পাথর ভেবে ১০ বছর খাটের নিচে রাখা ছিল মুক্তা!

সৌভাগ্যের প্রতীক হিসাবে প্রায় ১০ বছর বাড়ির খাটের নিচে সেটিকে রেখে দিয়েছিলেন তিনি। তা সেই ‘সৌভাগ্য’ যে তাকে একই সঙ্গে খ্যাতির শিখরে এবং বিড়ম্বনায় ফেলবে, তা বোধহয় স্বপ্নেও ভাবেননি। অবস্থা এমনই যে, তার পরিচয় পর্যন্ত সামনে আনতে ভয় পাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন। ফিলিপাইনের অখ্যাত পালওয়ান দ্বীপে দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে মাছ ধরেন ওই ব্যক্তি। বছর দশেক আগে সমুদ্রে মাছ ধরার সময় প্রচণ্ড ঝড়ের মুখোমুখি হন তিনি। বাধ্য হয়ে সেখানেই নোঙর ফেলতে হয়। বেশ কিছু ক্ষণ পর ঝড় থামলে নোঙর তুলতে গিয়েই সমস্যার শুরু। সমুদ্রগর্ভে কীসের সঙ্গে যেন আটকে গিয়েছে নোঙর। অনেক টানাটানি করেও তুলতে না পেরে সমুদ্রের নীচে নামতে বাধ্য হন তিনি। দেখেন, অদ্ভুত দর্শন একটা সাদা পাথরের মতো জিনিসে আটকে রয়েছে নোঙর। বেশ ভারি সেই ‘পাথর’টিকে নিয়েই বাড়ি ফেরেন ওই মৎসজীবী। রেখে দেন বাড়ির খাটের নীচে। ঘটনাচক্রে এর পর থেকেই একটু একটু করে তার আর্থিক অবস্থা ভাল হতে শুরু করে। সাদা ‘পাথর’টিকে সৌভাগ্যের প্রতীক হিসাবে নিজের বাড়িতেই রেখে দেন তিনি। কয়েক দিন আগে হঠাতই আগুন লাগে মৎস্যজীবীদের বস্তিতে। পুড়ে যাওয়া ঘর থেকে যে সামান্য জিনিষপত্র উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল ওই মৎস্যজীবীর পক্ষে, তার মধ্যে ছিল সেই সাদা ভারি পাথরটিও। ঘর পুড়ে গিয়েছে। নিজেরই থাকার ঠিক নেই, এত বড় পাথর কী করবেন বুঝতে না পেরে স্থানীয় পর্যটন কর্মকর্তা আইলিন আমুরাওয়ের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। তার সেই ‘পাথর’টিকে রেখে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। পাথর দেখে তো সেই কর্মকর্তা অবাক। ২.২ ফুট লম্বা, এক ফুটেরও বেশি চওড়া ৩৪ কিলোগ্রামের সাদা পাথরটি যে একটি বিশালাকায় মুক্তা, তা বুঝতে ভুল হয়নি আইলিনের। মুক্তাটির দাম অন্তত ১০ কোটি ডলার! “এত বড় মুক্তা যে হতে পারে, তার ধারণাই ছিল না আমাদের। ৩৪ কিলোর মুক্তা!”— ঘোর যেন কাটতেই চাইছিল না আইলিনের। তিনি আরও জানিয়েছেন, “নিরাপত্তার জন্য ওই মৎস্যজীবীর নাম আমরা প্রকাশ করছি না। আমরা রত্নবিশারদদের সার্টিফিকেটের জন্য অপেক্ষা করছি। তবে আমরা নিশ্চিত এর থেকে বড় মুক্তা কখনও আবিষ্কৃত হয়নি। সার্টিফিকেট এলে এটি সাধারণের দেখার ব্যবস্থা করা হবে।” এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মুক্তাটি রাখা আছে নিউ ইয়র্কের একটি বেসরকারি প্রদর্শন কেন্দ্রে। সেই ‘পার্ল অব লাও জি’র ওজন ৬.৪ কিলোগ্রাম। নতুন খোঁজ পাওয়া এই মুক্তার কাছে যা সামান্য। ১৯৩৪ সালে এই মুক্তাটিরও খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল ফিলিপাইনেই। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা



মন্তব্য চালু নেই