ফের বেতন-ভাতা বাড়লো রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বেতন-ভাতা ও সুবিধাদি বাড়িয়ে পৃথক দুইটি বিল পাস করেছে জাতীয় সংসদ। বুধবার (৪ মে) সংসদের অধিবেশনে তাদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিল দুটি পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করেন সংসদ কার্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী। পরে বিল দুইটি কণ্ঠভোটে পাস হয়।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে পাস হওয়া বিল দুইটি হচ্ছে- ‘রাষ্ট্রপতির (বেতন-ভাতা ও সুবিধাদি) (সংশোধন) বিল-২০১৬’ এবং ‘প্রধানমন্ত্রীর (বেতন-ভাতা ও সুবিধাদি) (সংশোধন) বিল-২০১৬’।

বৃহস্পতিবার অধিবেশনের শেষ দিনে স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার ও মন্ত্রী-এমপিদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত ‘স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের (বেতন-ভাতা ও সুবিধাদি) (সংশোধন) বিল-২০১৬’, ‘মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রীদের (বেতন-ভাতা ও সুবিধাদি) (সংশোধন) বিল-২০১৬’ এবং ‘সংসদ সদস্যদের (বেতন-ভাতা ও সুবিধাদি) (সংশোধন) বিল-২০১৬’ পাস হওয়ার কথা রয়েছে।

এর আগে গত ২ মে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী এবং এমপিদের বেতন-ভাতা ও আনুষঙ্গিক সুবিধাদি বৃদ্ধি করার প্রস্তাব সম্বলিত ৫টি পৃথক বিলের ওপর আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির রিপোর্ট উপস্থাপন করা হয়।

কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত জাতীয় সংসদে রিপোর্ট ৫টি পৃথকভাবে উপস্থাপন করেন। রিপোর্টে বিল ৫টি সংশোধিত আকারে পাসের সুপারিশ করা হয়েছিল। কমিটির সুপারিশসহ বিল দুইটি পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করলে বিরোধী দলের সদস্যরা আপত্তি জানান। তারা বিল দু’টি পাসের আগে জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে নাকচ হয়।

রাষ্ট্রপতির (বেতন-ভাতা ও সুবিধাদি) (সংশোধন) বিলে রাষ্ট্রপতির বেতন ৬১ হাজার ২০০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা করা হয়েছে। এছাড়া সুবিধাদি ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার পরিবর্তে ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা করা হয়েছে। আর রাষ্ট্রপতি বিমানে ভ্রমণ করলে তার বিমার জন্য আগের ১৫ লাখ টাকার পরিবর্তে ২৭ লাখ টাকা হারে পাবেন। তবে রাষ্ট্রপতির স্বেচ্ছাধীন তহবিলে আগের মতোই ২ কোটি টাকা থাকবে।

প্রধানমন্ত্রীর (বেতন-ভাতা ও সুবিধাদি) (সংশোধন) বিলে প্রধানমন্ত্রীর বেতন ৫৮ হাজার ৬০০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন সুবিধাদি ও ভাতা বৃদ্ধি করে যথাক্রমে ৫০ হাজার টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ১ লাখ টাকা, ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি বাড়িতে থাকলে প্রতিমাসে ভাড়া বাবদ পাবেন ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা। বিমানভ্রমণের বিমার সীমা ১৪ লাখ টাকার পরিবর্তে ২৫ লাখ টাকা হারে পাবেন। এছাড়া ঢাকার বাইরে গেলে প্রধানমন্ত্রীর দৈনিক ভাতা এক হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ হাজার টাকা ও স্বেচ্ছাধীন তহবিলের আকার ১ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে দেড় কোটি টাকা করা হয়েছে।

বিলগুলোর উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হওয়ায় এবং দেশের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক পরিপ্রেক্ষিত বিবেচনায় মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মানননীয় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের বেতন ও অন্যান্য সুবিধা সামঞ্জস্য রক্ষা করে পুনঃনির্ধারণের লক্ষ্যে বিদ্যমান আইনের অধিকতর সংশোধনের জন্য সংশ্লিষ্ট বিল উপস্থাপন করা হলো।

ওই বিলের প্রথম অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, নতুন হারের এই বেতন কার্যকর হয় গত বছরের পহেলা জুলাই থেকে। তবে ভাতা কার্যকর হবে চলতি বছরের পহেলা জুলাই থেকে কার্যকর করা হবে।

এর আগে ২০০৯ সালে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের বেতন-ভাতাদি বাড়ানো হয়েছিল।



মন্তব্য চালু নেই