পোর্তোকে উড়িয়ে সেমিতে বায়ার্ন

অসাধারণ, অবিশ্বাস্য, অবিস্মরণীয়, দুর্দান্ত- এই চারটি শব্দই হয়তো ব্যবহার করা যেতে পারে বায়ার্ন মিউনিখের ক্ষেত্রে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে এফসি পোর্তোর মাঠে ৩-১ গোলে হেরে আসায় বায়ার্ন মিউনিখের সেমিফাইনালে যাওয়া নিয়ে সন্দেহ-সংশয় দেখা দেয়। তবে ঘরের মাঠে সেই শংকাকে উড়িয়ে দিয়ে ৬-১ গোলের বড় ব্যবধানে জিতে সেমিতে উত্তীর্ণ হলো পেপ গার্দিওলার দল।

মঙ্গলবার ঘরের মাঠ আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় দুর্দান্ত খেলা উপহার দেন রবার্ট লেভানদোভস্কি, টসাম মুলার, জাভি আলানসো ও থিয়াগো আলকানতারা।

বায়ার্নের হয়ে লেভানদোভস্কি দুটি গোল করেন। সমান একটি করে গোল করেন মুলার, আলকানতারা, জাভি আলানসো ও জেরোমি বুয়েটাং। পোর্তোর হয়ে সান্ত্বনার গোলটি করেন জ্যাকসন মার্টিনেজ।

চোটজর্জর বায়ার্ন মিউনিখকে প্রথম লেগে রক্ষণভাগ বেশ ভুগিয়েছে। দ্বিতীয়ার্ধে সেই রক্ষণভাগই সবচেয়ে বেশি দৃঢ়তা দেখিয়েছে। পোর্তোর বেশ কয়েকটি আক্রমণ রক্ষণভাগের দৃঢ়তায় নিস্ক্রিয় হয়ে যায়।

প্রথম লেগে প্রথমার্ধেই ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়া বায়ার্ন মিউনিখ নিজেদের মাঠে প্রথমার্ধেই দলের সেমিফাইনালে নিশ্চিত করে ফেলেন। প্রথমার্ধেই ৫ গোল করা বায়ার্ন খেলার ৩০ (২৭) মিনিটের মাথায় ৩-০ গোলে এগিয়ে যায়। গোল তিনটি করেন থিয়াগো আলকানতারা, বোয়েটাং ও লেভানদোভস্কি। ৩৬ ও ৪০ মিনিটে মুলার ও লেভানদোস্কির গোলে ৫-০ গোলের পরিষ্কার ব্যবধানে এগিয়ে যায় পেপ গার্দিওলার দল।

মঙ্গলবার আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় প্রথম গোলের জন্য ১৪ মিনিটের বেশি অপেক্ষায় থাকতে হয়নি পেপ গার্দিওলাকে। লেফট-উয়ং থেকে বার্নাটের ক্রস থেকে ভেসে আসা বলে জোরালো হেডে গোল করে দলকে এগিয়ে নেন আলকানতারা। আট মিনিট পর হোগো বাসতেভারের ক্রস থেকে হেড করে দলকে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে নেন বোয়েটাং। পাঁচ মিনিট পর ফিলিপ লামের ক্রসে ফ্লিক করেন টমাস মুলার। ফ্লিক থেকে উড়ে আসা বলে গোলপোস্টের ৮ গজ দূর থেকে দুর্দান্ত এক হেডে গোল করে বায়ার্নকে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে নেন লেভানদোভস্কি।

স্বাগতিক বায়ার্ন মিউনিখের একের পর এক আক্রমণে বেসামাল হয়ে পড়ে এফসি পোর্তো। ৩৬ থেকে ৪০- এই ৪ মিনিটে ফের ২ গোল হজম করে নিজেদের দুঃস্বপ্নের রাত ডেকে আনলো পোর্তো। ৩৬ মিনিটে দূরপাল্লাট শটে গোল করেন টমাস মুলার। চার মিনিট পর মুলারের পাস থেকে নিজের ব্যক্তিগত দ্বিতীয় ও দলের হয়ে পঞ্চম গোলটি করেন লেভানদোভস্কি।

দ্বিতীয়ার্ধে পোর্তোর রিকার্ডো কারেশমাকে বাজে ট্যাকল করেন বায়ার্নের হুগো বাসতোভার। তবে রেফারির কল্যাণে হলুদ কার্ড পেয়ে বাঁচেন তিনি। নিশ্চিত লাল কার্ড ছিল এটি। ৭৩ মিনিটে অবশ্য পোর্তোর হয়ে ব্যবধান কমান জ্যাকসন মার্টিনেজ। হেক্টর হেরেইরার ক্রস থেকে দারূণ হেডে গোল করেন তিনি। নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হওয়ার দুই মিনিট আগে সফরকারীদের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন জাভি আলানসো।

এই জয়ের ফলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে উঠা বায়ার্ন মিউনিখ দলের কোচ পেপ গার্দিওলার শততম ম্যাচে তাকে দারূণ এক উপহার দিলেন লেভানদোভস্কি, মুলার ও আলানসোরা। বাভারিয়ানদের হয়ে ১০০ ম্যাচে ৭৭টি জয় পান গার্দিওলা। তবে মঙ্গলবারের অসাধারণ জয়টি হয়তো সবগুলোর ওপরে থাকবে।



মন্তব্য চালু নেই