পাউরুটি খাইয়ে অজ্ঞান করে ট্রাক থেকে নিক্ষেপ

রাজশাহীতে পাউরুটি খাইয়ে সাত রাজমিস্ত্রিকে অজ্ঞান করে টাকা ও মুঠোফোন লুট করে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা পরে মিস্ত্রিদের ট্রাক থেকে ফেলে দেয়।

আজ মঙ্গলবার ভোররাতে নগরের তালাইমারী এলাকা থেকে ওই সাতজনকে উদ্ধার করা হয়। তাঁদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মিস্ত্রিদের বাড়ি রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রংপুরে। ঈদ উপলক্ষে তাঁরা গাজীপুর থেকে বাড়ি ফিরছিলেন।

অসুস্থ ব্যক্তিদের হাসপাতালের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁরা হলেন, রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিয়ান গ্রামের সোহেল রানা (৩০), চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার তিন ভাই আরিফ হোসেন (২৫), সোহেল রানা (১৮), মোহাম্মদ রাসেল (১৬) ও তাঁদের ফুপাতো ভাই সোহেল রানা (১৮) এবং রংপুরের মিলন (২০) ও মনিরুজ্জামান (৪২)। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তাঁদের মধ্যে আরিফ, মিলন, মনিরুজ্জামান ও রাজশাহীর সোহেল রানার জ্ঞান ফেরেনি। অন্যদের জ্ঞান ফিরেছে।

আরিফের বাবা ফিটু মাঝির ভাষ্য, ভোর পাঁচটার দিকে তাঁর ভাগনে সোহেলের জ্ঞান ফেরে। হাসপাতালের এক লোকের মুঠোফোন থেকে তিনি বাড়িতে খবর দেন। তাঁর ছেলেরা দুই মাস আগে বাড়ি থেকে কাজে গিয়েছিলেন। কষ্টের টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। আশা ছিল সবাই মিলে ঈদে আনন্দ করবেন।হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে অসুস্থ মিস্ত্রিদের।

ভাগনে সোহেলের বরাত দিয়ে ফিটু মাঝি আরও বলেন, গতকাল সোমবার বেলা একটার দিকে গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে ওই সাতজন মিস্ত্রি একটি ট্রাকে ওঠেন। ট্রাকে চালক ছাড়াও আরও দুজন লোক ছিলেন। সিরাজগঞ্জ পৌঁছানোর পর তাঁরা মিস্ত্রিদের পাউরুটি খেতে দেন। খাওয়ায় পর তাঁরা অচেতন হয়ে পড়েন। রংপুরের দুজনের সিরাজগঞ্জে নামার কথা ছিল। তাঁরা সেখানে আর নামতে পারেননি। টাকা-পয়সা ও মুঠোফোন হাতিয়ে নিয়ে আজ ভোররাতে রাজশাহী নগরের তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকায় তাঁদের ট্রাক থেকে ফেলে দেওয়া হয়। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।

হরিয়ান গ্রামের সোহেল রানার স্ত্রী ববিতা বেগমের ভাষ্য, স্বামীর জ্ঞান ফেরেনি। অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করার সময় তাঁদের পূর্বপরিচিত একজন সোহেলকে চিনতে পারেন। তিনিই ফোনে খবর দেন। রোজার ঈদের ১৫ দিন পর তাঁর স্বামী বাড়ি থেকে কাজে গেছেন। উপার্জনের সব টাকা ও মুঠোফোন অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা নিয়ে গেছেন।

হাসপাতালের পরিচালক এএফএম রফিকুল ইসলাম বলেন, রোগীদের অবস্থা কিছুটা ভালো।

গত ৬ সেপ্টেম্বর রাজশাহী সিটি বাইপাস গরুর হাটে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে ৩০ গরু ব্যবসায়ী অজ্ঞান হয়ে পড়েন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জজ মিঞা (৩৪) নামের একজন ব্যবসায়ী মারা যান। তাঁর বাড়ি নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার শিবপুর গ্রামে। এরপর থেকে রাজশাহী রেলস্টেশনে অজ্ঞান পার্টি থেকে যাত্রীদের সচেতন করার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে সচেতনতামূলক ব্যানার টাঙানো হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই