পাবনার ঈশ্বরদীতে শিক্ষার্থীদের কূল খাওয়ালেন কৃষক ময়েজ
ঈশ্বরদী উপজেলার ছলিমপুর ইউনিয়নের বড়ইচারা গ্রামের বাংলাদেশ কৃষক উন্নয়ন সমবায় সমিতির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদক প্রাপ্ত কৃষক ছিদ্দিকুর রহমান কূল ময়েজ বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের কূল খাওয়ালেন। গতকাল বৃহ¯প্রতিবার সকালে শেখ মেহেরুল্লা উচ্চবিদ্যালয়ের ৩৫০জন শিক্ষার্থী নিজ হাতে গাছ থেকে কূল ভেঙে খান এবং তারা কূল বাড়িতে নিয়ে যান।
এবার ঈশ্বরদীর কৃষকদের খামারের গাছে গাছে প্রচুর পরিমাণে কূল এলেও বাজার মূল্য কম এবং গ্রাহক না থাকায় গাছের কূল গাছেই শুকিয়ে ঝরে পড়ছে। কৃষকেরা জানান তারা বিভিন্ন ব্যাংক , এনজিও, স্থানীয় সমিতি এবং ব্যক্তিদের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে জমি লিজ নিয়ে কূল উৎপাদন করেছেন। সারা বছর অপেক্ষায় থাকেন কূল বিক্রি করার জন্য। এই সময় কূল বিক্রি করে বাড়তি আয়ের আশায় থাকেন গোটা বছর ধরে। অথচ এই বার বিএনপি নেতৃত্বাধিন ২০ দলীয় ডাকা অবরোধ ও হরতালের কারণে তাদের সেই আশা পূরণ হবেনা।
বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদক প্রাপ্ত কৃষক ছিদ্দিকুর রহমান কূল ময়েজ বলেন, ঈশ্বরদীর কৃষকদের মতো দেশের বিভিন্ন স্থানের কৃষকেরা রোদ, বৃষ্টি ও শীতকে উপেক্ষা করে কূল লাগিয়ে থাকেন। কিন্তু গত দুই বছর যাবৎ বিরোধী দলের হরতাল অবরোধের কারণে তাদের উৎপাদিত কূল বিক্রি করতে পারছেন না। বেশিরভাগ কৃষকের কূল মাঠেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, এক লিটার পানির দাম ২০ টাকা আর এক কেজি কূলের বর্তমান বাজার মূল্য আট টাকা। শ্রমিক দিয়ে কূল উত্তোলন করলে কৃষকের চালান না উঠে ঘারতি হয়। তাই আমার খামারের মতো অনেক কৃষক গাছ থেকে কূল উত্তোলন করছেন না। কূল উত্তোলন না করায় গাছে শুকিয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। দেশের পুষ্টির কথা চিন্তা করে আমি ঈশ্বরদীর বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থী ও এলাকার মানুষের জন্য আমার খামারে বিনামূল্যে কূল খাইয়ে দিচ্ছি এবং তারা বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন আমাদের ফসলের কোনো বীমা নেই, ক্ষতিপূরণ নেই, আমাদের নেই কোনো পেনশন। আমাদের মতো কৃষকদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। এভাবে দেশ চলতে থাকলে আমাদের মতো দেশের সকল কৃষক একসময় কূল উৎপাদন বন্ধ করে দিবে। তখন বাইরের দেশ থেকে আমদানি করে ১০০ টাকা কেজি দরে কূল কিনে খেতে হবে।
ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ খুরশিদ আলম জানান, এবার ময়েজ উদ্দিন কৃষি খামারের মতো ঈশ্বরদীর প্রতিটি খামারের গাছে গাছে প্রচুর পরিমাণে কূল এসেছে। বাজারে কূলের সঠিক মূল্য না থাকা এবং বিক্রি করতে না পারায় কূল গাছে শুকিয়ে ঝরে পড়ছে। কূল রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রফতানি করা হয়। টানা অবরোধ ও হরতালে কূল বিক্রি করতে না পারায় কৃষকের উৎপাদিত কষ্টের ফসল মাঠেই পঁচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
মন্তব্য চালু নেই