পুষ্টিগুণে টইটম্বুর রসালো কমলা

শীত মৌসুমের রসালো ফল কমলা এখন আর বিদেশি ফল নয়। এটি আমাদের দেশে বেশ সহজলভ্য এবং দামও প্রায় হাতের নাগালে। আমাদের শরীরে দৈনিক যতটুকু ভিটামিন-সি প্রয়োজন তার সবটাই একটি কমলা মেটাতে পারে। রসালো কমলা খেতেও বেশ সুস্বাদু।

কমলাতে ওষুধি উপাদানের পাশাপাশি রয়েছে সৌন্দর্য বর্ধক উপাদানও। ১০০ গ্রাম কমলাতে রয়েছে ভিটামিন বি-০.৮ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি-৪৯ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম-৩৩ মিলিগ্রাম, পটাসিয়াম-৩০০ মিলিগ্রাম, ফসফরাস-২৩ মিলিগ্রাম।

কমলা বা কমলা লেবুর রস অত্যন্ত পুষ্টিকর, অধিকাংশ রোগে পথ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কমলা খেলে ক্ষুধা বাড়ে, খাওয়ার রুচি ও শরীরে শক্তি বৃদ্ধি পায়। বমি বমি ভাব দূর করতে দারুন কার্যকরী কমলা। বিশেষ করে ভ্রমণজনিত বমিভাব দূর করতে অব্যর্থ কমলা। কমলা কৃমি দূর করতে সাহায্য করে।

টক স্বাদের কমলা খেলে শরীরের চর্বি কমে। শরীরে বেশিমাত্রায় ও অনেক দিনের মেদ জমে থাকলে খুব একটা উপকার পাওয়া যায় না। তবে শরীরে সদ্য মেদ জমতে শুরু করলে, সেই মেদ ঝরিয়ে দেয় কমলা।
কমলা রস করে খাওয়ার চেয়ে কোয়া খাওয়াই শরীরের পক্ষে ভাল। কমলা টক হলে অনেকে লবণ মিশিয়ে খেয়ে থাকেন। কিন্তু এটি উচিত নয়।

কমলা ভিটামিনের খুব ভালো উৎস। এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণ কেরোটিনয়েড রয়েছে, যা দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে। এর মধ্যে ম্যাগনেশিয়াম রয়েছে যা ব্লাডপ্রেসার নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতা করে।

কমলা নিজে একটি এসিডিক খাবার। এর মধ্যে প্রচুর ক্ষারীয় মিনারেলস রয়েছে। কমলার জুস খেলে শরীরে এসিড বেইজের সামঞ্জস্য রক্ষা হয়। একে পাওয়ার ফুডও বলা হয়। এর মধ্যে সিটার্স লিমোনয়েড রয়েছে যা শরীরের জন্য উপকারী। কমলা হার্ট ব্লক ও ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, কমলা মুখ, ত্বক, ফুসফুস, পাকস্থলী ও স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে।

কমলার মধ্যে পলি ফেনলস রয়েছে, যা বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশন থেকে প্রটেকশন করে। কমলা হৃদপিণ্ডে রক্ত সঞ্চালনে সাহায্য করে। এর মধ্যে যে ফাইবার থাকে তা কোলেস্টেরল লেভেল কমিয়ে আনতে কাজ করে। কমলার মধ্যে এন্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে। এন্টি অক্সিডেন্ট বার্ধক্য রোধে সাহায্য করে।

কমলার খোসা পাউডার করে ব্যবহার করলে মেছতা দূর হয়। এটি প্রাকৃতিক টোনার হিসেবেও কাজ করে। ত্বকের সজীবতা বজায় রাখে। কমলায় থাকা বিটা ক্যারোটিন সেল ড্যামেজ প্রতিরোধে সহায়তা করে।

কমলায় আছে ক্যালসিয়াম, যা দাঁত ও হাড়ের গঠনে সাহায্য করে। কমলা কার্ডিওভাস্কুলার সিস্টেম ভালো রাখতে সহায়তা করে।



মন্তব্য চালু নেই