পুরুষের চেয়ে নারীদের ক্যারিয়ার কঠিন

বেশ কয়েকজন কর্মজীবী নারী-পুরুষকে যদি প্রশ্ন করা হয় তাদের মধ্যে কতোজন নিজেদেরকে তাদের কোম্পানির ভবিষ্যত সিইও’র পদে দেখতে চায়, তাহলে দেখা যাবে ১জন বেশি হলে ২জন নারী হাত তুলছে। বাস্তবেও বিভিন্ন কোম্পানির সর্বোচ্চ পদে খুব কম সংখ্যক নারীকেই দেখা যায় যারা একটি কোম্পানি চালাতে পারে।কিন্তু একবিংশ শতাব্দীতে এসেও এতো কম সংখ্যক নারী কেনো হাত তুলবে? অনেক বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রশ্নের সব থেকে সহজ ব্যাখ্যা বা উত্তর হলো প্রথম থেকেই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে, জেনে বা অজান্তে নারীদেরকে কর্মক্ষেত্রে তাদের মনের উচ্চাকাঙ্খা প্রকাশ না করার উপদেশ দেয়া হয়। কিন্তু নতুন একটি গবেষণায় উঠে এসেছে এই উত্তর বা ব্যাখ্যাটি একটি গুজব।

নর্থ আমেরিকার বিভিন্ন কোম্পানিতে ৩০ হাজার নারী-পুরুষের ওপর লিয়ান.অর্গানাইজেশন এবং মেকেনসি এন্ড কো একটি গবেষণা পরিচালনা করে দেখেন, কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতি ও কাজ নিয়ে নারী(৭৫ শতাংশ)-পুরুষ(৭৮শতাংশ) প্রায় সমানভাবেই তাদের উচ্চাকাঙ্খা প্রকাশ করে থাকে। সন্তান থাকা না থাকার সঙ্গে তাদের কেরিয়ার প্রভাবিত হয়না। বরং নারীরা নিজেরাই লক্ষ্য অর্জনের পথকে অনেক কঠিন ও কষ্টের মনে করে।

গবেষণাটির ফলাফল ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের ভবিষ্যৎবাণীর মতোই। ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামে বলা হয়েছে ২০৯৫ সালের আগে বিশ্বে জেন্ডার সমতা অর্জন হবেনা।

গবেষণা ফলাফলে কেরিয়ার নিয়ে নারীদের যে ধরণের মনোভাব ফুটে উঠেছে:
কোনো বিষয়ে নেতৃত্ব দেয়ার ক্ষেত্রে নারীরা তাদের মধ্যে একধরণের মানসিক চাপ অনূভব করে। বিভিন্ন মিটিং, সেমিনারে পুরুষদের মতো নারীরাও তাদের আইডিয়া প্রকাশ করে থাকে। কিন্তু এই প্রকাশটা হয় একটু ভিন্নভাবে। তারা কোনো কিছু বলার সময় ‘কী বলছে’ ও ‘কীভাবে বলছে’ এই দুই এর মধ্যে সবসময় ভারসাম্য বজায় রাখায় চেষ্টায় থাকে। যেনো কেউ রাগী হিসেবে আখ্যায়িত না করে তাই সে বিনয়ী মনোভাব প্রকাশের চেষ্টা করে। আবার পুরুষরা কোনো কিছু বলার সময় তাদের কথার মধ্যে অন্যরা যতো না কথা বলে, নারীদের সময় বলে বহুগুন। অর্থ্যাৎ তাদের কথা বলার সময় কারণে অকারণে থামিয়ে দেয়া হয়। এতে করে নারীরা মনোবল হারিয়ে ফেলে।

গবেষণায় আরো দেখা যায়, পুরুষরা কিছু বলার পর নারীদের তুলনায় দ্বিগুণ ইতিবাচক ফিডব্যাক পায়। সেখানে নারীদের প্রায়ই তাদের কথা বলার ধরন পরিবর্তন করার পরামর্শ দেয়া হয়।

গবেষণায় দেখা গেছে, নারীরা কোনো কাজ করলে তাকে সেটির যথার্থতা আবার প্রমাণ করতে বলা হয় যা পুরুষদের খুব একটা বলা হয়না।

গবেষণায় প্রফেসর হারমিনাল ইবারা দেখেন, কর্মক্ষেত্রে নারীদের খুব বেশি মনিটর করা হয়।
ওযার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের মতে, অনেক দেশে এখনো নারীরা অফিসের কাজ করার পাশাপাশি সন্তান লালন-পালনসহ অনেক সংসারের অনেক কাজ করে।

কর্মক্ষেত্রে আমরা নারী-পুরুষের অসমতার প্রভাবটি বুঝতে পারি। কিন্তু নারীরদের এই মানসিক চাপ কমিয়ে কেরিয়ারে সফলতা অর্জনে সহয়তা করতে ছোট পরিসর থেকেই কাজ শুরু করতে হবে। এটাই হচ্ছে সেই জায়গা যেখান থেকে নারীদের মানসিক চাপ কমতে থাকলে তারা সামনে এগিয়ে যেতে পারবে।



মন্তব্য চালু নেই