‘প্রতিরক্ষা চুক্তির জন্য ভারতের চাপ সু-সংবাদ নয়’

বিএনপির সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বাংলাদেশ সরকারকে প্রতিরক্ষা চুক্তির জন্য ভারত যে চাপ দিচ্ছে তা বাংলাদেশের জন্য মোটেও সুসংবাদ নয়। তারা যেভাবে চাপ সৃষ্টি করতে চায় তা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার পরিপন্থি ও নিয়মবহির্ভূত।রাজধানীর নয়া পল্টনে শুক্রবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী আরও বলেন, ‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের উদ্ধৃতি দিয়ে ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তাদের সাথে প্রতিরক্ষা চুক্তির বিষয়ে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে সে বিষয়ে দেশবাসী উদ্বিগ্ন। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার কী ভূমিকা রাখবে এটিও খুব স্পষ্ট নয়। বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ ছাপ মারতেই এই চুক্তির জন্য ভারত চাপ প্রয়োগ করছে বলে জনমনে ব্যাপক সন্দেহ দানা বেঁধেছে।’
তিনি আরও বলেন, সংবাদপত্রে এমনও খবর প্রকাশিত হয়েছে যে, তিস্তা চুক্তির টোপ দিয়ে বাংলাদেশ-ভারত প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করে নেওয়ার চেষ্টা করছে। এ ধরনের চুক্তি হলে দেশের সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়বে।
শ্রীলঙ্কাও এ ধরনের চুক্তি করেছিল, যার পরিণতি ভয়ানক হয়েছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘এটি বাংলাদেশের নাগরিকদের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফফন তো নয়ই বরং গোটা জাতিকে গভীর হতাশা ও দুঃশ্চিন্তার মধ্যে ফেলেছে। যেখানে বাংলাদেশের সীমান্ত এখন সমাধানহীন সহিংসতার ছোবলে রক্তাক্ত, পৃথিবীর সবচেয়ে রক্তরঞ্জিত সীমান্ত, যেখানে প্রতিদিন প্রতিনিয়ত বাংলাদেশি নাগরিকদের পাখির মতো গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে, ভারতের সঙ্গে আমাদের অভিন্ন নদীর পানির আধা লিটারও আমরা পাচ্ছি না, ভারতের পানি আগ্রাসনে বাংলাদেশের ১২শ’ নদী এখন বিলীন হয়ে ধু ধু প্রান্তরে পরিণত হয়েছে, সেখানে ভারত বাংলাদেশের স্বার্থে প্রতিরক্ষা চুক্তি সম্পাদন করবে এটা মোটেও বিশ্বাসযোগ্য নয়।’
বর্তমান সরকারের প্রতি ইঙ্গিত করে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘যাদের ওপর দেশ ও জনগণের নিরাপত্তা ন্যস্ত তারাই যদি চুক্তির দিকে ধাবিত হয়, তাহলে তা হবে স্বাধীন দেশের জনগণের সাথে ভয়াবহ বিশ্বাসঘাতকতা। এ ধরনের রাষ্ট্রবিরোধী প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে জনগণ তা দেশের স্বার্থে সকল শক্তি দিয়ে প্রতিহত করবে। জনগণ বাংলাদেশকে সিকিম বা করদমিত্র রাজ্য হতে দেবে না।’
প্রধান নির্বাচন কমিশন ব্যর্থতা দিয়েই তার কাজ শুরু করেছেন দাবি করে রিজভী আরও বলেন, ‘বর্তমান সিইসি গতকালও কুমিল্লা গিয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বুলি শুনিয়ে আস্থা অর্জনের কথা বলেছেন। অথচ সামান্য কয়টা উপজেলা ও পৌর নির্বাচনে যেভাবে কেন্দ্র দখল করে ভোট ডাকাতি হয়েছে, যেভাবে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা দেওয়া হয়েছে, যেভাবে মারধর করে বিএনপির এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে তার উত্তর তিনি কি দেবেন? শুধু তাই নয়, তিনি নির্বাচনের পরিবেশ তৈরিতে ব্যর্থ হওয়ায় মাত্র কয়েকটি স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মতো নির্বাচনেও সর্বনিম্ন ভোটারদের উপস্থিতি ছিল। সুতরাং তিনি ব্যর্থতা দিয়েই যাত্রা শুরু করলেন।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির অন্যান্য নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।



মন্তব্য চালু নেই