ফাঁস হওয়া প্রশ্নের সঙ্গে মূল প্রশ্নের ৪০ ভাগ মিল

চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার কয়েকটি বিষয়ের ফাঁস হওয়া প্রশ্নের সঙ্গে মূল প্রশ্নের ৩০-৪০ ভাগ মিল আছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

মঙ্গলবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় ডিবি। ডিবি জানায়, ফাঁস হওয়ার প্রশ্নের সঙ্গে পরীক্ষায় আসা প্রশ্নের ৩০ থেকে ৪০ ভাগ মিল আছে।

সংবাদ সম্মেলনে ডিবির যুগ্ম কমিশনার আব্দুল বাতেন জানান, ফেসবুকে পোস্ট করা প্রশ্নের স্ন্যাপশটের সঙ্গে আমরা পরীক্ষায় আসা প্রশ্নগুলো মিলিয়ে দেখছি। এগুলোতে বিচ্ছিন্নভাবে মিল রয়েছে। প্রায় ৩০-৪০ ভাগ প্রশ্নের মিল পেয়েছি। চক্রটি ফেসবুকে ক্লায়েন্ট গ্রুপ খুলে। নিজেদের বিশ্বাসযোগ্য করতে তারা বিভিন্ন পোস্ট দেয়। এরপর প্রশ্ন পাঠিয়ে তাদের কাছ থেকে বিকাশে টাকা আদায় করে।

এসএসসি পরীক্ষার ভুয়া প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সোমবার রাতে ছয়জনকে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তাদেরকেও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত করা হয়। আটককৃতরা হচ্ছেন, মো. রাজু আহম্মেদ, মো. ফয়সালুর রহমান ওরফে আকাশ, মো. জোহায়ের আয়াজ, মহিউদ্দিন ইমন, স্বাধীন আল মাহমুদ ও রাশেদুল ইসলাম ওরফে রনি।

আব্দুল বাতেন বলেন, প্রশ্ন নিয়ে অনেকে এক থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত দিত। অনেকে আবার ২৫ হাজার টাকা দিয়েও প্রশ্ন নিয়েছে।
আটককৃতরা ফেসবুকে SSC, HSC Question Bazar And All Board Examinee, SSC Question 2017 Dhaka Board, SSC Question 2017 barisal Board নামে বিভিন্ন গ্রুপ খুলে। গ্রুপগুলো থেকে ১০০% প্রশ্ন কমন দিবে মর্মে নিয়মিত স্ট্যাটাস দেয়। এছাড়াও আসামিরা একেক পরীক্ষার জন্য একেক ম্যাসেঞ্জার গ্রুপ খুলে ভুয়া প্রশ্ন শেয়ার করে। আসামিদের এ ধরনের প্রতারণার কারণে কোমলমতি পরীক্ষার্থীদের ভবিষ্যত হুমকির মুখে পড়ছে এবং সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে।

প্রতি বছরই বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস ও ফাঁসের গুজব শোনা যায়। কেন তাদের মূল হোতাদের ধরতে পারে না গোয়েন্দা পুলিশ। এবিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিবির যুগ্ম কমিশনার বলেন, গতবছর আমরা এ ধরনের ঘটনায় জড়িত বিজি প্রেসের একজনকে গ্রেফতার করেছিলাম। কয়েকটি লেয়ার পার হয়ে এ ধরনের আসামীদের ধরতে হয়। এখন যাদের আটক করেছি তাদের ধরতে আমরা ৬ লেয়ার পার করেছি। আরো ২ টা লেয়ার পার হলে মূল হোতাদের ধরতে পারবো।

ভুয়া প্রশ্ন ফাঁস কিংবা পুরো প্রক্রিয়ায় সঙ্গে বিজি প্রেসের আসলেই কেউ জড়িত ছিল কি না এ বিষয়ে খতিয়ে দেখা হবে বলে জানান তিনি।

এসময় উপস্থিত ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, প্রতিটি পরীক্ষার আগে আইনশৃঙ্খলারক্ষা বাহিনীসহ কয়েকটি পক্ষ নিয়ে ৫টি সভা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসবের মূল হোতাদের ধরার চেষ্টা করছে।

আটকের সময় আসামিদের কাছ থেকে ল্যাপটপ, মোবাইল, কম্পিউটারসহ বিভিন্ন আইটি ডিভাইস জব্দ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কলাবাগান থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত রোববার এসএসসিতে সারাদেশে গণিত বিষয়ের পরীক্ষা ছিল। তবে অনেকেই দাবি করছেন, আগের রাতেই শিক্ষার্থীরা এই প্রশ্নপত্র পেয়েছে। এছাড়া বাংলা দ্বিতীয়পত্র এবং ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র প্রশ্নফাঁসের অভিযোগও উঠেছে। এরমধ্যে গণিতের প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ সবচেয়ে বেশি আলোচনায় ওঠে। সোমবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।



মন্তব্য চালু নেই