পৃথিবীর বিখ্যাত অভিশপ্ত ১০ টি জিনিস (দেখুন ছবিতে)

আসলেই কি অভিশাপ বলে কিছু আছে? বিজ্ঞান অভিশাপের বিষয়টি সমর্থন করে না। কিন্তু বিজ্ঞানের বাইরেও রয়েছে কিছু বিষয়। এমন অনেক অসংজ্ঞায়িত বিষয় রয়েছে পৃথিবীতে যা বিজ্ঞান প্রমাণ করতে পারে না। এমনই অসংজ্ঞায়িত একটি বিষয় হচ্ছে অভিশাপ এবং অভিশপ্ত হওয়ার ব্যাপারটি।
অনেক সময় এমন কিছু ঘটনা ঘটে কিছু জিনিসকে ঘিরে যার কোনো ব্যাখ্যা খুঁজে পাওয়া যায় না। তখন ইতিহাস খুঁজে দেখা যায় জিনিসটি কোনো না কোনো কারণে অভিশপ্ততা লাভ করেছে। এবং এরই ফসল এতোসব অসংজ্ঞায়িত ঘটনার। আজ পর্যন্ত এমন অনেক কিছুরই নজির পাওয়া গিয়েছে পুরো পৃথিবী জুড়ে। আজকে দেখে নিন এমনই ভয়ংকর অভিশপ্ত কিছু জিনিস এবং জেনে নিন এইসকল জিনিসের সাথে জড়িত সকল অসংজ্ঞায়িত ঘটনাগুলো।

১) লিটল বাস্টার্ড
জেমস ডিন মাত্র দুটি সিনেমাতে কাজ করেই ১৯৫৫ সালে অনেক নাম কুড়ান। তিনি আর এই খ্যাতি এবং প্রতিপত্তির কারণেই অর্ডার দিয়ে একটি ১৯৫৫ পোর্সে স্পাইডার গাড়ির ফরমায়েশ করেন যার নাম দেন ‘লিটল বাস্টার্ড’। মাত্র ১ সপ্তাহের মধ্যেই ডিন মারাত্মক গাড়ি এক্সিডেন্ট করে মৃত্যু বরণ করেন। গাড়ির গতিবেগ ছিল ৮৫ মাইল প্রতিঘন্টা। এই ঘটনা দিয়ে অভিশপ্ততা শুধুমাত্র শুরু-
– একজন গাড়ি মেকানিক গাড়িটি এক্সিডেন্টের পর ঠিক করতে গিয়ে নিজের দু’পা হারান
– এই গাড়ির পার্টস খুলে লাগানো হয় দুটি স্পোর্টস গাড়িতে যার দুটিই এক্সিডেন্ট করে এবং একজন চালক মৃত্যুবরণ করেন।
– চোর এই গাড়ির পার্টস চুরি করতে গিয়ে গুরুতর জখম হন
– গাড়িটি অন্যস্থানে নিয়ে যাওয়ার জন্য যে ট্রাক ব্যবহার করা হচ্ছিল সেই ট্রাকটি এক্সিডেন্ট করে এবং ড্রাইভার মৃত্যুবরণ করেন। এরপর গাড়িটি চুরি হয়ে যায়।

২) চেয়ার অফ ডেথ
থমাস বাসবে নামক এক ব্যক্তির এই চেয়ারটি খুব বেশি প্রিয় ছিল। তিনি এই চেয়ারটিতে কাউকে বসতে দিতেন না। তার এই অবসেশন এমন মাত্রায় পৌঁছে যায় যে তিনি চেয়ারটিকে অভিশপ্ত করেন এই বলে যে, ‘মৃত্যু ছাড়া এই চেয়ার কেউ ব্যবহার করতে পারবে না’। তার মৃত্যুর পর ঘটে সব অদ্ভুত ঘটনা। ইতিহাস বলে সেই থেকে ৬৩ জন মানুষ মৃত্যুবরণ করেছেন শুধুমাত্র এই চেয়ারে বসার কারণে। এরপর এটি মিউজিয়ামের দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে যেনো কেউ বসতে না পারে।

৩) হোপ ডায়মন্ড
বেশ বড় আকারের নীল রঙের এই বিখ্যাত পাথরটি বিশ্বের দামী পাথরগুলোর মধ্যে একটি। এই পাথরটি মূলত ভারতীয় দেবতার মূর্তি থেকে চুরি করা হয়েছিল যার কারণে এটি অভিশপ্ত হয়। এরপর বহু ধনী মানুষের কাছে এই পাথরটি গিয়েছে এবং এটিই তাদের সর্বনাশের মূল কারণ হিসেবে ধরা হয়। কারণ পাথরটি পাওয়ার পর থেকে বহু ধনী মানুষ গরীব হয়েছেন, ব্যংক দেউলিয়া ঘোষণা করেন, আত্মহত্যা করেন এবং খুন হন।

৪) দ্য আংগুইসড ম্যান
এই ‘দ্য আংগুইড ম্যান’ নামক ছবিটি পেইন্টার তার নিজের রক্ত দিয়ে এঁকেছিলেন এবং এই ছবিটি আঁকা শেষ করার পর তিনি আত্মহত্যা করেন। যখন শেন রবিনশোন পৈত্রিক সুত্রে এই ছবিটি পান তারপর থেকেই তার পরিবার নানা ধরণের আধাভৌতিক কার্যকলাপের সম্মুখীন হন। তারা একটি মানব দেহের ছাড়া ঘুরে বেড়াতে দেখতে পুরো ঘরময়। এরপর ছবিটি বেজমেন্টে বন্ধ করে রাখা হয়।

৫) অ্যানাবেল দ্য ডল
কিছুদিন আগেও এই সম্পর্কিত একটি সিনেমা মুক্তি পায়। কিন্তু বলে রাখা ভালো সত্যিকারের অ্যানাবেল ডল কিন্তু আসলেই রয়েছে। এই ঘটনাটি আসলেই বিশ্বাস হতে চায় না। ১৯৭০ সালে এই অ্যানাবেল নামক পুতুলটি কেনে একটি ছোট্ট মেয়ে এবং কিছু দিনের মধ্যেই টের পাওয়া যায় পুতুলটি আপনাআপনিই ঘরে চলাফেরা করে এবং ঘরের এখানে সেখানে নোট লিখে রাখে ‘হেল্প’ লিখে। পরবর্তীতে এটিও জানা যায় এই ব্যাপারে তদন্ত করতে আসা মানুষের উপর পুতুলটি হামলাও করেছিল। প্যারানরমাল ইনভেস্টিগেটরদের মতে এই পুতুলটি ছিল নরকের পোর্টাল ছিল যা শয়তান দ্বারা চালিত হতো। পুতুলটি এখন একটি অতিপ্রাকৃত যাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে।

৬) বাসানো ভাস
১৫ শতাব্দীতে এই শক্ত রূপার তৈরি ভাসটি একজনকে তার বিয়ের উপহার হিসেবে দেয়া হয়। এই ভাসটি তখনই অভিশপ্ততা লাভ করে যখন এর মালিককে সেই বিয়ের রাতেই খুন করা হয়। এরপর থেকে এই ভাসটি যার হাতেই পৌঁছেছে, ডেকে এনেছে মৃত্যু। এরপর হারিয়ে যাওয়া এই ভাসটি ১৯৮৮ সালে উদ্ধার করা হয় একটি নোট সহ। যাতে লেখা ছিল, ‘সতর্ক থাকুন… এই ভাসটি মৃত্যু ডেকে আনে’। একটি নিলামে এই ভাসটি বিক্রয় করা হয় এবং ক্রেতা ৩ মাসের মাথায়ই মৃত্যুবরণ করেন। এরপর আরও ৩ জন এই ভাসটি কিনে নেন এবং প্রত্যেকেই মৃত্যুবরণ করেন। এরপর এই ভাসটি কোনো অজানা স্থানে পুতে ফেলা হয়।

৭) দ্য হ্যান্ড রেসিস্ট হিম
এই অদ্ভুত ধরণের পেইন্টিংস টি কেন আঁকা হয়েছিল তা আজও অনেক বড় প্রশ্ন। এই ছবিটি এঁকেছিলেন বিল স্টোনহ্যাম নামক একজন অখ্যাত আঁকিয়ে ১৯৭২ সালে। কিন্তু এই ছবিটি এবং আঁকিয়ে দুজনেই অনেক খ্যাতি অর্জন করেন যখন ছবিটি ২০০০ সালে eBay’তে বিক্রিয় করার বিজ্ঞাপন দেয়া হয়। যে জুটিটি এই ছবিটি বিক্রি করার জন্য তুলেছিলেন তাদের মতে, ছবির শিশুদুটি রাতেরবেলা নড়াচড়া করে এবং যেই এই ছবির দিকে তাকান অনেক অসুস্থতা অনুভব করেন। ইতিহাস আরও বলে, এই ছবিটির যিনি সমালোচক ছিলেন এবং যে আর্ট গ্যালারীতে এই ছবিটি দেখানোর জন্য রাখা হয়েছিল দুজনেই আর্ট-শো এর ১ বছরের মাথায় মৃত্যুবরণ করেন।

৮) ড্যায়ব্বাক বক্স
একজন ইহুদি হলোকাস্ট সারভাইভার উইজাবোর্ডের মাধ্যমে ‘ড্যায়ব্বাক’ নামক একটি পিশাচ ডেকে আনতে সক্ষম হয় এবং পিশাচটি এই কেবিনেটে বন্দী করতে পারে বলে জানা যায়। এরপর এই কেবিনেটটি দূরে কোথাও রেখে আসা হয়। পরবর্তীতে ২০০১ সালে এই কেবিনেটটি কিনে নেন একটি এস্টেট সেল থেকে কেভিন ম্যানিস নামক এক ব্যক্তি এবং কেনার পর থেকেই তার সমস্যা শুরু হয়ে যায়। ম্যানিস এবং বাড়ির অন্যান্যরা সকলেই এই কেবিনেটটি ঘরে আনার পর থেকে একজন ডাইনির স্বপ্ন দেখা শুরু করেন। ম্যনিসের মা স্ট্রোক পর্যন্ত করেন। এরপর সবশেষে যিনি এই কেবিনেটটি মালিক হন তিনি অনেক অদ্ভুত মারাত্মক কোনো রোগাক্রান্ত হয়ে পড়েন। এরপর এই কেবিনেটটি লুকিয়ে রাখা হয়েছে যাতে কেউ খুঁজে না পায়।

৯) কোহিনূর হীরা
কোহিনূর হীরার কথা শোনেননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। এটি পৃথিবীর সবচাইতে বড় হীরা ছিল যা বিভিন্ন সময়ে কেটে ছোটো করার কারণে বর্তমানে এর আকার ১০৫ ক্যারট। ইতিহাস বলে এই হীরার সাথে জড়িত নানা রাজা বাদশাহ অনেক বিপদ এবং মৃত্যুমুখ পতিত হয়ছিলেন শুধুমাত্র একটি অভিশাপের কারণে, ‘যে এই হীরের মালিক হবে সে বিশ্বজয় করতে পারবে, কিন্তু সে দুর্ভাগ্যও বয়ে আনবে। শুধুমাত্র ঈশ্বর ও নারী এই অভিশাপ ব্যতীত হীরেটি পড়তে পারবেন’। ১৮৭৭ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত এই হীরেটি ব্রিটিশদের মুকুটে শোভা পাচ্ছে।

১০) দ্য ওমেন ফ্রম ল্যাম্ব স্ট্যাচু
সাইপ্রাসে ৩৫০০ বি.সি. তে তৈরি এই স্ট্যাচুটি ১৮৭৮ সালে ইস্টার্ন ইউরোপে উদ্ধার করা হয়। এই স্ট্যাচুটি এতো বেশি মৃত্যুর সাথে জড়িত যে এই স্ট্যাচুটিকে আখ্যায়িত করা হয় ‘দ্য গডেস অফ ডেথ’ হিসেবে। এই স্ট্যাচুটির প্রথম মালিক ছিলেন লর্ড এলফোন্ট। এই স্ট্যাচুটি তিনি পাওয়ার ৬ বছরের মধ্যে তার পরিবারের ৭ সদস্য মৃত্যুবরণ করেন। এরপর আইভর ম্যানুচ্চি এই স্ট্যাচুটির মালিক হন এবং ৪ বছরের মধ্যে তিনিসহ তার পুরো পরিবার মৃত্যুবরণ করেন। এরপর এটি লর্ড থমসনের কাছে পৌছায় এবং দুর্ভাগ্য এই যে তিনি ও তার পুরো পরিবার মৃত্যুমুখে পতিত হন। এরপর এই স্ট্যাচুটি হারিয়ে যায়। তারপর আবার উদ্ধারের পর এটি আসে স্যার অ্যালান বিভারব্রোকের কাছে এবং স্ট্যাচুটি পাওয়া কিছুদিনের মধ্যেই তার স্ত্রী ও দুই কন্যা মৃত্যুবরণ করেন। এরপর তিনি ও তার দুই ছেলে এই স্ট্যাচুটি রয়েল স্কটিশ মিউজিয়ামে দান করে দেন।
সূত্রঃ chacha.com































মন্তব্য চালু নেই