পেট্রোল বোমায় পুড়ছে দেশ দায়ভার কার?

২০ দলের টানা অবরোধের ৩৫তম দিন। প্রতিদিন টেলিভিশন, পত্রিকা, অনলাইন খুললেই চোঁখে পড়ে বাসে পেট্রোল বোমা, ককটেল নিক্ষেপ, গাড়ী ভাংচুর, হামলা, গ্রেফতার আর ক্রসফায়ার। এ ধরনের ঘটনা ঘটছে কাদের স্বার্থে, ঘন ঘন পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন করার ফলে অভিভাবকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। দেশে সৃষ্টি হয়েছে অরাজকতা, ব্যবসায়ী, পরিবহন সেক্টর, খেটে খাওয়া মানুষ, শিক্ষা , অর্থনীতি আজ ধ্বংসের দিকে চলে যাচ্ছে। এ অদ্ভুত পরিস্থিতির কারন কি? দেশের মানুষকে জানা প্রয়োজন ও বটে। কিন্তু জানাবে কে, দেশের সুশীল সমাজ কি এ পরিস্থিতির অবসান ঘটাতে কোন উদ্বোগ গ্রহন করবে। আর করলেও কি সুফল মিলবে।

ইতিমধ্যেই রাষ্ট্রপতি ও দুই নেত্রীর কাছে জাতীয় সংলাপের চিঠি দিয়েছে নাগরিক সমাজ। এ উদ্যোগ কি সফল হবে বাংলাদেশের রাজনীতিতে, নাকি আরো সাধারণ জনগণের মৃত্যুর মিছিল বাড়বেই। তবে এ উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে রাজনৈতিক দলগুলোকেও। পেট্রোল বোমায় পুড়ছে দেশ, মরছে মানুষ। দায়ভার নেবে কে? স্বাধীন দেশে গণতন্ত্র রক্ষা করার দায়িত্ব কার সরকার না জণগনের। আজ দাবী আদায়ের নামে সারা দেশে চলছে সন্ত্রাসী কার্যক্রম। সরকারী দল মাঠে-ঘাটে প্রতিবাদ-সমাবেশ, মিছিল-মিটিং করছে। বিএনপি-জামায়াতসহ ২০ দলীয় জোটের সভা-সমাবেশ নেই। রাজনৈতিক দলের এ আচরণে সাধারন খেটে খাওয়া মানুষ পুড়ে মরছে। এ মৃত্যুর জন্য কারা দায়ী? তাদেরকে কি বিচার করা হবে না। এ ভাবে চলতে থাকলে জণগন হয়ত রাজনৈতিক দলগুলোর বিপক্ষে অবস্থান নিতে দ্বিধাবোধ করবে না। তাই সকলকে শান্তির রাজনীতি করা মানসিকতা সৃষ্টি করতে এখন সময়ের দাবী। এ ধরনের নাশকতা বন্ধে সরকার আইন প্রনয়নের উদ্যোগ নিলেও বিদ্যমান ৩ আইনের পাশাপাশি রাজনৈতিক ভাবে নাশকতা দমনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

বিএনপি-জামায়াতসহ ২০দলীয় জোটের অবরোধের ৩৫দিন পর্যন্ত সারা দেশে সহিংসতায় ৮০জনকে প্রাণ দিতে হয়েছে। ৫৮১টি গাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে আর ৮৬৯টি ভাংচুর করা হয়েছে। বিভিন্ন নাশকতার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ১৬২১৩জনকে। দিন যতই এগুগোচ্ছে বার্ণ ইউনিট গুলো অগ্নিদগ্ধ আর মৃত্যুর মিছিল বাড়ছে। কিন্তু এ সকল সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের দায়িত্ব কেউ নিতে চায় না। বিএনপিসহ ২০দল , আওয়ামীলীগসহ ১৪দল এ নাশকতার দায়ভার স্বীকার করে না। তাহলে প্রতিদিন এ বর্বরতা কারা ঘটাচ্ছে, কেনইবা ঘটছে। এদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধরা।

তবে ঘরে বসে নেই রাজনৈতিক দলের নেতারা । অনেকেরই মন্তব্য বাংলাদেশের রাজনীতি এখন টকশো আর বার্ণ ইউনিটে। বার্ণ ইউনিট গুলোতে এখন অগ্নিদগ্ধদের যেন ছোট্র সংসারে পরিনত হয়েছে। আসলে আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন না হলে পেট্রোল বোমার হাত থেকে কেউই নিরাপদ নয়। তাই সাদা পতাকা হাতে ব্যবসায়ীদের প্রতিকী প্রতিবাদ, ঘেরাওসহ নানা ধরণের কর্মসুচি দিচ্ছে পরিবহন শ্রমিক, শান্তিতে পরীক্ষার জন্য রাস্তায় দাড়াতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের, ঘরে বসে নেই শিক্ষক, অভিভাবক, সুশিল সমাজ।

আসলে এ প্রতিবাদ কাদের জন্য অবরোধকারীদের নাকি সরকারের। তারপরও একটু ছাড় দেওয়ার মানসিকতা নেই কারো। কেউ বলে চুল থাকবে না,আবার বলে একচুল নড়বো না। এ চুলাচুলির ফাঁদে পড়ে বাংলার জনগণের নাভিশ্বাসে পরিনত হয়েছে। জনগণ এ পরিস্থিতি থেকে পরিত্রান চায়। নাগরিক সমাজের পরিত্রানের উদ্যোগ কি সফল হবে। না মুখ থুবড়ে পড়বে।

লেখক : সোহেল রানা, সাংবাদিক, রাজবাড়ী,



মন্তব্য চালু নেই