পানি জন্যই একাধিক বিয়ে
পণের (যৌতুক) জন্য বিয়ে করার ঘটনার সঙ্গে কম-বেশি সবাই পরিচিত। ভারতীয় উপমহাদেশে বিষয়টা অনেকটা প্রথা হিসেবেই দাঁড়িয়ে গেছে (পণপ্রথা)। কিন্তুর পানির জন্য বিয়ে! বিষয়টি হয়তো নতুন ঠেকছে অনেকের কাছেই।
এ ঘটনাও ঘটছে এই উপমহাদেশেই। পশ্চিম ভারতের দেঙ্গামাল গ্রামের বেশিরভাগ পুরুষই একাধিক বিয়ে করে থাকেন। এ বিয়ের পেছনে রয়েছে পানি। অবাক হলেও সত্য, স্রেফ পানি টানানোর জন্যই একাধিক বিয়ে করে থাকেন দেঙ্গামালের পুরুষরা!
মুম্বাই থেকে ১৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গ্রামটির পানি চাহিদার সমাধান ‘পানিবৌ’ (ওয়াটার ওয়াইফ)! প্রত্যন্ত গ্রামটিতে নেই কোনো পানির কল। কঠিন শিলাস্তরের পর্বতবেষ্টিত গ্রামটি থেকে পায়ে হাঁটার দূরত্বে রয়েছে দুইটি কূপ। প্রায় ১০০ পরিবারের সদস্যদের খাওয়া ও রান্নার পানির সরবরাহে কূপ দু’টিই একমাত্র ভরসা।
কূপ থেকে পানি আনতে গিয়ে নিয়মিত লাইন ধরতে হয় বাসিন্দাদের। কখনো এক কলসি পানির জন্য বসে থাকতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। পুরুষরা ক্ষেত ও খামারে শ্রমিক হিসেবে কাজ করায় নারীদেরই পানি টানার দায়িত্ব পালন করতে হয়।
সন্তান লালন-পালন, অসুস্থতাসহ সাংসারিক নানা জটিলতায় অনেক সময়ই ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে চাহিদা মোতাবেক পানি নিয়ে আসা তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না। এ কারণেই একাধিক বিয়ে করে থাকেন অনেকে। তেমনি একজন শখরাম ভগত (৬৬)।
ভগত জানান, বর্তমানে তার শাখরী, তুকি ও ভাগী নামে তিন স্ত্রী রয়েছে। এর মধ্যে প্রথমজনকে স্বাভাবিকভাবে বিয়ে করলেও শুধু পানি টানার জন্যই পরের দু’জনকে বিয়ে করতে বাধ্য হন।
তিনি বলেন, আমার প্রথম স্ত্রী সন্তান লালন-পালনে ব্যস্ত হয়ে পড়লে পানির চাহিদা মেটাতে দ্বিতীয় বিয়ে করতে হয়। এক পর্যায়ে দ্বিতীয় স্ত্রী অসুস্থ হয়ে গেলে তৃতীয় বিয়ে করতে হয়।
তিনি জানান, এক স্ত্রী ঘরকান্নার কাজ দেখাশোনা করেন ও অপর দু’জন পানি আনতে যান। এভাবেই সংসার চলছে।
নামদেও নামে আরেক গ্রামবাসী জানান, পানি টানার জন্য দুই বিয়ে করেছেন তিনি।
তবে দরিদ্র গ্রামাবাসীদের পক্ষে একাধিক বিয়ে করে বড় সংসার চালানো প্রায়ই কঠিন হয়ে পড়ে। তারপরও পানির অভাবে এ ছাড়া তাদের উপায় থাকে না বলে জানান গ্রামটির পুরুষরা। তথ্যসূত্র : রয়টার্স।
মন্তব্য চালু নেই