ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করায়

ফরিদপুর শহর রক্ষা বাধসহ দুটি ইউনিয়ন বিলীন হবার পথে

ফরিদপুর সদর উপজেলার শহর রক্ষা বাধসহ ডিগ্রীরচর ও নর্থচ্যানেল এলাকা দুটি আজ নদী ভাঙ্গনের হুমকির মুখে পতিত হয়েছে। শহরতলীর সিএন্ডবি ঘাট সংলগ্ন বাধে প্রায় ৩০ মিটার বোল্ডার ধসে গেছে। ১০ কিলোমিটার শহর রক্ষাবাধের বেশ কয়েকটি স্থানে দেবে গেছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে নদী পাড়ের মানুষ হাজারো মানুষ। এদিকে বর্ষা মৌসুম শুরু হতে চলছে এই ভাবনায় তাদের ঘুম আরো উড়ে গেছে। ফরিদপুর শহর রক্ষা বাধে ধস নেমেছে যে কোন সময় পদ্মা নদীর উত্তাল জলরাশীতে বিলীন হয়ে যেতে পারে শতাধিক বাড়ী- ঘরসহ শহর রক্ষা বাধঁসহ ইউনিয়নগুলোর বেশীরভাগ এলাকা।

নদী ভাঙ্গন এলাকার, ইউসুফ মাতুব্বারের ডাঙ্গীর মোঃ ছগির মোল্লা(৫৫), মোঃ শেখ সেকেন আলী(৪০), মোঃ সেলিম মোল্লা(৩০), লিটন তালুকদার(৩৫), শেখ লাল মিয়া(৭০)মোঃ ওসমান খান(৬৫), জোসনা বেগম(৪০)সহ আরো অর্ধশতাধিক স্থানীয়রা জানান, ফরিদপুরের উন্নয়নের রুপকার প্রবাসী কল্যান মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশারফ হোসেনকে এমপি বানিয়েছি।

এছাড়া ফরিদপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যন খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর একজন সৎ নিষ্ঠাবান লোক, আর সেজন্যই আমরা তাঁকেও ভোট দিয়েছি। তারা দুভাই জনদরদি ও খেটেখাওয়া মানুষের পরম বন্ধু হয়ে ১১ টি ইউনিয়নের উন্নয়নের জন্য দিন-রাত পরিশ্রম করে চলেছেন। আর সেজন্যই অতি অল্প সময়েই তারা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন ফরিদপুরবাসীর কাছে। ফরিদপুরের যেকোন ছোট-বড় সমস্যার কথা তাদের কানে পৌছালে তারা তাৎখনিক সেই সমস্যার সমাধানের ব্যাবস্থা করেন। ভুক্তোভোগীরা জানালেন একই এলাকার হাবিব ফকিরের ছেলে মিন্টু ফকির ও স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা আয়ুব মোল্যাসহ স্থানীয় বিএনপির কয়েকজন নেতা এই বালু উত্তলন করে। এই ঘটনায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনকারিদের বিরুদ্ধে দুইটি মামলা করা হয়েছে। তারা দীর্ঘদিন যাবৎ অবৈধ ভাবে ড্রেজার বসিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে তা বিক্রি করে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। অত্যাধিক বালু উত্তোলনের ফলে নদীর পাড় ভাঙতে শুরু করেছে, যার ফলে প্রায় ৫০/৬০ টি পরিবার প্রানের ভয়ে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে এরই মধ্যে।

বর্তমানে যারা সেখানে অবস্থান করছে তারাও শান্তিতে নাই, নির্ঘুম রাত কাটে তাদের, কখন যেনো তাদেরকেও চলে যেতে হয় ভয়াল পদ্মার গ্রাসে। এলাকাবাসী আরো জানান, মিন্টু ফকির প্রভাব খাটিয়ে বালু উত্তোলন, সিএন্ডবি ঘাটের পতিতা পল্লীর চাঁদা, মাদক ব্যবসার ভাগসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছে। এতদিন মিন্টু ফকির গংদের ভয়ে এলাকাবাসি মুখ খুলতে পারেনি। কেউ কোন রকম প্রতিবাদ করতে গেলেই তাদের পালিত মাস্তান বাহিনী দ্বারা আক্রমন ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে হয়রানী করেছে ও হুমকি দিয়ে আসতো।

এলাকাবাসী আরো জানান, কোটি কোটি টাকা খরচ করে সিসি ব্লক করে শহর রক্ষা বাঁধ তৈরী করেছেন প্রবাসী কল্যান মন্ত্রী মহোদয় এর একান্ত প্রচেষ্টায়। আর আজ সেই বাঁধ হুমকির মুখে, শুধুমাত্র ঐ মিন্টুদের নিজ পকেট ভারী করার জন্যই। ভাঙ্গন কবলিত ডিগ্রীর চর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাদিকুজ্জামান মিলন পাল জানান, বর্তমান সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যায়ে শহর রক্ষা বাধ করেছে। গত ৫/৬ বছর ফরিদপুরের মানুষ নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলো, কিন্তু গত দুই-আড়াই মাস যেভাবে বালু তোলা হয়েছে এবং বালু বোঝাই ভারি ট্রাক বাধের উপর দিয়ে চলাচল করেছে তাতে বাধের অনেক অংশ হুমকির মধ্যে রয়েছে। তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত বাধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামতের অনুরোধ জানান।

ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড নিবার্হী প্রকৌশলী আবুল কালাম মো. আকতারুজ্জামান জানান, আমি ফরিদপুরে যোগদানের পরেই অবৈধ বালু উত্তোলনকারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। তিনি বলেন, শহর রক্ষা বাধের ক্ষতিগ্রস্থ স্থানগুলো বর্ষা মৌসুমের আগেই মেরামতের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নদী ভাঙ্গনে নিস্বঃ ও যারা হুমকির মুখে অবস্থান করছেন তারা মাননীয় মন্ত্রী, জেলা প্রশাসক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে তাদের জোর দাবি ও আকুল আবেদন শহরকে রক্ষাসহ ইউনিয়ন দুটি কে বাচাঁতে এগিয়ে আসার জন্য।



মন্তব্য চালু নেই