ফুলবাড়ী বিদ্যুৎ সবরাহ কেন্দ্রে অবাসিক প্রকৌশলীর দায়িত্বহীনতায় ২ হাজার বিঘা জমির বোরো চাষ অনিশ্চিত

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী অবাসিক বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রে প্রকৌশলী দায়িত্বহীনতায় একটি ট্রান্সফরমার অভাবে অচল হয়ে পড়েছে ১০টি সেচ পাম্প। এতে ২ হাজার বির্ঘা জমির বোরো চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। একই ঘটনায় দক্ষিণ সাহাবাজপুর ও তেঁতুলডাঙ্গা দু’টি গ্রামও অন্ধকার হয়ে পড়েছে। প্রতিকার চেয়ে গতকাল সোমবার সকাল ১১টায় উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নিবার্হী অফিসারের নিকট স্মারক লিপি প্রদান করেছেন ভুক্তভোগি কৃষকরা।

ভুক্তভোগিদের অভিযোগ ১০দিনের সময়ে নিয়ে দক্ষিণ সাহাবাজপুর হিন্দু পাড়া গ্রামের স্থাপিত ট্রান্সফরমারটি অপসরণ করার ১৩মাস কেটে গেলেও এখন পর্যাপ্ত তা প্রতিস্থাপন করা হয়নি। অস্থায়ী ভাবে যে ট্রান্সফরমারটি লাগালো হয়েছে তা দিয়ে বাসবাড়ী বাতি জ্বাললেও সেচ পাম্প চলছে না। এতে করে জমিতে সেচ দিয়ে না পেরে মৌসুম শেষ হয়ে আসলেও এখন পর্যান্ত বোরো রপন করা সম্ভব হয় নি। এতে করে ৪ গ্রামের ১০টি সেচ পাম্পের আওয়তা ২ হাজার বির্ঘা জমির বোরো চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

পাম্প মালিকেরা জানান, দক্ষিণ সাহাবাজপুর হিন্দু পাড়া ওকিল চন্দ্র বাড়ী নিকট থাকা একটি ট্রান্সফরমার আওতায় দক্ষিণ সাহাবাজপুর গ্রামের উৎপল চন্দ্রের একটি গভীর সেচ পাম্প, মনোরঞ্জন সরকারের একটি অগভীর সেচ পাম্প ও একটি মুকুল চন্দ্র সরকারের হাসকিং মিল, তেঁতুল ডাঙ্গা গ্রামের মানিক মন্ডলের গভীর সেচ পাম্প, ফজলার রহমানের একটি অগভীর সেচ পাম্প ও রিয়াজুল ইসলামের একটি গভীর সেচ পাম্প, কুর্শাখালি গ্রামের শান্তি মোড় এলাকায় আবুল হান্নান কনক এর গভীর সেচ পাম্প ও আজিজার রহমানের একটি গভীর সেচ পাম্প, বুকছি আদিবাসী গ্রামের প্রদীব মুরমুর গভীর সেচ পাম্প ও ফার্নেস মুরমুর গভীর সেচ পাম্পসহ মোট ১০টি সেচ পাম্প চলে। এ সকল সেচ পাম্পের আওতায় ২ হাজার বিঘা জমির চাষাবাদ করা হয়। একই ট্রান্সফরমার আওতায় দক্ষিণ সাহাবাজপুর হিন্দু পাড়া, তেঁতুলডাঙ্গা গ্রাম ও বুকছি আদিবাসী পাড়া অবাসিক বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে।

তারা জানান গত ২০১৪ইং সালের জানুয়ারী মাসে ট্রান্সফরমারটি তিন ফেইজ এর একটি পুড়ে গেলে বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্র ওই ট্রান্সফরমারটি মেরামতের জন্য নিয়ে যায়। বিকল্প হিসেবে অস্থায়ীভাবে অকিল চন্দ্র সরকারের খলায় একটি ছোট ট্রান্সফরমার বসিয়ে দেয়। সে সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্র প্রকৌশলীর পক্ষ থেকে ১০দিনে মধ্যে ঐ ট্রান্সফরমারটি প্রতিস্থাপনের কথা বললেও এখন পর্যন্ত তা প্রতিস্থাপন করা হয়নি। বর্তমানে সেচ মৌসুম শুরু হওয়ায় এই ট্রান্সফরমারটি দিয়ে সেচ পাম্পগুলো চলছে না। এই বিষয়ে তারা বারবার অবাসিক প্রকৌশলী নিকট ধর্ণা দিয়েও কোন প্রতিকার পায় নি। এতে করে সেচ পাম্প গুলো এখন অচল হয়ে পড়েছে।

গতকাল সোমবার সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় সেচের অভাবে মাঠের পর মাঠ পড়ে আছে। কৃষকরা জানান সেচের অভাবে তারা বোরো রোপন করতে পারছে না। এদিকে বীজ চারার রোপনের বয়স পেরিয়ে যাচ্ছে। একই সাথে বোরো রোপনের মৌসুমও শেষ হয়ে যাচ্ছে।
অকিল চন্দ্র সরকার অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘ এক বছর থেকে এই ট্রান্সফরমারটি তার খড়ের গাদার নিকট স্থাপন করায় তার বাড়ীসহ ঝুকিপূর্ণ হয়ে ওঠেছে। রহরহ ঐ ট্রান্সফরমারটিতে আগুন ধরতে দেখা যায়। এই কারণে তার খলা থেকে ট্রান্সফরমারটিকে সরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ করেও কোন ফল পায় নি। উপরোন্ত তাকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে।

অপরদিকে ঐ এলাকায় ইউপি সদস্য সৈয়দ লিয়াকত আলী শিপন সহ কয়েকজন সেচ পাম্প মালিকেরা অভিযোগ করে বলেন ট্রান্সফরমারটি মেরামত সহ প্রতিস্থাপন করতে এখন ফুলবাড়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ অবাসিক প্রকৌশলী মোটা অঙ্কের উৎকোচ দাবি করছেন। ইতিপূর্বের ট্রান্সফরমারটি মেরামতের জন্য তাদের নিকট থেকে ২০ হাজার টাকা উৎকোচ গ্রহণ করেছে। এখন আবারও ২০ হাজার টাকা দাবি করছে।

এ বিষয়ে ফুলবাড়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রে অবাসিক প্রকৌশলী মাহাবুব আলম সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন বর্তমানে আমার অফিসে কোন সরকারী বরাদ্দ নাই তাই লেবার খরচের টাকা চাওয়া হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই