পাহাড়ে পাখির দোতলা বাড়ি

পাহাড়ে গাছে গাছে পাখিদের দোতলা বাড়ি তৈরি করে দিয়েছে বিজিবি। আর এ বাড়ির নাম রাখা হয় টুনির বাড়ি। তাই পাখিরাও মহাখুশি। টুনির বাড়িতে শুধুমাত্র টুনটুনি পাখি নয়, আনাগোনা রয়েছে দেশীয় শালিক, চড়ুই, ময়না, বুলবুলি, টিয়াসহ বিভিন্ন নামের পাখির। ঝাঁকে ঝাঁকে দল বেধে আসে সবাই। সন্ধ্যা নামলে টুনির বাড়িতে ভিড় জমায় পাখির দল। তাদের কলতান আর কিচিরমিচির শব্দে অদ্ভুত ধ্বনিতে পরিণত হয়। পাখির কলতানে মনোমুগ্ধকর প্রকৃতি একাকার হয়ে মিশে যায়।

জানা গেছে, সম্প্রতি রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার ওয়াগ্গা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) জোনের উদ্যোগে পর্যটন স্পর্ট জুম রেস্তোরা পাশে গাছগুলোতে টুনির বাড়ি তৈরি করা হয়। আধুনিক ডিজাইনের রঙিন দোতলা একটি বাড়িতে সাধরাণত চার জোড়া পাখি থাকতে পারে। আবার অনেক পাখি এ বাড়িতে বাচ্ছাও ফুটিয়েছে। নিরাপদ আবাসস্থান হিসেবে অনেক পাখি আশ্রয় নিয়েছে টুনি বাড়িতে।

তথ্য সূত্রে জানা গেছে, এককালের বিশাল বনজ সম্পদে ভরপুর ছিল রাঙামাটি। এখন প্রায় পাহাড় ন্যাড়া। সবুজঘেরা পাহাড়ি বন-বনানী বর্তমানে বৃক্ষশূন্য হয়েছে। ফলে রাঙামাটির ঐতিহ্যমণ্ডিত বিশাল ও সমৃদ্ধ বনজ সম্পদের ভাণ্ডার এখন জীর্ণদশার দ্বারপ্রান্তে। বিস্তৃৃত বনাঞ্চলে একসময় বন্য প্রাণী ও পাখির দ্বিতীয় বৃহত্তর আধার হিসেবে বিবেচনা করা হত রাঙামাটিকে। ছোট বড় বিভিন্ন প্রজাতির পাখির সমৃদ্ধ ছিল এ পাহাড়ি অঞ্চলে। এ পাহাড়ি অঞ্চলে প্রায় ১০০ প্রজাতির পাখির অবস্থান ছিল। কিন্তু কালের পরিবর্তনসহ অপরিকল্পিত জুম চাষ ও নির্বিচরে বৃক্ষ নিধনের ফলে বন্যপাখিদের নিরাপদ আবাসস্থল ক্রমশ ধ্বংস হয়ে যায়। ফলে এ পাহাড়ি অঞ্চলে বন্যপাখির সংখ্য দ্রুত হ্রাস পায়। তাই পাখি সংরক্ষণ ও নিরাপদ অভয়াশ্রম গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাপ্তাইয়ের ওয়াগ্গা বিজিবি জোন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করে।

কাপ্তাই জোনের ১৯ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল সোহেল উদ্দিন পাঠান জানান, পাহাড়ের জীব বৈচিত্র্য ও পাখি সংরক্ষেণ জন্য এ টুনির বাড়ি তৈরি করা। এতে ঝড় বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা পাবে পাখির ডিম ও বাচ্চা। সাধারণত দেখা যায় অনেক পাখি বিশেষ করে ময়না, চড়াই ও বুলবুলি মানুষের ঘরের কুটুরিতে বাসা তৈরি করে। আবার বিভিন্ন কারণে পাখিগুলো আশ্রয়হীন হয়ে যায়। সে চিন্তা মাথায় রেখে এ উদ্যোগ। গাছে গাছে পাখিদের জন্য কয়েকটি বাড়ি তৈরি করে দিলে যেমন পাখিরা নিরাপদ থাকবে তেমনি, পর্যটকদেরও আকর্ষণ করবে। ভবিষ্যতে আরও পাখিদের জন্য একাধিক বাড়ি নির্মেণের পরিকল্পনা রয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই