ফারিজকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড়
গুলশান ৭৪ নম্বর সড়কে সাবেক এমপি এইচবিএম ইকবালের ভাতিজা ফারিজের গাড়িতে চাপা পড়ার ছবি প্রথম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ পাওয়ার পর থেকে চলছে সমালোচনার ঝড়। ফেসবুক টুইটারে চলছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবহেলা ও ফারিজের নানা ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ নিয়ে আলাপ। প্রশ্ন একটাই প্রভাবশালীর আত্মীয় হওয়ায় এতোবড় দুর্ঘটনা একেবারেই চেপে গেছে প্রশাসন। কেউ কেউ সমালোচনা করেছেন গণমাধ্যমেরও।
সবচেয়ে বেশি কথা উঠেছে পুলিশ ঘটনাস্থলে তাকে পাওয়ার পরও কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিল না। সেখান থেকে মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে গিয়ে তার বিরুদ্ধে কোনও দুর্ঘটনা মামলা দায়ের তো দূরে থাক, কীভাবে আর্থিক সহায়তা দিয়ে ভুক্তভোগীদের মুখ বন্ধ রাখা যায় সে চেষ্টা অব্যাহত রাখায় সমালোচনায় মুখর সাধারণ মানুষ। তারা বলছেন, শুধু প্রভাবশালী হওয়ার কারণে যে সুযোগ-সুবিধাগুলো ফারিজকে দেওয়া হলো, তা থেকে বুঝা যায় আইন সবার জন্য এক না।
ফেসবুকে অনাদৃত অর্ক লিখেছেন, ‘‘নিজের গাঁটের পয়সা খরচ করে কয়েকজন তরুণ-তরুণী খাইয়ে, পড়িয়ে কোমলমতি শিশুদের মুখে হাসি ফুটিয়েছিল। এই ‘অপরাধে’ তাদের ‘মানবপাচারকারী’ বানিয়ে ছেড়েছে আমাদের ‘মহান’ পুলিশ! মাসখানেক হলো তারা জেলে পঁচে মরছে। জামিনও মেলে না তাদের! কারণ তাদের মাথার নিচে কোনও ‘প্রভাবশালী’র ছাতা নেই।
অন্যদিকে, গুলশানে সাবেক সাংসদ এইচবিএম ইকবালের ভাতিজা ফারিজ আহমেদ (১৬) মদ্যপ অবস্থায় বন্ধুর সঙ্গে কার রেসিং ‘খেলতে’ গাড়িটা উঠিয়ে দিয়েছে এক রিকশার ওপর। এ ঘটনায় রিকশারোহী মায়ের কোলেই মারা গেছে তার আদরের শিশুটি! ফারিজকে (ছবিতে দেখুন) ‘সসম্মানে’ বাসায় পৌঁছে দিয়েছে গুলশান থানার পুলিশ! পুলিশ হয়তো মনে করেছে, ধনীর দুলালরা রাস্তায় ভিডিও গেমস খেলতে নামলে তো এমন টুকটাক ভুল হতেই পারে।”
একই ঘটনার তুলনামূলক আলোচনা সামনে এনেছেন গণমাধ্যমকর্মী আশীফ এন্তাজ রবি। তিনি লিখেছেন, ‘…গুলশানের এক কিশোরের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, সে মদ্যপ অবস্থায় তার বাবার গাড়ি নিয়ে বের হয়েছিল। বন্ধুর সঙ্গে কার রেসিং করতে গিয়ে গাড়িটা উঠিয়ে দিয়েছে এক রিকশার ওপর। শোনা যাচ্ছে, সেই রিকশার আরোহী ছিলেন একজন মা। তার কোলের শিশুটি এই ঘটনায় মারা গেছে। যারা নিরপরাধ তরুণদের মানবপাচার সাজিয়ে জেলে ভরছে, তারা কেন গুলশানের এই ঘটনায় কাউকে এখনও গ্রেফতার করেনি? গ্যাপটা আসলে কোথায়?…’
সামিরা সাদিক ঘটনা প্রকাশিত হওয়ার পরদিন থেকে বিষয়টি ফলোআপ করছেন তার এফবি পোস্টে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে যেটুকু সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে সেটিই উল্লেখ করে বিষয়গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। তিনি বলছেন, পুলিশ প্রথমে ১২ বছর বয়স বলে তাকে নিরাপদ রাখতে চেয়েছিল। কিন্তু সে আসলে ১৪ বা ১৬ বছরের হবে।
হাসান মুন্না লিখেছেন, ‘রাস্তায় যেখানে সাধারণ চালকদের হয়রানি করার খবর আসে। সেখানে মদ খেয়ে কোটিপতি, প্রভাবশালী পরিবারের সন্তান গাড়ি চালিয়ে মানুষ মারবে সেটার কোনও বিচার নেই? লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানো কি এখানে বৈধ করে দেওয়া হয়েছে?
আইন কি শুধু সাধারণদের জন্য? প্রভাবশালীদের জন্য কি আইন আলাদা? টাকা দিয়ে, ক্ষমতা দিয়ে সব কিনে ফেলা যায়?’
আর আহমেদ অর্ক এই ঘটনার বিভিন্ন সংবাদ শেয়ার করে লিখেছেন, ‘একদম ক্লাসিক ক্রিমিনাল বাঁচানি কেস হিসেবে এইটারে ফলো করা যাইতে পারে।’বাংলা ট্রিবিউন
মন্তব্য চালু নেই