পুলিশ হাসপাতালের কোটি টাকার ওষুধ লোপাট

রাজশাহী পুলিশ হাসপাতালে কোটি টাকার সরবরাহ করা ওষুধ বিতরণে অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি।
তদন্ত কমিটির কাছে জমা দেয়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিতরণ তালিকায় ওষুধ না পাওয়া ব্যক্তিদের নামও পাওয়া গেছে। এমনকি একজনকে তিন প্রকার ওষুধ সরবরাহ করে তার নামে ১০ প্রকার ওষুধের নাম লিখে রেখেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ওষুধ বিতরণ ও সরবরাহে দুর্নীতির বিষয়ে পুলিশের ১০৫ সদস্যের দেয়া লিখিত জবানবন্দির তথ্য বিশ্লেষণে তদন্ত কমিটি সম্প্রতি এ অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রধান রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার সরদার তমিজ উদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সরদার তমিজ উদ্দিন আহমদ জানান, হাসপাতালের স্টোর থেকে কোটি টাকার ওষুধ উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনায় আরএমপি কমিশনার গত ২৫ জানুয়ারি ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটি হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়কের কাছে ওষুধ বিতরণের একটি তালিকা চায়।
তিনি আরও জানান, তালিকায় নাম থাকা নগর পুলিশের ৯০ জন, জেলা পুলিশের ৬০ জন ও রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্সের ৫০ সদস্যকে চিঠি দিয়ে ডাকা হয়। সম্প্রতি তাদের মধ্যে নগর পুলিশের ৫০ জন, জেলা পুলিশের ৪০ জন ও রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্সের ১৫ সদস্য হাজির হয়ে লিখিত জবানবন্দি দেন।
তদন্ত কমিটির প্রধান সরদার তমিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘জবানবন্দিতে অধিকাংশ পুলিশ সদস্যই ওষুধ না পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। অনেকে আবার চিকিৎসা নেননি বলে লিখিত দিয়েছেন। যারা চিকিৎসা নিয়েছেন তাদের ব্যবস্থাপত্রে যেসব ওষুধ লেখা হয়েছে, তার সঙ্গে স্টোরের রেজিস্ট্রারের মিল পাওয়া যায়নি। তদন্ত কমিটির ৫ সদস্যের সামনে ওই ১০৫ পুলিশ সদস্য জবানবন্দি দেন।’
পুলিশ হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত বছলের সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে মাত্র দুই লাখ টাকার ওষুধের সরবরাহ বুঝে নিয়ে ঠিকাদারকে ৭৪ লাখ ৩৯ হাজার ৯৯৮ টাকার বিল দেয় কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সেবাগ্রহণকারী পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
এছাড়া ওই সময়ে ১০০ শয্যার রাজশাহী পুলিশ হাসপাতালের জন্য ১ কোটি ১০ লাখ টাকার ওষুধ সরবরাহ করার হিসাব দেখানো হয় কাগজে-কলমে। মাত্র ১০ লাখ টাকার ওষুধ সরবরাহ নিয়ে পুরো বিল পরিশোধ করা হয় ঠিকাদারকে। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিভাগীয় পুলিশ কমিশন তদন্ত কমিটি গঠন করেন।



মন্তব্য চালু নেই