প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য রুচিহীন, যা উচ্চারণ করতেও ঘৃণা লাগে

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী তার চিরাচরিত ভাষা ও বাচনভঙ্গির মাধ্যমে খালেদা জিয়াসহ বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নিয়ে রুচিহীন ও শিষ্টাচারবর্জিত মিথ্যাচার করেছেন। এটা শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ, যা উচ্চারণ করতে আমরা ঘৃণাবোধ করি।’

শনিবার সকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। গতকাল শুক্রবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বক্তব্যের জবাব দিতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, ‘শেখ হাসিনা রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে কলুষিত করেছেন। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য বিএনপির ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নিতে হয় না। খালেদা জিয়া রাজনীতিতে উড়ে এসে জুড়ে বসেননি। তিনি বিদেশে পালিয়ে রাজনীতি করেননি। ষড়যন্ত্রের একক অভিজ্ঞতা আওয়ামী লীগের।

‘সরকারের পায়ের নিচে মাটি শক্ত রয়েছে’ প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের জবাবে ফখরুল বলেন, ‘মাটি শক্ত হলে পদত্যাগ করে নির্বাচন দিন। দেখা যাবে কার পায়ের নিচের মাটি শক্ত।’

টিআইবি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে প্রচ্ছন্ন হুমকি বলে বর্ণনা করেন মির্জা ফখরুল।

দুনীতির সঙ্গে জিয়াউর রহমানকে জড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন তার জবাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ দুর্নীতিকে রাষ্ট্রীয়করণ করেছে। জিয়াউর রহমান দুনীতির সঙ্গে জড়িত -এই ধরনের কথা জনগণের কাছে হাস্যকর।’

‘সরকার জনগণকে বোকা বানাচ্ছে’ দাবি করে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘ভারত থেকে চাল আমদানি করা হচ্ছে। আবার শ্রীলঙ্কায় চাল রপ্তানির কথা বলা হচ্ছে। এসব জনগণকে বোকা বানানো ছাড়া আর কিছুই নয়।’

‘হজ সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য নাকি সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে মন্তব্য করায় লতিফ সিদ্দিকীকে সরকার থেকে অপসারণ ও দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে তার স্পষ্ট ব্যাখা’ চেয়েছেন ফখরুল।

৫ জানুয়ারির নির্বাচন সম্পর্কে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম থলের বিড়াল বের করে দিয়েছেন। বাংলাদেশের মানুষ অতিদ্রুত নির্বাচন চায়। এই নির্বাচন গভীর রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনের একমাত্র পথ।’

ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সমালোচনা করে দলটির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, ‘তিনি মার্কিন রাষ্ট্রদূত ও প্রতিমন্ত্রীকে নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন তা শুধু কূটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত নয়, তা বর্ণবাদীও। সরকার বর্ণবাদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।’

আশরাফের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা না নেয়ায় বাংলাদেশের কূটনীতিতে ঘাটতির আশঙ্কা করেন সাবেক এ পররাষ্ট্র সচিব। তিনি মিথ্যা কূটনীতি বন্ধের আহ্বান জানান।

শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, ‘তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়নের সম্ভাবনা দেখছি না। ৪০ বছর পর স্থল ও সীমান্ত চুক্তির যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, তার জন্য আমরা সরকারকে সাধুবাদ জানাই। ২০০২ সালে বিএনপি জোট সরকার এ ব্যাপারে একটি ফ্রেমওয়ার্ক দিয়েছিল। সেই অনুযায়ী চুক্তি বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশ লাভবান হবে।’

সদ্য সমাপ্ত সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে যেসব চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে তার জন্যও সরকারকে সাধুবাদ জানান তিনি।

দলের সহ-দপ্তর সম্পাদক আব্দুল লতিফ জনি এবং আসাদুল করিম শাহীন এসময় উপস্থিত ছিলেন।



মন্তব্য চালু নেই