পাবনায় ছাত্রলীগ সভাপতির স্ত্রীকে গুলি, অবস্থা আশঙ্কাজনক

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জুবায়ের বিশ্বাসের স্ত্রী মাহফুজা বিশ্বাস ওরফে ফারজানা আক্তার (২৩) গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক।

বিষয়টি ঈশ্বরদীসহ গোটা জেলায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করলেও ভয়ে অনেকে এ বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হয়নি। একাধিক সূত্র ও পুলিশ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তবে কেন বা কী কারণে ফারজানা গুলিবিদ্ধ হয়েছে- তা জানাতে পারেনি পুলিশ। আর যে পিস্তল দিয়ে গুলি করা হয়েছে তা বৈধ না অবৈধ তাও জানাতে পারেনি পুলিশ।

ফারজানা পাবনা সদর উপজেলার দাপুনিয়া ইউনিয়নের শ্রীকৃষ্টপুর গ্রামের রাফি মণ্ডলের মেয়ে। ছাত্রলীগ নেতা জুবায়েরের সঙ্গে চার বছর আগে ফারজানার বিয়ে হয়। তাঁদের দাম্পত্য জীবনে দুই বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, ঈশ্বরদী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জুবায়ের বিশ্বাসের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী মাহফুজার বেশ কিছুদিন ধরে মনোমালিন্য চলছিল। মাসখানেক আগে জুবায়েরের সঙ্গে তাঁর শাশুড়ির প্রকাশ্যে বাগবিতণ্ডা হয়।

আরেকটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, জুবায়ের দ্বিতীয় বিয়ে করার কারণে তাঁর স্ত্রী ফারজানার সঙ্গে বিরোধ শুরু হয়। এ নিয়ে কয়েকদিন ধরে পরিবারে অশান্তি চলছিল। গত শনিবার দুপুরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে ফারজানা গুলিবিদ্ধ হন। এ সময় ফারজানা চিৎকার দিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে পরিবারের সদ্যস্যরা গোপনে তাঁকে দ্রুত অ্যাম্বুলেন্সে করে প্রথমে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে ফারজানার অবস্থার অবনতি হলে রোববার ভোরে হেলিকপ্টারে করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন।

তবে ফারজানার বাবা রাফি মণ্ডল জানান, তাঁর মেয়েকে ঢাকার প্রথম সারির একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ফারজানার অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁর পেটে গুলি লেগেছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। বাম পায়ের এক্সটারনাল কড কাজ না করায় পা অচল হয়ে হয়ে গেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

এ দিকে পারিবারিকভাবে প্রচার করা হয়েছে, বউ-শাশুড়ির দ্বন্দ্বে শাশুড়ি ফারজানাকে গুলি করেন।

আবার অন্যদিকে জুবায়েরের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন প্রচার করছে, কয়েকজন সন্ত্রাসী জুবায়েরকে হত্যার উদেশ্যে গুলি করলে গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে তাঁর স্ত্রী ফারজানার পেটে লাগে।

স্থানীয় অভিজ্ঞ মহল মনে করে, যদি কোনো সন্ত্রাসী তাঁর স্ত্রীকে গুলি করে থাকে তাহলে জুবায়ের বা তাঁর পরিবার অবশ্যই পুলিশকে অবহিত করত।

এদিকে ফারজানার চাচা রাজ্জাক মণ্ডল জানান, পারিবারিক কলহের কারণে তাঁর ভাতিজি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তবে জামাই জুবায়ের গুলি করেছেন নাকি ফারজানা নিজে নিজেকে গুলি করেছেন তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি তিনি।

এ ব্যাপারে ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিমান কুমার দাশ জুবায়ের বিশ্বাসের স্ত্রী গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘আমরা লোকমুখে গুলিবিদ্ধ হওয়ার কথা শুনেছি। তবে এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ না করায় বিস্তারিত বলা সম্ভব না। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

গুলির ব্যাপারে জোবায়ের বিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।



মন্তব্য চালু নেই