প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা

বছর ঘুরে আবারো হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রাণের শারদীয় দুর্গা পূজার আগমনের সুবাতাস বইতে শুরু করেছে। আগামী ৭ অক্টোবর মহাষষ্ঠির মাধ্যমে পূজা শুরু হবে। পাঁচ দিন আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে প্রতিমা বিসর্জনের পর এর সমাপ্তি ঘটবে।

দূর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গার আগমনী বার্তায় ভক্তকূলে আনন্দের জোয়ার সৃষ্টি হয়ে থাকে। এ কারণে সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ উপজেলার পাল বাড়িতে শারদীয় এ উৎসবের হাওয়া বইছে।

কাদা-মাটি, বাঁশ, খড়, সুতলি দিয়ে শৈল্পিক ছোঁয়ায় তিলতিল করে গড়ে তোলা দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরিতে দিনরাত ব্যস্ত সময় পার করছেন পাল পাড়ায় পুরুষের পাশাপাশি নারী কারিগররা।

সদর উপজেলার পাল পাড়া গ্রামে গিয়ে চারিদিকে ব্যস্ততার ছাপ পরিলক্ষিত হয়। প্রতিমা তৈরির পর শুরু হবে রূপায়নের কাজ। রঙ-তুলির শৈল্পিক আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলা হবে দেবীর মনকাড়া প্রতিচ্ছবি। তাই যেনো ঘুম নেই পাল বাড়িতে। মনের আনন্দে ভক্তির সঙ্গে চলছে প্রতিমা পার্বণের প্রস্তুতি।

এ গ্রামের লক্ষ্মী নারায়ন পাল, পলান চন্দ্র পাল, গোপাল চন্দ্র পালের প্রতিমা তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।

প্রতিবছর সিরাজগঞ্জ জেলা শহরসহ বিভিন্ন উপজেলার অধিকাংশ পূজা মণ্ডপেই অপূর্ব সাজে উপস্থাপন করা হবে তাদেরই তৈরি এসব প্রতিমা।

তারা জানান, বংশ পরম্পরায় এ পেশায় জড়িয়ে আছেন। বুদ্ধি হওয়ার পর থেকে এগুলো দেখেই বেড়ে উঠেছেন তারা। বাপ-দাদার কাছেই শেখেন কাদা-মাটি আর কাঠ-খড় দিয়ে কিভাবে প্রতিমা তৈরীর কাজ করতে হয়। ২০/২৫ বছর যাবৎ তারা এ প্রতিমা তৈরির কাজ করে আসছেন।

তাদের কাছে বিভিন্ন ধরনের প্রতিমার ক্যাটালগ রয়েছে। তা দেখেই প্রতিমা তৈরির অর্ডার দেন বিভিন্ন পূজা মণ্ডপের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা। ক্যাটালগ অনুযায়ী ১৫ থেকে ৫০ হাজার টাকায় প্রতিমা তৈরি করেন তারা।

দুর্গা পূজা শুরুর কমপক্ষে ২/৩ মাস আগে থেকেই প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু হয়। পূজা শুরুর ২/৩ দিন আগে তা সরবরাহ করে থাকেন। তবে কেউ কেউ এক সপ্তাহ আগেও নিয়ে যান।

পালপাড়ার কারিগররা আক্ষেপ করে জানান, বর্তমানে প্রতিমা তৈরির খরচ বেশি হলেও সে তুলনায় মজুরী পাওয়া যায় না। মাটির চেয়ে পরিবহন খরচ অনেক বেশি পড়ে। বাঁশ, খড়, সুতলিসহ অন্যান্য জিনিসের দামও বেশি।

আগামী সপ্তাহের মধ্যেই দুর্গা প্রতিমাগুলোতে শেষবারের মতো রঙ লাগিয়ে পোশাক পরিচ্ছদে সুসজ্জিত করা হবে। তারপর চলে যাবে মণ্ডপে।

সিরাজগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিজয় দত্ত অলক বলেন, এবার জেলায় প্রায় ৪৯০টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা হবে। এর মধ্যে সদর উপজেলার ৩৮টি ও পৌর এলাকার ৪৪টি মণ্ডপে পূজা উদযাপন করা হবে।



মন্তব্য চালু নেই