‘পাকিস্তান অব্যাহতভাবে যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষাবলম্বন করেছে’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, একাত্তরে গণহত্যা, গণধর্ষণ, লুটতরাজ অগ্নিসংযোগের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য আইনের আওতায় যাদের বিচার করা হচ্ছে, পাকিস্তান অব্যাহতভাবে তাদের পক্ষাবলম্বন করেছে।
রোববার সকালে জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য বেগম পিনু খানের টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী একথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘৪৫ বছর আগে সংঘটিত ভয়ঙ্কর মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের মধ্য দিয়ে বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসার জন্য বা বাংলাদেশের জনগণের যে প্রচেষ্টা, পাকিস্তান তার বিরুদ্ধেও অবস্থান নিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পর বিভিন্ন সময় পাকিস্তানের সংসদে নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিবৃতি দিয়েছে যা একটি স্বাধীন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নির্লজ্জ হস্তক্ষেপ। পাকিস্তানের এ কর্মকাণ্ড ও মন্তব্য নি:সন্দেহে সম্পূর্ণ অসঙ্গত, পক্ষপাতদুষ্ট এবং পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য ও শিষ্টাচারবহির্ভূত। যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে পাকিস্তান সরকারের বিবৃতি প্রকৃতপক্ষে একাত্তরে গণহত্যায় সম্পৃক্ততা ও এর দায়-দায়িত্ব স্বীকার করে নেওয়ার সামিল।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে স্বাক্ষরিত ত্রিদেশীয় চুক্তিতে বাংলাদেশে গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করা যাবেনা এমন কিছু উল্লেখ নেই। বরং পাকিস্তানই ১৯৭১ সালে গণহত্যার জন্য চিহ্নিত ও আটককৃত নিজ দেশের নাগরিকদের বিচারের আওতায় আনার বাধ্যবাধকতা অনুসরণে ব্যর্থ হয়েছে। পাকিস্তানের এরূপ ধৃষ্টতাপূর্ণ মন্তব্যের প্রেক্ষিতে, পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতকে প্রতিবারই তলব করে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে এবং এ বিষয়ে কঠোর প্রতিবাদলিপি দেয়া হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, অতি সম্প্রতি একজন যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ার পর তুরস্কের সরকার এ বিষয়ে বিবৃতি প্রদান করে। ঐ সময় ঢাকায় নিযুক্ত তাদের রাষ্ট্রদূতকে পরামর্শের জন্য আংকারায় তলব করে। বিষয়টি কূটনৈতিকভাবে মোকাবেলা করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে এ সকল অপতৎরতা ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সরকারের সজাগ দৃষ্টি রযেছে। এসকল অপতৎপরতা ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় সরকার জোর কূটনৈতিক কার্যক্রম ও তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে।
মন্তব্য চালু নেই