প্রধানমন্ত্রীর গুলশান কার্যালয়ে যাওয়া ‘নিছক ছলনা’ : রিজভী

যাত্রাবড়ীতে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের ঘটনায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ জ্যেষ্ঠ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরকে ‘হিংস্র অমানবিকতা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।

তিনি বলেন, ‘মামলা দায়েরের ঘটনায় এটা সুস্পষ্ট যে, গতকাল কোকোর মৃত্যুসংবাদে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রীর সহানুভুতি জানাতে আসাটা ছিল নিছকই ছলনা, একটি প্রহসনের মহড়া মাত্র।’

রোববার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে রিজভী বলেন, ‘পুত্রশোকে কাতর খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে সরকার হিংস্র অমানবিকতার আরেকটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। কতখানি নিষ্ঠুর ও বিবেকশূন্য হলে একটি সরকার এই জঘন্য অপকর্ম করতে পারে তা দুনিয়াতে মনে হয় নজীরবিহীন।’

বর্তমান সরকার মনুষ্যত্বের সব বৈশিষ্ট্যগুলোকে জলাঞ্জলি দিয়েছে মন্তব্য করে মামলা দায়েরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান রিজভী।

রিজভী আহমেদ বলেন, ‘কোকোর মৃত্যুতে খালেদা জিয়ার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাত করতে আসাটাকে আমরা ইতিবাচক অর্থেই গ্রহণ করেছিলাম। রাজনীতির বাইরে সামাজিক দায়িত্ববোধের তাগিদেই খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী সমবেদনা জানাতে আসছেন বলে ধরে নিয়েছিলাম। কিন্তু বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে মামলা দাায়েরের পর এটা সুস্পষ্ট যে, কোকোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর সমবেদনা জানানোটা যেন কুমিরের কান্না।’

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী তার রাজনৈতিক বিরোধীদের গভীর শোকের সময়ও তাদের বিরুদ্ধে নিজের অন্তরের বিদ্বেষ দুরীভুত করতে পারেননি। খালেদা জিয়াকে কারাগারে বন্দি করার নীল নকশা তারা অনেক দিন ধরেই এঁটে আসছে। তাকে দায়ী করে আটক করার জন্যই একের পর এক পেট্রোল বোমা মেরে নাশকতার ঘটনা ঘটানো হচ্ছে।’

রিজভী দাবি করেন, ‘বর্তমান সরকার ও তাদের আন্দোলনের ফসল ১/১১ এর সরকারের মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনে প্রায় সাড়ে সাত বছর ধরে অসুস্থতায় ভুগছিলেন আরাফাত রহমান কোকো। ২০০৭ সালের মঈনউদ্দিন-ফখরুদ্দিনের সরকার খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারের দিনই কোকোকে আটক করে। আটকের পর তার ওপর চালানো হয় অমানুষিক অত্যাচার। এই অত্যাচারেই গুরুতর হৃদরোগে আক্রান্ত হন আরাফাত রহমান কোকো।’

তিনি বলেন, এরপর আওয়ামী মহাজোট সরকার একের পর এক মিথ্যা মামলা দায়ের করতে থাকে কোকোর বিরুদ্ধে। মায়ের কাছ থেকে সন্ত্রান ও সন্তানের পরিবারকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়। মানসিক ও শারিরিক নির্যাতনের ফলে অসুস্থতায় ভুগতে ভুগতে গতকাল আরাফাত রহমান কোকো মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

মাননুষের ক্ষোভকে ভিন্ন দিকে ঘুরিয়ে দিতে সরকারি এজেন্টরাই এই নাশকতাগুলো করছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপির এই নেতা।

তিনি অবিলম্বে বিএনপি চেয়ারপারসনসহ সব নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিব জানান। একই সঙ্গে যাত্রাবাড়ীতে দুস্কৃতকারীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি করেন।



মন্তব্য চালু নেই