পুলিশের বিরুদ্ধে হিজড়াকে যৌন হয়রানির অভিযোগ
এবার রাজধানীর রেলওয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে এক হিজড়াকে যৌন হয়রানি ও মারধরের অভিযোগ উঠছে।
কমলাপুর রেলওয়ের পাশের ওভার ব্রিজে ঘুমাতে গেলে কয়েকজন রেলওয়ে পুলিশ সদস্য মো. হান্নান নামে ওই পুরুষ হিজড়াকে যৌন হয়রানি করে এবং মোবাইল ও টাকা চাওয়ার পর না পেয়ে মারধর করে।
ওই হিজড়া নিজে এমন অভিযোগ তুলেছেন। শুধু তাই নয়, থানায় গিয়ে অভিযোগ করতে চাইলে দূর দূর করে তাড়িয়ে দেয়া হয় তাকে। শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
তবে জিআরপি থানা পুলিশের দাবি, পুলিশ নয়, পাবলিকের হাতে মার খাইছে ওই হিজড়া। পরে পুলিশ গিয়ে বিষয়টি সমাধান করেছে।
ওই হিজড়ার আসল নাম মো. হান্নান। হিজড়া হিসেবে তার নাম হয় বিশ্ব টোকাই পাবনা হিজড়া। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার ঢাকায় কেউ নেই। থাকার বন্দোবস্ত নেই। তাই রাত ১২টার দিকে ঘুমানোর জন্য কমলাপুর ওভারব্রিজের নিচে আশ্রয় নিই। সেখানে শুয়ে থাকা অবস্থায় কয়েকজন পুলিশ সদস্য এসে তাকে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন। এরপর শরীরের নানা অঙ্গে হাত দিতে থাকেন। বাধা দিলে মারধর শুরু করে।
তিনি আরো বলেন, ‘একজন মোবাইল ও টাকা চেয়ে বসে। দিতে না চাওয়ায় জোর করে। আবারো শরীরের বুকে ও নিচে হাত দেয়ার চেষ্টা করে। পরে এক বুড়া করে বয়স্ক পুলিশ সদস্য থাবা দিয়ে মোবাইলটি পকেটে নিয়ে বলে, মারিস না, ওকে ছেড়ে দে, হয়রানি করিস না। এতে করে ওই পুলিশ সদস্যের উপরও রাগারাগি করে বাকি পুলিশ সদস্যরা।`
তারা বলতে থাকে, ‘এরা ছিনতাইকারী, এদের পাত্তা দিয়া লাভ নাই। যা আছে নগদে নিয়ে নিতে হবে।’ ওই হিজড়া আরো অভিযোগ করেন, রেলওয়ে থানায় অভিযোগ করতে গেলে উল্টো গালাগাল করে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে জিআরপি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফারুক বলেন, বিষয়টি শুনেছি। এখানে ওভারব্রিজের উপরে খারাপ কাজ হয়। তাই টহলও দেয়া হয়েছে। শুনলাম পাবলিকরা মারধর করেছে পুলিশ নয়। ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। মৌখিকভাবে অভিযোগ শুনে আমলে নেয়া হয়েছে। কারা করেছে তাদেরকে ধরতে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
তবে ওই জিআরপি থানার কনস্টেবল শরিফুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি সম্পূর্ণটাই ভুল বোঝাবুঝি। ইজতেমার কারণে চারদিকে কড়া নজরদারি চলছে তো! তাই হয়তো ওই হিজড়াকে চড় থাপ্পর দিয়ে উঠিয়ে দিয়েছে।
জিআরপি থানাটির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মজিদ জানান, আমি রাত ১০টা পর্যন্ত ছিলাম। এরপর বাসায় আসি। আপনার কাছ থেকেই প্রথম শুনলাম। বিষয়টি খতিয়ে দেখবো। সকালে গিয়ে থানায় খোঁজখবর নিবো।
বিশ্ব টোকাই পাবনা হিজড়া বলেন, আমার বাড়ি বরিশাল বিভাগের ভোলা জেলার তজিমুদ্দিন থানা এলাকায়। ছোট বেলায় হিজড়া হিসেবে বোঝার পর বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়। এরপর ঢাকায় আসি। ঢাকার সদরঘাটের হিজড়া সরদার কবিরার (আসল নাম কবির) কাছে আশ্রয় নেন। তবে নিজেকে হিজড়া না মনে করে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার অনেক চেষ্টা স্বত্ত্বেও পারেননি।
মন্তব্য চালু নেই