প্রতিরক্ষা বিষয়ে চুক্তি নয়, দু’টি সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে : আনন্দবাজার
প্রতিরক্ষা বিষয়ে বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক চুক্তি নয় দু’টি সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪দিনের সফরে ওই দু’টি স্মারক সই হবে, এ স্মারকের মাধ্যমে বাংলাদেশকে সমরাস্ত্র কেনার জন্য দেওয়া হবে ৫০ কোটি ডলার ঋণ-সাহায্য দেওয়াসহ ভূকৌশলগত রাজনীতিতে কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থায় পৌঁছনো যাবে বলে আশা করছে নয়াদিল্লী। এমনটিই জানিয়েছে ভারতীয় প্রভাবশালী দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা।
বাংলাদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত ভারতীয় যুগ্মসচিব শ্রীপ্রিয়া রঙ্গনাথনের বরাত দিয়ে এসব জানিয়েছে পত্রিকাটি।
দু’দেশের মধ্যে চলতি সামরিক সহযোগিতাগুলিকে একটি ছাতার তলায় নিয়ে এসে একটি সামগ্রিক ‘ফ্রেমওয়ার্ক’ তৈরি করা হবে। যার মধ্যে রয়েছে সাবমেরিন-প্রশিক্ষণ, তথ্য সহযোগিতা, উপকূলরক্ষীদের মধ্যে সহযোগিতা, সেনাপ্রধান পর্যায়ে আদানপ্রদানের মতো বিষয়। এ ছাড়া ভারত থেকে সমরাস্ত্র এবং সামরিক প্রযুক্তি কেনার জন্য বাংলাদেশকে ৫০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়া হবে।
প্রতিরক্ষা খাতে বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের দীর্ঘদিনের সর্ম্পক ভারতের জন্য ‘চাপ’ বলে উল্লেখ করে পত্রিকাটি লিখেছে, দীর্ঘদিন আগেই সামরিক সহযোগিতা নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের চুক্তি হয়ে গিয়েছে। সম্প্রতি বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী এলাকায় ভারতীয় সামরিক ঘাঁটিগুলির উপর নজরদারি এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে দখলদারি রাখতে বেজিং-এর সক্রিয়তা বাড়ছে। আর সেই পরিকল্পনা রূপায়ণে ঢাকাকে পাশে পেতেও ক্রমশ প্রভাব বাড়াচ্ছে চীন। পদ্মা সেতু থেকে শুরু করে বাংলাদেশের বিভিন্ন অবকাঠামোতে বিনিয়োগ করছে চীন। গত দু’বছরে বাংলাদেশকে আড়াই হাজার কোটি ডলার অর্থসাহায্য করেছে চীন, যার একটা ভাল অংশ সামরিক ক্ষেত্রে। এই প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনার আসন্ন সফরে প্রতিরক্ষা নিয়ে সমঝোতাপত্রে সই-এর বিষয়টি তাৎপর্যপূর্ণ।
বাংলাদেশের ঘরোয়া রাজনীতিতে ভারতের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা নিয়ে বিরোধিতার ঝড় উঠেছে বলে উল্লেখ করে আনন্দবাজার আরও লিখেছে, বিএনপি-জামাত জোট এবং নাগরিক সমাজের একাংশ এ কথাও বলছে, যে অর্থের বিনিময়ে নিরাপত্তাকেও ভারতের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছে হাসিনা সরকার। এতে করে শেখ হাসিনা সরকার যেনো চাপে না পড়ে, সেদিক খেয়াল রাখছে ভারত। সেইসঙ্গে চীনের বিষয়টিও যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে নয়াদিল্লী।
বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে যেকোনো ধরণের সর্ম্পক ও ঐক্যমতের বিষয়ে ঘরোয়া সমালোচনার প্রতিবাদে শেখ হাসিনা কঠোর ও পরিষ্কার অবস্থানের বিষয়ে ভারত যথেষ্ট শ্রদ্ধাশীল বলেও উল্লেখ রয়েছে প্রতিবেদনে। কিন্তু প্রতিরক্ষার মতো বিষয়ে কিছু গোপনীয়তা রাখা ভারত কৌশল হিসেবে রেখে এখনই সমঝোতাকে চুক্তির আকার না দিয়ে, তার আগের ধাপ সমঝোতা সই করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে প্রতিবেদনে প্রকাশ।
মন্তব্য চালু নেই