প্রতিদিনই কৌশলে অনুপ্রবেশ করছে রোহিঙ্গারা

কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে বান্দরবানের সীমান্তে দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধ হয়নি এখনো। জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিনই বিভিন্ন কৌশলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকছে রোহিঙ্গারা। সীমান্তঞ্চলে অবৈধ অনুপ্রবেশে রোহিঙ্গাদের উদ্বুদ্ধ করছে দালালচক্র এবং অনুপ্রবেশকারী আত্মীয়-স্বজনেরা।

জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়রা জানায়, মিয়ানমারের সঙ্গে বান্দরবান জেলার প্রায় ১৮৮ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকা রয়েছে। সীমান্তের ঘুমধুম, তুমব্রু, বাইশফাঁড়ি, আশারতলী সীমান্তসহ বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে প্রতিদিনই কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে বিচ্ছিন্নভাবে অনুপ্রবেশ করছে রোহিঙ্গারা। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্টে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়িয়েছে বিজিবি। অনুপ্রবেশকারীদের আটক করে পুশব্যাকও করছে বিজিবি। তারপরও ফাঁকফোকড় দিয়ে অনুপ্রবেশ করে রোহিঙ্গারা লাকড়ি এবং ফসলের বোঝা মাথায় নিয়ে কৌশলে দেশের জনস্রোতের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। অবৈধ অনুপ্রবেশে দালালচক্র এবং অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের আত্মীয় -স্বজনেরা তাদের উদ্বুদ্ধ করছে বলে সীমান্তবাসীরা অভিযোগ করে।

এদিকে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ঘুমধুম ইউনিয়ন সীমান্তে বসবাসকারীদের সচেতনতা বাড়াতে জনপ্রতিনিধি এবং বিজিবি’র পক্ষ থেকে জনসচেতনতামূলক সভা করা হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় না দিতে স্থানীয়দের সতর্ক করা হচ্ছে সভা থেকে।

ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, তুমব্রু খালের ওপারে মিয়ানমার আর এপারে বাংলাদেশ। দু’পারের বাসিন্দাদের মধ্যে যাতায়াত রয়েছে। সে সুযোগে চেহারা আর ভাষাগত মিল থাকায় তুমব্রু খাল পার হয়ে কৌশলে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ছে রোহিঙ্গারা। কক্সবাজারের কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্পসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা। অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গারা দেশের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশে উৎসাহিত করছে একশ্রেণীর দালাল এবং অনুপ্রবেশকারীদের আত্মীয়-স্বজনেরা।

অবৈধ অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গা আজিম উল্লাহ, মোহাম্মদ হাসান, আলী আকবর বলেন, মিয়ানমারের বলিবাজার, তুমব্রু বাজারসহ আশপাশের গ্রামগুলোতে সেনাবাহিনী গুলি ও আগুনে পুড়িয়ে ৫০ জন রোহিঙ্গাকে হত্যা করেছে। ঘরবাড়ি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে। অর্থ সম্পদ লুট করে নারীদের ইজ্জত কেড়ে নিয়েছে। আত্মীয়-স্বজনের জীবন এবং পরিবারের নারীদের ইজ্জত বাঁচাতে বাধ্য হয়ে আশ্রয়ের জন্য বাংলাদেশে ঢুকছে রোহিঙ্গারা। সীমান্তের ওপারে শতশত রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ বাংলাদেশে ঢোকার জন্য বসে আছে।

কক্সবাজার সেক্টর কমান্ডার কর্নেল এমএম আনিসুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ অনেক কমে গেছে। তারপরও ফাঁকফোকড় দিয়ে কিছু রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকে পড়ছে। তবে তাদের সংখ্যা খুব বেশি নয়। বিজিবি অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের আটক করে প্রয়োজনীয় সাহায্য সহযোগিতা দিয়ে ফেরত পাঠাচ্ছে।



মন্তব্য চালু নেই