পড়ায় মন বসে না? তাহলে এই লেখাটা, আপনার জন্যই

পোমোডরো টেকনিক – মন ভোলানোর, মন বসানোর কার্যকরী কায়দা

পড়ায় বসেনা মন? বিরক্তিকর সব পড়াশোনা অথবা একঘেঁয়ে কাজ করতে গেলে পায় বেজায় ঘুম? অথবা ধরে যায় মাথা, কিংবা মন চলে যায় হেথা নয়, হোথা নয়, অন্য কোথাও? তাহলে আমার এই লেখাটা, আপনার জন্যই।

নিউরোবিজ্ঞানীরা কিছুদিন আগে একটা ইন্টারেস্টিং গবেষণা করেছিলেন। কিছু ছাত্রকে তাদের খুব অপছন্দের কোনো বিষয়ে পড়াশোনা করতে দিয়ে তাদের মস্তিষ্কের উপর রাখছিলেন নজর। কী আশ্চর্য, অল্প একটু পরেই দেখা গেলো, ব্যথা পেলে মানুষের মস্তিষ্কের যে অংশের পেইন রিসেপ্টর স্নায়ুকোষ সক্রিয় হয়ে উঠে, বিরক্তিকর পাঠ্যবই পড়তে গিয়ে ছাত্রদের একই রকমের ব্যথা হচ্ছে।

কাজেই ভ্যানভ্যানানি পড়া পড়তে গেলে মাথায় যদি করে ব্যথা, সেটা পড়া ফাঁকি দিতে আপনার আলসেমি বা অজুহাত না, বরং সেটা আপনার দেহের মনের কড়া প্রতিবাদ — এই চাপিয়ে দেয়া বিরক্তিকর পড়ার বিরুদ্ধে।

কিন্তু? পাশ তো করতেই হবে পরীক্ষায়। অথবা অফিসের বসের দেয়া কাজটা করতে হবে শেষ? তবে উপায় কী?

আছে। মনকে ফাঁকি দেয়ার কায়দাটা আছে। চলুন, দেই শিখিয়ে।

পোমোডরো টেকনিক
কায়দাটা খুব সহজ। পড়া বা এরকম আর কোনো কাজকে ২৫ মিনিটের খণ্ডে ভাগ করে নিন। ঘড়িতে বা মোবাইলে এলার্ম সেট করুন ঠিক ২৫ মিনিট পরে। এর বেশিও না, কমও না। এবং অন্য সব কিছু বন্ধ করে ২৫ মিনিট ধরে কাজটা করুন। যেই মাত্র এলার্ম বাজবে, অমনি কাজ বন্ধ। মিনিট পাঁচেক, দশেক হাওয়া খান, চা খান, সেলফি তুলেন, মন যা চায় তাই করেন। তার পর আবারও ২৫ মিনিটের এলার্ম।

এর কারণটা কী? কারণ হলো বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, ২৫ মিনিটের মাথাতেই ব্রেইনের নিউরণগুলাতে বিরক্তিকর পড়ার প্রতিবাদ হিসাবে শুরু হয়ে যায় ব্যথা, আর আপনিও বিরক্ত হয়ে দেন ছেড়ে হালটা। কাজেই ঠিক ২৫ মিনিটের মাথায় যদি অপছন্দের কাজটা থামিয়ে দিতে পারেন, তাহলে নিউরনগুলা থাকবে খোশ মেজাজে। মনকে পারবেন ভোলাতে।

আপনিও থাকবেন মেজাজে বেজায় খোশ।
কাজটাও হবে, যতোই বিরক্তির হোক না কেনো।
মন ভোলানোর এই টেকনিকের নাম? পোমোডরো টেকনিক।
আজই তাহলে দেন শুরু করে। আর দেরি কেনো?

ask.fm সাইটে একাধিক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে এই প্রশ্নটা পেলাম, পড়ায় কীভাবে বসাবেন মন। তাই এখানেই লিখে ফেললাম জবাবটা। কাজে লাগলে ধন্যবাদ দেয়ার বদলে আরো কয়েকজনকে দিবেন শিখিয়ে। শেয়ার দিবেন যেন সবাই জানে।

[ মূল লেখকঃ Ragib Hasan, Assistant Professor at University of Alabama at Birmingha, USA. Ex Lecturer, CSE, BUET – facebook.com/ragibhasan]



মন্তব্য চালু নেই