতন ও ভাতা পরিশোধের দিন। কিন্তু এদিন সিটিসেল কর্তৃপক্ষ কর্মীদের কাছে আরও সময় চাইছেন। এজন্য কর্মীরা সিটিসেলের প্রধান কার্যলায়ের ১২ তলায় প্রধান নির্বাহীকে তার কক্ষে অবরুদ্ধ করেছেন। এটা আসলে কর্মীদের দাবি আদায়ের জন্য।’
সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, কর্মচারীরা এখনও (সন্ধ্যা-৬.৫৫ মিনিট) প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয় ঘেরাও করে রেখেছেন।
তবে বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরমান আলী জানিয়েছেন সিটিসেল কার্যালয় ঘেরাওয়ের কোনও তথ্য তার কাছে নেই।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ জুলাই বিটিআরসি এক বিজ্ঞপ্তিতে সিটিসেলের গ্রাহকদের দুই সপ্তাহের মধ্যে বিকল্প সেবা গ্রহণ করতে অনুরোধ জানায়। সে হিসেবে ১৬ আগস্ট পর্যন্ত সময় পান গ্রাহকরা। যদিও ১৪ আগস্ট ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম জানান, ‘বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সিটিসেলের গ্রাহকরা আরও সময় পাবেন।’
এরপরে সিটিসেল উচ্চ আদালতে গেলে বিষয়টি আদালতের সিদ্ধান্তের ওপর চলে যায়। বিটিআরসি ওই নোটিশ দিলে সিটিসেল আপিল বিভাগে যায়। আপিল বিভাগ গত ২৯ আগস্ট সিটিসেলের বকেয়া টাকা পরিশোধ করার শর্তে অপারেশন চালিয়ে যেতে বলে। এজন্য প্রতিষ্ঠানটি দুই মাস সময় পেয়েছিল। সিটিসেলের বকেয়া ৪৭৭ কোটি ৫১ লাখ টাকা দুই কিস্তিতে পরিশোধের কথা বলা হয়।সিটিসেল তরঙ্গ খুলে দেওয়ার আবেদন নিয়ে আপিল বিভাগে গেলে ৩ নভেম্বর শর্ত সাপেক্ষে অবিলম্বে সিটিসেলের তরঙ্গ খুলে দেওয়ার নির্দেশ আসে সর্বোচ্চ আদালত থেকে। দুই দিন পেরিয়ে গেলেও তরঙ্গ ফিরে না পেয়ে, ফের আদালতে যায় সিটিসেল। এর মধ্যে সিটিসেল বকেয়া টাকার মধ্যে ১৪৪ কোটি টাকা পরিশোধ করে। আপিল বিভাগের আদেশে বলা হয়, আগামী ১৯ নভেম্বরের মধ্যে সিটিসেল বকেয়ার ১০০ কোটি টাকা পরিশোধ না করলে আবারও তরঙ্গ বন্ধ করে দিতে পারবে বিটিআরসি।
এর আগে বকেয়া টাকা শোধ না করায় ২০ অক্টোবর সিটিসেলের তরঙ্গ স্থগিত করা হয়। বিটিআরসির কর্মকর্তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় সিটিসেলের প্রধান কার্যালয়ে ঢুকে তরঙ্গ বন্ধের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করেন।
বিটিআরসি প্রকাশিত (গত ৩১ জুলাই পর্যন্ত) তথ্য অনুসারে সিটিসেলের গ্রাহক সংখ্যা ৬ লাখ ৬৮ হাজার। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সিটিসেলের সক্রিয় গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় দেড় লাখ (বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধিত)।৩১ আগস্ট বিটিআরসি প্রকাশিত এক তথ্যে সিটিসেলের গ্রাহক সংখ্যা ১ লাখ ৪২ হাজার উল্লেখ করা হয়।
মন্তব্য চালু নেই