প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি ১৭৯ জন প্রাক্তন সাংসদের

চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন ৮ম জাতীয় সংসদের বিএনপি দলীয় ১৭৯ জন সংসদ সদস্য।

রোববার বিকেলে প্রাক্তন সংসদ সদস্য ও বিএনপির প্রচার সম্পাদক জয়নুল আবদিন ফারুক স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়। বিবৃতির কপি গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে সরবরাহ করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান।

বিবৃতিতে প্রাক্তন সংসদ সদস্যরা বলেন, ‘বর্তমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনের জন্য রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা কুক্ষিগতকারী শেখ হাসিনার পদত্যাগই একমাত্র পথ। অবিলম্বে বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আপনার (শেখ হাসিনা) নিরাপদ প্রস্থানের পথ বেছে নিন। জাতিকে মহাবির্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করুন।’

৮ম জাতীয় সংসদের সদস্য ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, তরিকুল ইসলাম, এম কে আনোয়ার, ড. আবদুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান কামাল ইবনে ইউসুফ, শাহজাহান সিরাজ, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন, আবদুল্লাহ আল নোমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. এম ওসমান ফারুক, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর প্রমুখের নাম বিবৃতিতে উল্লেখ রয়েছে।

বিবৃতির শুরুতে এই প্রাক্তন সাংসদরা বলেন, ‘আমরা বিরাজমান পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, সরকার ২০ দলীয় জোটকে দমন-পীড়ন ও মিথ্যা মামলা দিয়ে নিশ্চিহ্ন করার যে অপচেষ্টা চালাচ্ছে তা শুধু স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকারকে ক্ষুণ্ণ করেনি, বরং আইনের শাসনের অপমৃত্যু ঘটিয়ে মুক্ত রাজনীতির পথও রুদ্ধ করেছে।’

বিবৃতিতে গত ৩ জানুয়ারি থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ‘অবরুদ্ধ’ করা, ট্রাক দিয়ে তার কার্যালয়ে সামনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা, বিদ্যুৎ, টেলিফোন, ডিস লাইন বিচ্ছিন্ন করা ও খাবার প্রবেশে বাধা দেওয়ার নিন্দা জানানো হয়।

তারা বলেন, ‘আমরা মনে করি, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে এ রকম অন্যায় আচরণ সম্পূর্ণ বেআইনি ও অগণতান্ত্রিক এবং সংবিধানের ৩৭, ৩৮, ৩৯ ধারার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। সরকারের এহেন আচরণ সম্পূর্ণ মানবতাবিরোধী, অনৈতিক ও মৌলিক মানবাধিকারের পরিপন্থী। সরকারকে আমরা এ ধরনের মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকা এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে খাবার সরবরাহে বাধা না দেওয়ার জোর দাবি জানাই।’

দেশব্যাপী নাশকতার জন্য ক্ষমতাসীনদের দায়ী করে প্রাক্তন সংসদ সদস্যরা আরো বলেন, ‘সারা দেশে সাধারণ মানুষের ওপর পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে হতাহত করা হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে নাশকতার সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করছে পুলিশ। কিন্তু গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মিছিল থেকে ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের ধরে নিয়ে পুলিশের কাছে দেওয়ায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পুরস্কৃত করা হচ্ছে।’

ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তারা বলেন, ‘গণহত্যা বন্ধ করুন। বিশ্বের কাছে দেশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করা থেকে বিরত থাকুন। আদালত আপনাকে রং হেডেড উপাধি দিয়েছে। যদি বিএনপির অস্তিত্ব বিলীন করতে চান, তাহলে রায়টি আমলে নিন। আদালত স্বীকৃত কোনো রং হেডেড ব্যক্তির কাছে দেশের স্বার্বভৌমত্ব ও মানুষ নিরাপদ নয়।’



মন্তব্য চালু নেই