ফ্রিল্যান্সিং করবেন ভাবছেন? তাহলে জেনে নিন আপনি ফ্রিল্যান্সিং পারবেন কিনা

ফ্রিল্যান্সিং কি? এই প্রশ্নের সংক্ষিপ্ত উত্তর হল কোন প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত না হয়ে সরাসরি মুক্তভাবে কোন ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান থেকে কাজ নিয়ে আপনার সময় অনুযায়ী কাজটি সম্পাদন করে পেমেন্ট নেওয়াকেই বোঝায়। এক্ষেত্রে প্রথমে ধরে নিতে হবে আপনি কোন একটা বিশেষ কাজে দক্ষ এবং সেই দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করেছেন।

ফ্রিল্যান্সিং আলিবাবা চল্লিশচোরের সেই গুহার মত না যে ছিচিং ফাক বললে গুহার দরজা খুলে যাবে আর আপনি বস্তা ভরে সব স্বর্ণ মুদ্রা নিয়ে যাবেন।

একটু ব্যাখ্যা করা যাক। ধরে নিন আপনি কোন না কোন ভাবে গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ খুব ভাল পারেন । সখের বসে গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখেছিলন বা আপনি কোন প্রতিষ্ঠানের গ্রাফিক্স ডিজাইনার। এখন আপনার সুযোগ আছে ফ্রিল্যান্সিং করার। আপনার দৈনন্দিন কাজের ফাকে অনেক সময় থাকে যে সময়ে আপনি চাইলে বাড়তি কিছু আয়ের জন্য ফ্রিল্যান্সিং করতে পারেন। বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে গ্রাফিক্স ডিজাইন সম্পর্কিত কাজ পাওয়া যায়। আপনি কোন একটি মার্কেটপ্লেস থেকে একটি কাজ নিয়ে ঐ কাজ টি যথাযথ ভাবে সম্পাদন করে দিলে পেমেন্ট পাবেন। এখানে আপনি চাইলে কাজ করতে পারছেন আর না চাইলে নয়। এজন্য এই পুরো বিষয়টিকে ফ্রিল্যান্সিং বলে অর্থাৎ মুক্তভাবে কাজ করা।

অনলাইন থেকে আয় করা যায় এমন কোন কাজে যদি আপনার দক্ষতা না থাকে তাহলে কি করবেন? এই প্রসংঙ্গে পরে আলোচনা করব আগে মূল আলোচনায় আসি সেটা হল আপনি ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন কিনা।

যেহেতু অধিকাংশ কাজ দেশের বাইরে থেকে নিতে হয় তাই আপনার ইংরেজীতে মোটামুটি দক্ষতা থাকতে হবে। আপনি যদি লিখে নিজের মনে ভাব প্রকাশ করতে পারেন এবং ইংরেজি অর্থ বুঝে পড়তে পারেন তাহলে কাজ করতে পারবেন

ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করতে হলে অনলাইনে করা যায় এমন কোন একটা কাজে আপনার দক্ষতা থাকতে হবে যে কাজটি করে আপনি অলনাইন থেকে আয় করতে পারবেন। ধরে নেয়া যাক, আপনি একটা কাজে পারদর্শী এবং ফ্রিল্যান্সিং করতে চাচ্ছেন। তাহলে আপনাকে যা যা করতে হবে-

ইন্টারনেট সংযুক্ত আপনার একটি কম্পিউটার থাকতে হবে
যেহেতু অধিকাংশ কাজ দেশের বাইরে থেকে নিতে হয় তাই আপনার ইংরেজীতে মোটামুটি দক্ষতা থাকতে হবে। আপনি যদি লিখে নিজের মনে ভাব প্রকাশ করতে পারেন এবং ইংরেজি অর্থ বুঝে পড়তে পারেন তাহলে কাজ করতে পারবেন

যেসব মার্কেটপ্লেসে কাজ পাওয়া যাই সেসব মার্কেটপ্লেসে আপনার যোগত্যা দক্ষতা উল্লেখ করে একটি গ্রহণযোগ্য একাউন্ট করতে হবে

প্রথম অবস্থায় কাজ পাবার জন্য যথেষ্ট সময় দিতে হবে ধৈর্য্যশীল হতে হবে

এগুলো হল ফ্রিল্যান্সিং করার প্রথম পদক্ষেপ। এবার আলোচনা করা যাক আপনি কোনো কাজে দক্ষ না কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং করে অনলাইন থেকে আয় করতে চাচ্ছেন তাহলে আপনাকে কিছু বিষয়ে জানতে হবে।

চেষ্টা করে দেখি হলে হল না হলে না হল এই বিষয়টি মনের মধ্যে থাকলে আপনি কোনদিন কাজ শিখতে পারবেন না

হঠাৎ কোন বিজ্ঞাপন দেখে উৎসাহী হয়ে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার আগে আপনাকে যে বিষয়গুলো অবশ্যই ভাবতে হবে-

ফ্রিল্যান্সিং আলিবাবা চল্লিশচোরের সেই গুহার মত না যে ছিচিং ফাক বললে গুহার দরজা খুলে যাবে আর আপনি বস্তা ভরে সব স্বর্ণ মুদ্রা নিয়ে যাবেন। অন্যান্য যে কোন কাজের মতই পরিশ্রম করতে হয়। প্রথমে একটি কাজ শিখতে হবে। কাজ শেখার জন্য আপনাকে যথেষ্ট সময় দিতে হবে এবং প্রাকটিস করতে হবে। কাজ শেখা শুরু করার আগে যে বিষয়গুলো মনের মধ্যে গেঁথে নিতে হবে-

চেষ্টা করে দেখি হলে হল না হলে না হল এই বিষয়টি মনের মধ্যে থাকলে আপনি কোনদিন কাজ শিখতে পারবেন না
নিজেকে বিশ্বাস করান যে আপনার দ্রুত ইনকামের চেয়ে কাজটি ভাল ভাবে শেখাটাই জরুরী। ভাল ভাবে কাজ শিখতে পারলে পরে ইনকাম করা যাবে

কাজ শিখতে হলে আপনার প্রাকটিস করার মত যথেষ্ট সময় থাকতে হবে। অতিরিক্ত পড়ার চাপ বা কর্মক্ষেত্রে বেশি ব্যস্ততা থাকলে কাজ শেখার ক্ষেত্রে দীর্ঘ পরিকল্পনা করুন (যদি খুব ইচ্ছা থাকে শেখার)

অধিকাংশ প্রফেশনালরই অনলাইন থেকে বা সিনিয়র কারোর কাছ থেকে শেখা শুরু করে থাকে। আপনি যেভাবেই শেখা শুরু করেন না কেন আপনার শেখার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে।

কোন ইনস্টিটিউট থেকে শিখলে নিয়মিত ক্লাসে অংশগ্রহণ করুন, হোম টাস্ক গুলো নিয়মিত করুন। ক্লাসের লেকচারের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে সামঞ্জস্বপূর্ণ বিষয়গুলো ভিন্ন ভিন্ন প্রয়োগ করে দেখুন (প্রাকটিস করার ক্ষেত্রে)

কাজের অনেক ক্ষেত্র আছে। কিছু কিছু কাজ দ্রুত শেখা যায় আবার কিছু কাজ আছে সেগুলো শিখতে সময় লাগে তাই ধৈর্য হারা না হয়ে প্রতিদিন প্রাকটিস চালিয়ে যেতে হবে

অনলাইন থেকে আয় করবেন ভেবে কম্পিউটর কিনে শুরু করে দিবেন এমন নয়, প্রথমে কম্পিউটার ভাল ভাবে পরিচালনা করা জানতে হবে। ইন্টারনেট ব্যবহার করে বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য খুজে বের করে পড়ার অভ্যাস করতে হবে

কখনো হতাশ হওয়া যাবে না। হয়তো কারোর একটু সময় বেশি লাগে কারোর কম কিন্তু কেউ যদি লেগে পড়ে থাকে তাহলে সে সফল হবেই

আপনি যদি অ্যাডভোকেট হোন তবুও অাপনার ঐ প্রফেশনাল দক্ষতা কাজে লাগিয়ে কনসালন্টেন্সি করে অনলাইন থেকে আয় করতে পারবেন।

আমাদের দেশের অতীত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিন। এক সময় টাকা আয় করার কিছু কিছু পন্থা খুব জনপ্রিয় ছিল। খুব দ্রুত কোটি কোটি টাকায় আয় করা যায় এমন অনেক লোভনীয় অফার ছিল। মানুষ ঝাকে ঝাকে বিনা পরিশ্রমে বিনা দক্ষতায় লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করার জন্য ঝাপিয়ে পড়েছিল। সেই সব আয় করা পন্থাগুলো আজ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। তাই সর্টকাটে টাকা আয় করার কোন উপায় নেই। আপনাকে সময় দিতে হবে। কাজ শিখতে হবে। তারপরই আপনার আয় আসবে। আর এসব বিষয়গুলো যদি মনে মধ্যে ধারণ করতে পারেন তাহলে আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং (অনলাইন প্রফেশনাল) জগতে স্বাগতম।

আপনিই পারবেন ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করতে। আর যদি মনে হয় এই বিষয়গুলো কঠিন। এসব আমার দ্বারা হবে না। এর চেয়ে পড়াশুনো শেষ করে একটা চাকরী খোজা ভাল তাহলে সময় নষ্ট করে লাভ নেই। মনে রাখবেন আপনি যদি আপনার একাডেমিক শিক্ষা কার্যক্রমে ভাল করতে পারেন তাহলে ভবিষতেও আপনার সম্ভাবনা আছে। এমন কি আপনি যদি অ্যাডভোকেট হোন তবুও অাপনার ঐ প্রফেশনাল দক্ষতা কাজে লাগিয়ে কনসালন্টেন্সি করে অনলাইন থেকে আয় করতে পারবেন।

সূত্র: Future IT Institute



মন্তব্য চালু নেই