প্রাকৃতিক ভাবেই মনোরম, প্রাচীন সৌন্দর্যের ইতিহাস

আমাদের এই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময়ে নতুন নতুন স্থাপনা তৈরি হচ্ছে সৃষ্টি করা হচ্ছে কৃত্তিম সৌন্দর্য। তবে এটা নতুন কিছু নয়, মানুষ চিরকালই সুন্দরের পূজারী। অতীতেও মানুষ তার সৌন্দর্যপ্রিয়তা থেকে তৈরি করেছে অনেক স্থাপনা ও সুন্দর স্থান। আবার কিছু স্থান প্রাকৃতিক ভাবেই মনোরম। আজ আমরা জানবো পৃথিবীর এমন দুটো ঐতিহাসিক সুন্দর স্থান সম্পর্কে যা আজও মানুষকে কাছে টানে ও মুগ্ধ করে। আসুন জেনে নেওয়া যাক:

লোরেস্তান প্রদেশ:
ইরান দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ায় পারস্য উপসাগরের তীরে অবস্থিত একটি রাষ্ট্র। ইরান বিশ্বের সবচেয়ে পর্বতময় দেশগুলির একটি। এখানে রয়েছে পৃথিবীর ঐতিহাসিক সব নগরী। ইরানের ঐতিহাসিক নগরী গুলোর একটি হচ্ছে লোরেস্তান প্রদেশ। লোরেস্তান প্রদেশটি বেশ প্রাচীন। লোরেস্তন ইরানের ৩০টি প্রদেশের ঐতিহাসিক প্রদেশের একটি। এটি দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে জাগ্রোস পর্বতমালাতে অবস্থিত। এখানে ১৭ লক্ষেরও বেশি লোক বাস করে। প্রদেশের রাজধানীর নাম খোর্‌রামাবাদ। স্বাভাবিকভাবেই প্রাচীন ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ লোরেস্তান। সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক এবং প্রাকৃতিক শত শত নিদর্শনে ভরপুর এই প্রদেশ অনাবিল সৌন্দর্য, চমৎকার আবহাওয়া আর দর্শনীয় বিচিত্র স্থান ও স্থাপনার জন্য ইরানের অন্যতম প্রদেশের মর্যাদায় অভিষিক্ত।

বর্তমানে লোরেস্তান প্রদেশের আয়তন ত্রিশ হাজার বর্গকিলোমিটার। ইরানের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত এই প্রদেশটি। ঐতিহাসিক লোরেস্তান প্রদেশ সবুজ শ্যামল। এর উত্তরে রয়েছে হামেদান এবং কেন্দ্রীয় প্রদেশ। দক্ষিণে রয়েছে খুজিস্তান প্রদেশ। পূর্বদিকে রয়েছে ইস্পাহান প্রদেশ আর পশ্চিম দিকে রয়েছে কেরমানশাহ প্রদেশ এবং এইলাম প্রদেশ। লোরেস্তানে প্রদেশে রয়েছে প্রচুর পাহাড় পর্বত। যাগরোস পর্বতমালার মাঝখানে পড়েছে। এখান থেকে দেখতে পাওয়া যায় পার্বত্য উপত্যকার পাশাপাশি অনেক উন্মুক্ত প্রান্তরও। প্রাকৃতিক এই গঠনের কারণে লোরেস্তান প্রদেশের আবহাওয়াতেও বৈচিত্র্য লক্ষ্য করা যায়। আর এই আবহাওয়ার কারণে প্রাকৃতিক সুন্দর পরিবেশ যেমন গড়ে উঠেছে তেমনি বিচিত্র বুনো প্রাণীর নিশ্চিন্ত জীবনযাপনেরও প্রাকৃতিক ব্যবস্থা রয়েছে। এদিক থেকে বলা যায় লোরেস্তান হচ্ছে প্রকৃতিপ্রেমিকদের জন্য একটা সমৃদ্ধ ভাণ্ডার। এর পাশাপাশি প্রাচীন ইতিহাস ঐতিহ্যের সমৃদ্ধি প্রদেশটির গুরুত্ব আরও অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে।

কলোসিয়াম মঞ্চ:
কলোসিয়াম ইতালির রোম শহরে অবস্থিত একটি বৃহৎ উপবৃত্তাকার ছাদবিহীন মঞ্চ। এটি ৭০ থেকে ৭২ খ্রিস্টাব্দের মাঝে কোন এক সময় সম্রাট ভেসপাসিয়ান তৈরি করে ৮০খ্রিস্টাব্দে রোমান প্রজাদের উপহার দিয়েছিলেন। ৫০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতাসম্পন্ন এই মঞ্চ সাধারণত গ্ল্যাডিয়েটরদের প্রতিযোগিতা এবং জনসাধারণের উদ্দেশ্যে কোন প্রদর্শনীর জন্য ব্যবহৃত হত। বিস্ময়কর এই মঞ্চটি অনেক করুণ ও বীভৎস কাহিনীর সঙ্গেও যুক্ত। এই কলোসিয়ামেই অনুষ্ঠিত হতো যোদ্ধাদের লড়াই প্রতিযোগিতা। লড়াইরত এই যোদ্ধাদের বলা হতো গ্লাডিয়েটর। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত একজন গ্লাডিয়েটর আরেকজন গ্লাডিয়েটরকে ঘায়েল করার চেষ্টা করত।

কলোসিয়াম একটি উপবৃত্তাকার কাঠামো যা ১৮৯ মিটার দীর্ঘ এবং ১৫৬ মিটার চওড়া । এটির মূল এলাকা ৬ একর। বাইরের দেয়ালের উচ্চতা হল ৪৮ মিটার। ঘের মূলত ৫৪৫ মিটার। কেন্দ্রিয় রনভূমি একটি উপবৃত্তাকার এলাকা যা ৮৭ মিটার লম্বা এবং ৫৫ মিটার চওড়া এবং একটি ৫ মিটার উচ্চ প্রাচীর দিয়ে ঘেরা, যা আসনবিন্যাস এর টায়ারগুল দ্বারা বেষ্টিত। এটি বিশ্বের প্রাচীন সপ্তমাশ্চর্যের একটি। এখোনো মানুষ দূর দুরান্ত থেকে কলোসিয়াম মঞ্চ দেখতে যায়। এর চমৎকার নির্মান শৈলি ও অসামান্য কারুকার্যে মুগ্ধ হয় শিল্প প্রেমী মানুষ। এখনো এখানে বিভিন্ন ধরনের প্রতযোগীতা ও উৎসবের আয়োজন করা হয়।-সূত্র: হিস্টোরি ও উইকিপিডিয়া।



মন্তব্য চালু নেই