যুক্তরাজ্যে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে তারেক রহমান :

পিতার মতো হাসিনারও প্রধানমন্ত্রিত্বের খায়েশ মিটিয়ে দিবে জনগণ

একাত্তরে জনগণ মরণপণ লড়াইয়ে শেখ মুজিবের ঐক্যবদ্ধ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার খায়েশ মিটিয়ে দিয়েছিল জনগণ। পিতার মতো হাসিনারও অবৈধভাবে প্রধানমন্ত্রিত্বের খায়েশ মিটিয়ে দিবে জনগণ। যুক্তরাজ্যে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান এমন মন্তব্য করেন।

মঙ্গলবার ৪৪তম বিজয় দিবস উপলক্ষে যুক্তরাজ্য বিএনপির আটদিনের কর্মসূচির শেষ দিনের অনুষ্ঠান ‘কনসার্ট ফর ডেমোক্রেসি ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক বিজয় উৎসবের অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, ‘৭১ সালে সমাজের সকল শ্রেণীর মানুষের মরণপণ লড়াই যেভাবে শেখ মুজিবের ঐক্যবদ্ধ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার খায়েশ মিটিয়ে দিয়েছিল, বলবীর, বল উন্নত মমশীর বলে ডাক দিয়ে সবাই ঐক্যবদ্ধ হলে গণবিরোধী শেখ হাসিনারও তার পিতার মতো অবৈধভাবে প্রধানমন্ত্রী থাকার সাধ মিটে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্র এখন বন্দী।’

এই বন্দী গণতন্ত্রের মুক্তির লড়াইয়ে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সমাজের সকল শ্রেণী-পেশার বিশেষ করে শিক্ষাবিদ গবেষক কবি সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিল্পী ও সাস্কৃতিক কর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তারেক রহমান।

শিক্ষাবিদ কবি সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিল্পী, গবেষকদের সমাজের বাতিঘর উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘ক্ষমতাসীন অপশক্তির নানা অপবাদ কিংবা হামলা মামলার ভয়ে আপনারা চুপ করে বসে থাকলে র‌্যাবের বন্দুক থেকে হয়তো সাময়িক রক্ষা পাওয়া যাবে কিন্তু নিজের বিবেকের কাছে রেহাই পাবেন না।’

তারেক রহমান আরো বলেন, ‘১৯৭১ সালের এইদিনে (১৬ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ হানাদারমুক্ত হয়েছিল। সম্পূর্ণভাবে শত্রুমুক্ত হয়েছিল। এখন ৭১ এর সেই হানাদারদের সহযোগীদের কবলে বাংলাদেশ।’

তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালে নিউইয়র্কের ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে। আর ছোট্ট পরিসরে হলেও এই আয়োজন (গতকালের অনুষ্ঠান) গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য। গণতন্ত্র মুক্তির এই আন্দোলনেও জনগণের বিজয় হবেই ইনশাআল্লাহ।’

লন্ডনের রয়্যাল রিজেন্সি হলে বাংলদেশ জাতীয়তাবাদী দল জাসাস, যুক্তরাজ্য শাখা আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি এম এ সালাম। সভা পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন।

বিজয়োৎসবের দু’পর্বের অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে আলোচনা সভায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী, জাসাস কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন, যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি শায়েস্তা চৌধুরী কুদ্দুস এবং যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেট দলের নিউজার্সি সিটি কমিটির চেয়ারম্যান সোলায়মান সেরনিয়াবাত প্রমুখ।

সভায় রুহুল কবীর রিজভী বলেন, ‘বাংলাদেশি সংস্কৃতি এখন আগ্রাসনের শিকার। খুব সুকৌশলে সাংস্কৃতিক আগ্রাসন চলছে।’

যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাট দলের নিউজার্সি সিটি কমিটির চেয়ার সোলায়মান সেরনিয়াবাত বলেন, ‘২০১১ সালের ২৩ মে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সি সিনেটে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত একটি রেজুলেশনে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের মহানায়ক হিসেবে উল্লেখ করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘২০১১ সালের ২৩ মে সিনেটের স্পিকার স্টিফেন সুইনি তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে সিনেটে আমন্ত্রণ জানান। সিনেটে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শাসনামলে বাংলাদেশে নারী শিক্ষা এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার নেয়া পদক্ষেপকে যুগান্তকারী উল্লেখ করে একটি রেজ্যুলেশন পাশ হয়। ওইসময় সরকার এবং বিরোধী দলের প্রতিটি সিনেটরের ভোটে সর্বসম্মতিক্রমে এই রেজ্যুলেশনটি পাশ হয়।’

সোলায়মান সেরনিয়াবাত বলেন, ‘নিউজার্সি সিনেটের ১৬৭ বছরের ইতিহাসে দক্ষিণ এশিয়ার কোনো নেতাকে এ ধরনের বিরল সম্মাননা প্রদান এটাই ছিল প্রথম। এরপর সোলায়মান সেরনিয়াবাত রেজ্যুলেশনের একটি কপি তারেক রহমানের হাতে তুলে দেন। ক্রেস্টের আরো একটি কপি বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমদের হাতে তুলে দেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সাবেক সহকারী প্রেস সচিব আশিক ইসলাম।

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে কনসার্টে অংশ নেন বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় শিল্পীরা। গান পরিবেশন করেন জনপ্রিয় শিল্পী রিজিয়া পারভীন, মনির খান এবং যুক্তরাজ্যের বাঙালি শিল্পীরা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন তাসবীর চৌধুরী শিমুল এবং ফয়সল চেীধুরী।



মন্তব্য চালু নেই