পাকিস্তান-ইংল্যান্ড ১ম টেস্ট: ৫২৩ রানে ইনিংস ঘোষণা পাকিস্তানের

সকালের সূর্য সব সময় সারা দিনের সঠিক বার্তা যে দেয় না সেটা আরেকবার প্রমান করলো পাকিস্তান। অবশ্য আনপ্রেডিক্টেবল খ্যাত পাকিস্তানের জন্য কোন ভবিষ্যৎবানী যে খাটে না! ইনিংসের তৃতীয় ওভারে, দলীয় মাত্র ৫ রানের মাথায় ওপেনার শান মাসুদকে হারানোর পর রীতিমত শঙ্কাই তৈরী হয়েছিল, পাকিস্তানের অবস্থা না জানি অস্ট্রেলিয়ার মত হয়।

অথচ, সেই পাকিস্তানই ৮ উইকেট হারিয়ে ইনিংস ঘোষণা করলো ৫২৩ রানে গিয়ে। আর ৫ বছর পর টেস্ট দলে ফেরা শোয়েব মালিক আউট হলেন ২৪৫ রানে। ৪২০ বলের এই ইনিংসটি সাজানো ছিল ২৪টি বাউন্ডারি আর ৪টি ছক্কায়।

অ্যাশেজে যেভাবে ইংল্যান্ডের কাছে নাকানি-চুবানি খেয়েছে অসিরা, সেই ইংল্যান্ড, সেই অ্যান্ডারসন-ব্রডরাই তো ধারালো ফর্ম নিয়ে আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে অবতীর্ণ হয়েছে পাকিস্তানের সামনে। অ্যান্ডারসনের বলে বোল্ড হয়েছিলেন শান মাসুদ। বার্তাটা যেন ইংল্যান্ডের পক্ষেই জোরালোভাবে দিচ্ছিল।

কিন্তু, বাতাস নিজের দিকে টেনে নেওয়ার কেমন যেন আশ্চর্যজনক একটা ক্ষমতা অর্জণ করে ফেলেছে শোয়েব মালিক। সম্প্রতি তার ব্যাটিংয়ের ধরনটাই এমন দেখা যাচ্ছে। দুর্যোগের সময় অভিজ্ঞ নাবিকের মত হাল ধরতে পারা। যে কারণে, ১৬তম সদস্য হিসেবে ৫ বছর পর টেস্ট দলে ঠাঁই করে নিয়েছেন অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার।

তো ইউনিস খানকে একটু নীচে নামিয়ে, শোয়েব মালিককে নামানো হলো তিন নম্বরে। ৫ বছরের ক্ষোভ যেন জমা করে রেখেছিলেন তিনি। যে কারণে প্রথম সুযোগই সেই ক্ষোভ উগরে দিলেন তিনি। যার ভিকটিম হতে হলো ইংল্যান্ডকে। এর আগে টেস্টে যার সর্বোচ্চ ইনিংস ছিল ১৪৮* রান। সেই শোয়েবই কি না ক্যারিয়ারে প্রথমবারেরমত ডাবল সেঞ্চুরি তুলে নিলেন! এমনকি ইংলিশ বোলারদের ব্যর্থতাকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়ে তিনি সংগ্রহ করলেন ২৪৫ রান। শেষ পর্যন্ত বেন স্টোকসের বলে ইয়ান বেলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি।

প্রথম দিনই সেঞ্চুরির দেখা পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি। দিন শেষে অপরাজিত ছিলেন ১২৪ রানে। তার সঙ্গে ১১ রানে ক্রিজে ছিলেন আসাদ শফিক। দ্বিতীয় দিন সকালের শিশিরভেজা উইকেটে সাফল্যের প্রত্যাশা করেছিল ইংলিশরা। কিন্তু, সাফল্য তো দুরে থাক, উল্টো মাঠের চতুর্দিকে বল কুড়াতে কুড়াতেই হাঁফিয়ে উঠতে হলো অ্যালিস্টার কুকদের।

একদিনে আসাদ শফিক যেন সেঞ্চুরি তুলে নিলেন, অপরদিকে শোয়েব মালিকও পৌঁছে গেলেন ডাবল সেঞ্চুরির মাইলফলকে। দু’জন মিলে গড়েছেন ২৪৮ রানের বিশাল এক জুটি। ক্যারিয়ারের অষ্টম টেস্ট সেঞ্চুরি করার পর অবশ্য বেশিক্ষণ টেকেননি আসাদ শফিক। ১০৭ রান করেই আউট হয়ে যান তিনি। দলীয় রান ততক্ষণে ৫০০ ছুঁই ছুঁই (৪৯৯)।

আসাদ শফিক আউট হয়ে যাওয়ার পর অবশ্য পাকিস্তানের রান আর খুব বেশি এগোয়নি। মাত্র ২ রান করে আউট হন সরফরাজ আহমেদ। জুলফিকার বাবরও যখন আউট হয়ে গেলেন তখন মিসবাহ ড্রেসিং রুমে ডেকে নেন তার ব্যাটসম্যানদের। অথ্যাৎ, ৫২৩ রানে ইনিংষ ঘোষণা হয়ে গেলো পাকিস্তানের।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে এ রিপোর্ট লেখার সময় ইংল্যান্ডের সংগ্রহ কোন উইকেট না হারিয়ে ১৫ ওভারে ৪০ রান। উইকেটে রয়েছেন অ্যালিস্টার কুক ৩০ এবং মঈন আলি ৮ রানে।



মন্তব্য চালু নেই