ফাঁস রোধে প্রশ্নপত্র হবে ৩২ সেট : শিক্ষামন্ত্রী
দেশের শিক্ষাবোর্ডগুলোর অধীন পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্নপত্রের ৩২টি সেট করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। বুধবার সচিবালয়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতে করণীয় নির্ধারণে এক বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। প্রশ্নফাঁস রোধে আগামী সকল বোর্ড পরীক্ষায় এ কৌশল অবলম্বন করা হবে বলে তিনি জানান।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘বোর্ড পরীক্ষাগুলোতে প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতে আগামী বছরের পরীক্ষা থেকে ৩২টি সেট করা হবে। এতে যারা প্রশ্ন ফাঁস করবে তাদের ৩২টি সেটই করতে হবে। এবং শিক্ষার্থীদের সঠিক প্রশ্ন নির্ধারণ করতে ৩২টি সেট পড়তে হবে। তাহলে তাদের পাঠ্যবইয়ের সবটাই পড়তে হবে। মূলত এটি করার উদ্দেশ্যই হচ্ছে যাতে অসৎ লোকরা দেশের উদীয়মান শিক্ষার্থীদের বিপথে নিতে না পারে।’
বিজি প্রেসের কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে, তাই পরবর্তী পরীক্ষার প্রশ্ন অন্যকোনো প্রেসে ছাপা হবে কিনা- এ প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘১৫২ ধরনের প্রশ্নপত্র ছাপাতে হয় এবং তা সঠিক সময়ে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পাঠাতে হয়। আমরা বিজি প্রেসের বিকল্প খুঁজেছি। সেনাবাহিনীর প্রেসের প্রস্তাব পেয়েছি। তাদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করেছি। তারা এটি সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন। তাই বাংলাদেশে বিজি প্রেসের বিকল্প না থাকায় সেখানেই ছাপা হবে। তবে তাদের ওপর কড়া নজরদারি রাখা হবে।’
প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে সরকারের কোনো পদক্ষেপ আছে কিনা এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘অনেকে বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের শাস্তি দিতে দেশে কোনো আইন নেই। এটি একটি মিথ্যা কথা। ১৯৮০ সালে একটি আইন করা হয়েছে। তাতে এ চক্রের লোকদের ১০ বছরের শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। ১৯৯২ সালে সংস্কার করে তার চার বছর করা হয়। তবে আইনটির কোনো প্রয়োগ ছিল না। এখন আমরা এটি আরও একবার সংস্কার করার পদক্ষেপ নিয়েছি। দেশের মানুষকে জানানোর জন্য আজকেই পুরাতন আইনটি শিক্ষামন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। নতুন আইনে আমরা তাৎক্ষণিক শাস্তির বিধান রাখবো।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি আপনাদের মাধ্যমে বলতে চাই, প্রধানমন্ত্রী একটি কথা বলেছেন, ‘পরশ্রীকাতরতা’। আমি মনে করি তিনি এটি যথার্থ বলেছেন। আমরাও মতামত নিয়ে দেখেছি। শিক্ষামন্ত্রণালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ণ করার জন্য নিন্দুকেরা এ কাজ করছে। প্রশ্ন ফাঁস না হলেও ফেসবুকসহ অন্যান্য মাধ্যমে ভুয়া প্রচারণা চালাচ্ছে। এতে আমাদের সুনাম ক্ষুণ্ণ করার একটি অপচেষ্টা।’
যারা এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়াবে তাদের শাস্তি কি হবে- এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘যদি কেউ বিভ্রান্তি ছড়ায়, কেউ মিথ্যা বলে, ফেসবুকে কোনো ভুয়া বানোয়াট প্রশ্ন বা সাজেশন প্রকাশ করে, তাকে নতুন আইনে শাস্তি পেতে হবে। গত বছর যাদের ওপর আমাদের সন্দেহ ছিল এখন থেকে তাদের ওপর কয়েক স্তরের নজরদারি থাকবে। যারা এ কাজ করেন তাদের অনুরোধ করবো, এ কাজ করবেন না।’
শিক্ষামন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ সাদিক, অতিরিক্ত সচিব সোহরাব হোসাইন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ফাহমিদা খাতুন, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তাসলিমা বেগম এসময় উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য চালু নেই