পুড়লো ৩৮ লাখ টাকার ঘড়িটিও
‘আগুনে ভবন ধসে একটি দোকান পুরোই চাপা পড়ে গেছে। কসমেটিকসের দোকান ছিল সেটি। বাকি দুটি আগুনে জ্বলছে। ৩৮ লাখ টাকার ঘড়িটিও পুড়ে গেল। ভেতরে কী হচ্ছে, এখনও জানতে পারিনি। পথে বসা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। মন চাইছে আগুনে ঝাপ দিয়ে জ্বালা মেটাই।’
ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ জাফর সরদার এভাবেই বিলাপ করছিলেন। চোখের সমানে সব পুড়ে যেতে দেখে প্রায় মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ছেন এই বৃদ্ধ। মঙ্গলবার দুপুরেও যখন গুলশান ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন মার্কেট থেকে আগুনের শিখা আর ধোয়া বের হচ্ছিল, তখন জাফর বুক চাপড়িয়ে প্রলাপ বকছিলেন। অনেকে সামলে নেয়ার চেষ্টা করছেন। কেউ বাতাস করছেন, কেউ আবার পানি খাওয়াচ্ছেন। কিন্তু কেউই তাকে বুঝ দিতে পারচেন না।
কত টাকার মালামাল ছিল দোকানে- জিজ্ঞাস করতেই চোখের জলে বুক ভাসিয়ে দিলেন। চোখ মুছতে মুছতে বললেন, কসমেটিকস হলেও নামি-দামি নানান পণ্য ছিল দোকানে। গত সপ্তায় একটি ঘড়ি ইমপোর্ট করেছি ৩৮ লাখ টাকার মূল্যের। এখন বোঝেন, তিনটি দোকান মিলে কত কোটি টাকার পণ্য ছিল?
আশা ইনপেক্স নামের আরেক দোকানের মালিক আবু বকর বলেন, ‘খবর পেয়ে রাত পৌনে দুটায় এসেছি। এখনও ভিতরে প্রবেশ করতে পারিনি। ধোঁয়া ছাড়া আর কিছুই দেখতে পাইনি। কোনো মালই বের করতে পারি নাই। প্রায় কোটি টাকার মাল ছিল দোকানে।’
আবু বকরের পাশেই দাঁড়িয়ে চোখের জল মুছছিলেন আরেক দোকানি শহীদ। মার্কেটে দুটি কার্পেটের দোকান শহীদের। দুটোই পুড়ে গেছে। রাত থেকে বাইরে দাঁড়িয়ে। কয়েকবার ভেতরে প্রবেশ করার চেষ্টা করলেও ফায়ার সার্ভিস আর পুলিশের সদস্যরা ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়নি।
তিনি বলেন, ‘আমার সমস্ত বিনিয়োগ এই দোকানেই। এর বাইরে পুঁজি বলতে আর কিছুই নেই। শত চেষ্টা করেও মনকে শান্ত করতে পারছি না।’
মন্তব্য চালু নেই