দেশে ফিরলেন তাবিথ

পুলিশি হেফাজতে সালাহ উদ্দিন, আজ তোলা হবে আদালতে

ভারতের মেঘালয় রাজ্যে আটক বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে শিলংয়ের নেগ্রিমস হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়ার পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। খবর বিবিসি বাংলা।

মঙ্গলবার রাতে শিলংয়ের পুলিশ সুপার (এসপি) বিবেক সিয়াম জানিয়েছেন, সালাহ উদ্দিন আহমেদকে শিলং সদর থানায় রাখা হবে। সেখানে তার আনুষ্ঠানিক জিজ্ঞাসাবাদ শুরুর পর বুধবার তাকে আদালতে তোলা হবে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সালাহ উদ্দিন আহমেদ ঢাকার উত্তরা থেকে নিখোঁজের দুই মাস পর গত ১১ মে ভারতের শিলংয়ের থানায় হাজির হলে সেখানকার পুলিশ তাকে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অভিযোগে গ্রেফতার করে। তবে তিনি গত দুই মাস কোথায় ও কীভাবে ছিলেন, তা নিয়ে কেউই কিছু বলতে পারছে না। সালাহ উদ্দিন আহমেদও নিজে মুখ খুলছেন না।

প্রথমে একদিন একটি মানসিক হাসপাতালে, পরে এক সপ্তাহ শিলংয়ের সিভিল হাসপাতালে এবং গত এক সপ্তাহ নেগ্রিমস হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন বন্দী হিসেবে ছিলেন।

দুই বার গোয়েন্দা অফিসাররা হাসপাতালে তার সঙ্গে কথা বললেও অসুস্থতার কারণে গত ১৫ দিনে তার আনুষ্ঠানিক পুলিশি জেরা হয়নি।

এর আগে মেঘালয়ের নর্থ ইস্টার্ন ইন্দিরা গান্ধী রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ এ্যান্ড মেডিকেল সায়েন্সেস (নেগ্রিমস) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র থেকে মঙ্গলবার দুপুরে সালাহ উদ্দিন আহমেদকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।

এদিকে কলকাতা প্রতিনিধি জানান, নেগ্রিমসের পরিচালক এ জি এহেনগার বলেছেন, সালাহ উদ্দিনের মেডিক্যাল রিপোর্ট দেখেই চিকিৎসকরা তাকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

এদিকে, সালাহউদ্দিনের পক্ষে আইনি ব্যবস্থা ও চিকিৎসার ব্যাপারে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নির্দেশে সাত দিনের জন্য শিলংয়ে আসা তাবিথ আউয়াল তিন দিনের মাথায় মঙ্গলবার দেশে ফিরে এসেছেন।

১১ মে শিলংয়ের গলফ লিঙ্ক এলাকা থেকে অনুপ্রবেশের দায়ে গ্রেফতার হন সালাহউদ্দিন। তাকে অপ্রকৃতিস্থ ভেবে ভর্তি করা হয় মানসিক হাসপাতালে। তার পরিচয় পেয়ে পরদিন স্থানান্তর করা হয় শিলং সিভিল হাসপাতালে। তিনি কিডনি, হার্ট, চর্ম ও মূত্রনালির সংক্রমণে ভুগছিলেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য ২০ মে সন্ধ্যায় তাকে স্থানান্তর করা হয় শিলংয়ের নেগ্রিমস্ হাসপাতালে। হাসপাতালের একটি মেডিকেল বোর্ড তার চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা তদারক করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চেয়েছিল কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অনুমিত দেয়নি। ১৬ দিন হাসপাতালে কাটানোর পর মঙ্গলবার দুপুর ২টার পর তাকে ছাড়পত্র দেন নেগ্রিমস্ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের চার বিভাগের প্রধানরা বিভিন্ন পরীক্ষার প্রতিবেদনে তার সুস্থতার প্রমাণ পাওয়ায় তাকে ছাড়পত্র দিয়ে পুলিশে হস্তান্তর করেন। শিলং সদর থানা পুলিশের একটি দল তাকে হাসপাতাল থেকে থানায় নিয়ে যায়। হাসপাতালের ডেপুটি সুপার ডা. ভাস্কর বর্গাইন জানান, দুপুরে (মঙ্গলবার) সালাহউদ্দিনের স্বাস্থ্য পরীক্ষার সব রিপোর্ট নিয়ে চার সদস্যের মেডিকেল বোর্ড মিটিংয়ে বসেন। মিটিংয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা তাকে পুরোপুরি সুস্থ ঘোষণা করে ছাড়পত্র দেওয়ার সুপারিশ করেন। শিলংয়ের পুলিশ সুপার এম. খারক্রাং জানান, থানায় রাতে তাকে কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। বুধবার তাকে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হতে পারে।

তাবিথদেশে ফিরলেন তাবিথ আউয়াল : রবিবার রাতে সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে শিলং যান বিএনপি নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে তাবিথ আউয়াল। সোমবার তিনি হাসিনা আহমেদকে সঙ্গে নিয়ে অ্যাডভোকেট এস পি মোহন্তের সঙ্গে দেখা করেন। ওইদিনই তিনি দেখা করেন প্রভাবশালী দুই বিধায়কের সঙ্গে। মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী ডা. মুকুল সাংমার অফিসে যান। কিন্তু দেখা করতে পারেননি। দু-এক দিনের মধ্যে দেখা করার কথা ছিল। সোমবার তাবিথ আউয়াল জানিয়েছিলেন তিনি মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি ও রাজনীতিকদের সঙ্গে কথা বলতে শিলংয়ে এক সপ্তাহ অবস্থান করবেন। খালেদা জিয়ার ‘বার্তা’ নিয়ে তিনি তাদের কাছে যাবেন বলেও জানিয়েছিলেন। কিন্তু শিলং যাওয়ার তিন দিনের মাথায় তিনি মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে তামাবিল হয়ে বাংলাদেশে ফিরে আসেন তিনি। তাবিথ আউয়ালের দেশে ফিরে আসার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন তামাবিল স্থলবন্দরের কর্মকর্তা মাসুদ আহমদ। প্রসঙ্গত, ১০ মার্চ সালাহউদ্দিন ঢাকার উত্তরা থেকে ‘নিখোঁজ’ হন। এরপর ১১ মে তাকে ভারতের শিলংয়ে গ্রেফতার করে পুলিশ।



মন্তব্য চালু নেই