পাঠকের বাজে মন্তব্যের দায় অনলাইন সংবাদমাধ্যমের নয়: ইসিএইচআর

ইউরোপের মানবাধিকার আদালত (ইসিএইচআর) বলেছে, পাঠকের ‘অপমানজনক ও রূঢ়’ মন্তব্যের দায় অনলাইন সংবাদমাধ্যমের নয়।

যুক্তরাজ্যের গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাঠকের মত প্রকাশের পাতায় এক ব্যক্তির ‘বাজে’ মন্তব্যের কারণে সম্প্রতি হাঙ্গেরির একটি ইন্টারনেট নিউজ পোর্টালের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার ইসিএইচআর- এর এই রায় আসে।

‘ইনডেক্স ডট এইচইউ’ নামের ওই পোর্টালে একটি আবাসন নির্মাতা কোম্পানির বিরুদ্ধে অনেক পাঠকের ক্ষুব্ধ মন্তব্য প্রকাশিত হলে বিষয়টি আদালতে গড়ায়।

এক পাঠকের মন্তব্যের সূত্র ধরে ‘ইনডেক্স ডট এইচইউ’ এবং হাঙ্গেরির ইন্টারনেটভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি সংগঠনের বিরুদ্ধে স্থানীয় আদালতে মামলা ঠুকে দেয় ওই রিয়েল এস্টেট কোম্পানি।

ইনডেক্স বলছে, পাঠকের ‘আক্রমণাত্মক’ মন্তব্যগুলোর বিষয়ে অবহিত হওয়ার পরপরই সেগুলো ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে ফেলেছে তারা। কিন্তু পাঠকরা যে প্রতিক্রিয়া দেবে, তার সবকিছুর দায় সংবাদপত্র নিতে পারে না।

এ পোর্টালের আইনজীবীরা আদালতে বলেন, ইন্টারনেটের এই যুগে পাঠকের মন্তব্যের জন্য সংবাদ মাধ্যমকে দায়ী করা হলে তা মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক বাতাবরণের ওপর মারাত্মক বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে।

ইনডেক্সের আইনজীবীদের এই যুক্তির সঙ্গে একমত পোষণ করে ইসিএইচআর রায়ে বলেছে, ‘হয়রানি’ থেকে কাউকে রক্ষা করা এবং বাক স্বাধীনতা নিশ্চিতের মধ্যে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ হয়েছে হাঙ্গেরির আদালত।

রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেছেন, “পাঠকের ওই মন্তব্য আক্রমণাত্মক ও কূরুচিপূর্ণ হলেও, তার মধ্যে বেআইনি কিছু নেই। সহিংসতায় উসকানি বা বিদ্বেষ ছড়ানোর মতো কোনো উপাদান সেখানে নেই।”

গার্ডিয়ান লিখেছে, বিভিন্ন উপায়ে গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা কারণে প্রায়ই মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সমালোচনার মুখে পড়তে হয় দেশটির সরকারকে। প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানও বিভিন্নভাবে গণমাধ্যমের ‘কণ্ঠরোধের’ চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

২০১১ সালে অরবান নতুন গণমাধ্যম আইন প্রণয়ন এবং একটি শক্তিশালী কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। ২০১৪ সালে গণমাধ্যমের ওপর নতুন করে কর আরোপ করা হয়, যা বিরোধী মতের গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণে আনা এবং বিদেশি সম্প্রচার মাধ্যমগুলোকে তাড়ানোর চেষ্টা বলে সে সময় সমালোনা হয়।



মন্তব্য চালু নেই