ফাঁসির আগে যেভাবে প্রস্তুতি নেন একজন জল্লাদ
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কোনো অপরাধীর ফাঁসি কার্যকর করতে জল্লাদের প্রয়োজন হয়। প্রাচীন যুগে রাজা-মহারাজাদের নির্দিষ্ট জল্লাদ থাকত। তারাই রাজার আদেশ বাস্তবায়ন করত। কিন্তু একবিংশ শতাব্দীতে আমাদের দেশের জেল কোড অনুযায়ী ‘জল্লাদ’ নামে কোনো পদ নেই। লম্বা মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত কয়েদিদের মধ্য থেকে সাহসী এবং বলিষ্ঠ ব্যক্তিটিকে নির্বাচিত করা হয়। বিশেষ করে যাবজ্জীবন কিংবা সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিতদের এই প্রস্তাব দেয়ে জেল কর্তৃপক্ষ। বিনিময়ে তাদের সাজা রেয়াত করা হয়।
একজন জল্লাদের কাজ হলো ফাঁসির মঞ্চের লিভার ধরে রাখা এবং জেল সুপারের রুমালের দিকে দৃষ্টি রাখা। রুমাল ওড়ামাত্র লিভারের হাতল ধরে টান দিতে হয় তাকে। এতে দণ্ডিত ব্যক্তি নীচে ঝুলে পড়ে এবং গলায় ফাঁস লাগে। তবে এর আগে জল্লাদকে বিশেষ প্রস্তুতি নিতে হয়। ঠিক সময়ে সেই লিভার ধরে টান দেওয়াটাও একটা প্র্যাকটিসের বিষয়। এছাড়া তাকে মানসিকভাবেও শক্ত হওয়ার অনুশীলন করতে হয়।
গত কয়েকবছরে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি কার্যকর করায় বেশ কয়েকজন জল্লাদ আলোচিত হয়েছেন। তাদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত হলেন জল্লাদ শাহজাহান। তিনি ঢাকা বিভাগে সর্বোচ্চ সংখ্যক ফাঁসি কার্যকর করেছেন। এছাড়া জল্লাদ রাজু, দীন ইসলাম, শাহীন, জনি, করিমও জল্লাদের দায়িত্ব পালন করে থাকেন।
এদের মধ্যে রাজু প্রধান জল্লাদ হিসেবে বদর বাহিনীর প্রধান মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি কার্যকর করেছেন। এর আগে আরেক যুদ্ধাপরাধী সাকা চৌধুরীর ফাঁসি কার্যকর করার সময় তিনি সহকারী জল্লাদ ছিলেন। সম্প্রতি জঙ্গিনেতা মুফতি হান্নানের ফাঁসি কার্যকর নিয়ে আবারও সাধারণ মানুষের আলোচনায় উঠে এসেছেন ‘জল্লাদরা’।
মন্তব্য চালু নেই