প্রধানমন্ত্রীর মৌখিক নির্দেশ দায়মুক্তির গ্যারান্টি নয়: সালাহ উদ্দিন
সংবিধানকে এক ব্যক্তির অভিব্যক্তি হিসেবে রূপান্তর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ। তিনি প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে হুশিয়ার করে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর মৌখিক নির্দেশ নির্যাতনের দায়মুক্তির গ্যারান্টি দিতে পারে না।
বুধবার এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন তিনি।
সালাহ উদ্দিন বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিনষ্টকারী অবৈধ সরকার সংবিধানের দোহাই দিয়ে গদি রক্ষা করতে চায়। জনগণের অভিপ্রায়ের পরম অভিব্যক্তিরূপে সংবিধান প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ আইন। অথচ সেই সংবিধানকে এক ব্যক্তির অভিব্যক্তি হিসেবে রূপান্তর করা হয়েছে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে। প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিতন্ত্র ও স্বৈরতন্ত্র থেকে প্রিয় মাতৃভুমিকে মুক্ত করার জন্য আজ সব দেশপ্রেমিক জনগণ ঐক্যবদ্ধ।”
সালাহউদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, “চলমান গণ-আন্দোলনকে কলুষিত করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে পুলিশি রিমান্ডে নির্যাতনের মাধ্যমে কিছু ব্যক্তির মুখ দিয়ে বলানো হচ্ছে নাশকতার সঙ্গে বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের নেতারা জড়িত। সরকার নিয়ন্ত্রিত ও দলকানা কতিপয় গণমাধ্যমে তা দিনরাত ফলাও করে প্রচার করা হচ্ছে।”
জনগণ এ ধরনের সরকারি চক্রান্ত ও অপপ্রচারে বিশ্বাস করে না বলে বিবৃতিতে দাবি করে বলা হয়, “জনগণ প্রত্যক্ষ করছেন যে, রাতের অন্ধকারে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ক্রসফায়ারে হত্যা করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আষাঢ়ে গল্প সাজাচ্ছে।” তিনি “রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থকরণের এ-জাতীয় ঘৃণ্য চক্রান্তের’ বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
নিষ্ঠুর ও পৈশাচিক কর্মকাণ্ডের দায় সরকারি বাহিনী এড়াতে পারবে না বলে হুঁশিয়ারি করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর মৌখিক নির্দেশ সিভিল প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দায়মুক্তির গ্যারান্টি দিতে পারে না। সুতরাং অবৈধ ক্ষমতাসীনদের স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে যারা আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবেন এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করবেন তার দায়ভার সম্পূর্ণরূপে তাদের ওপরই বর্তাবে।”
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আবারও অভিযোগ করেন, সরকারি দলের দুর্বত্তরা পেট্রলবোমা ও অন্যান্য অবৈধ অস্ত্রসস্ত্রসহ বিভিন্ন জায়গায় ধরা পড়লেও তাদের গ্রেফতার কিংবা আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।
বিবৃতিতে সালাহউদ্দিন বলেন, “আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ করছি, খালেদা জিয়ার অবরুদ্ধ আবাসস্থলের সন্নিকটে সরকারপন্থী কিছু সংগঠন হরতাল-অবরোধবিরোধী নাটক মঞ্চস্থ করছে এবং দেশনেত্রীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে।” খালেদা জিয়ার নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার যেকোনো প্রচেষ্টা শাসকশ্রেণীর নিরাপত্তাবেষ্টনীকে দুর্বল করে তুলতে পারে বলে তিনি হুঁশিয়ারি করেন।
গণতন্ত্র মুক্তি, ভোটের অধিকার, মৌলিক মানবাধিকার, বাক-ব্যক্তিস্বাধীনতা ও সুশাসনের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে দেশের সর্বস্তরের জনগণ খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ বলে দাবি করে বিবৃতিতে বলা হয়, ন্যায্য দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত চলমান গণ-আন্দোলন এগিয়ে যাবে।
চলমান অবরোধ-হরতাল কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীসহ দেশবাসীকে আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে।
মন্তব্য চালু নেই