প্রধানমন্ত্রীকেই সমঝোতার উদ্যোগ নিতে হবে
চলমান রাজনৈতিক অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সমঝোতার উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার।
তিনি বলেছেন, ‘বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি চলতে থাকলে বাংলাদেশ একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত হবে। এমনকি দেশ গৃহযুদ্ধের দিকে ধাবিত হতে পারে।’
শনিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে সুজনের পক্ষ থেকে এমন আশঙ্কা ব্যক্ত করেন প্রতিষ্ঠানটির সাধারণ সম্পাদক।
ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির কারণে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থির হয়ে উঠেছে। সারাদেশে সহিংসতা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আমরা একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত হবো। এমনিকি গৃহযুদ্ধের দিকেও ধাবিত হতে পারে। দেশের এ সঙ্কট মুহূর্ত কাটিয়ে ওঠতে দ্রুত সংলাপ ও সমঝোতা জরুরি হয়ে পড়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে রাজনৈতিক সহিংসতায় সারাদেশে ৯ জন নিহত হয়েছে। যানবাহনে আগুন দেয়ার ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে, ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচল। ৪ জানুয়ারি থেকে দেশজুড়ে মানুষ অবরুদ্ধ। এ এক অসহনীয় অবস্থা, যা গত নির্বাচন পূর্ববর্তী সহিংসতাপূর্ণ পরিস্থিতির কথাই মনে করিয়ে দেয়।’ সহিংসতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি দ্রুত এসব বন্ধের দাবি জানান।
বদিউল আলম বলেন, ‘বিগত কয়েক দিনের হানাহানি ও সংঘাত দেশের অস্থিতিশীলতার বাস্তব প্রতিফলন। এ সঙ্কট থেকে উত্তরণের জন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন হওয়া জরুরি। শুধু নির্বাচনই যথেষ্ট নয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা এড়াতে রাজনৈতিক দলগুলো এবং অন্যান্য স্বার্থ সংশ্লিষ্টদের সংলাপে বসা ও কতগুলো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সমাঝোতায় আসা জরুরি। এর মাধ্যমে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে।’
প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে দ্রুত সংলাপে বসার জন্য অনুরোধ জানিয়ে সুজন সম্পাদক বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীকেই প্রাথমিক পদক্ষেপ নিতে হবে বলে আমরা মনে করি।’
বদিউল আলম বলেন, ‘আমরা অতীতের মতো ‘সংলাপ সংলাপ খেলা’ দেখতে চাই না। আমরা চাই আন্তরিকতাপূর্ণ আলোচনা, ছাড় দেয়ার মানসিকতা ও টেকসই সমাধান।’
তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ যদি দায়িত্বশীলতার পরিচয় না দেন এবং সমস্যা সমাধানে এগিয়ে না আসেন, তাহলে আমরা রাষ্ট্রপতিকে একটি অর্থবহ সংলাপের উদ্যোগ নেয়ার জন্য অনুরোধ জানাবো।’
পুলিশের বিরুদ্ধে রমরমা গ্রেপ্তার বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সন্দেহ করে বহু ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে দেশ একটি চরম কর্তৃত্ববাদী পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারে। তাই নাগরিক হিসেবে আমরা গভীরভাবে শঙ্কিত।’
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিতি ছিলেন সুজন নির্বাহী সদস্য ড. তোফায়েল আহমেদ, কেন্দ্রীয় প্রধান সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার প্রমুখ।
মন্তব্য চালু নেই