পরিবহন ধর্মঘট অব্যাহত, অচল উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলা
মহাসড়কে নসিমন, করিমন, ভটভটি চলাচল ও পুলিশের চাঁদাবাজি বন্ধসহ ৬ দফা দাবিতে দ্বিতীয়দিনের মতো সোমবারও পরিবহণ ধর্মঘটে অচল হয়ে পড়েছে উত্তরাঞ্চলের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬ জেলা।
ধর্মঘটের কারণে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের সড়ক পথে যোগাযোগ ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়েছে। সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন দূরপাল্লার যাত্রীরা। জেলাগুলোতে কোথাও দূরপাল্লার বাস, ট্রাক, ট্যাঙ্ক লরি ও কভার্ড ভ্যান চলাচল করছে না।
‘বাস-ট্রাক মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ’ এর ডাকে রোববার সকাল ৬টা থেকে এ ধর্মঘট শুরু হয়।
পাবনা জেলা মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি ওমর আলী জানান, সোমবার দুপুরে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার তার কার্যালয়ে আট জেলার বাস মালিক ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। বৈঠকে কি সিদ্ধান্ত হয় তার ওপর নির্ভর করবে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হবে কি না।
রাজশাহী মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সড়ক বিষয়ক সম্পাদক আলীমুদ্দিন আলী জানান, প্রথমে তারা আট জেলায় ধর্মঘটের ডাক দেন। পরে তাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে রংপুর বিভাগের আট জেলাতেও একই কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত হয়।
তিনি আরও জানান, নাটোর সমিতি বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় ঢাকা থেকে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের উদ্দেশে ছেড়ে আসা অর্ধশতাধিক নৈশকোচ নাটোরের ওপারে আটকা পড়েছে। তবে সেগুলো বিকল্প পথে আসার চেষ্টা করছে।
অপরদিকে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বারবার নিষেধ করা সত্ত্বেও আকিব এন্টারপ্রাইজের কোচগুলো সমিতির নিয়ম ভঙ্গ করে চলাচল করছিল। এ কারণেই শুক্রবার দুপুর ২টা থেকে আকিব এন্টারপ্রাইজের কোচগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। এরই প্রতিক্রিয়ায় রাত ১০টার দিকে নাটোর মালিক সমিতি নাটোরের ওপর দিয়ে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের সব প্রকার বাস যোগাযোগ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়।
সিরাজগঞ্জ জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আনছার আলী জানান, মহাসড়কে নসিমন, করিমন, ভটভটি, পাওয়ার ট্রিলার, ট্রাক্টরসহ অবৈধ যান চলাচল বন্ধসহ ৬ দফার দাবিতে ডাকা ধর্মঘট সিরাজগঞ্জে স্বতঃস্ফূর্তভাবে পালিত হচ্ছে। সকাল ৬টা থেকে সিরাজগঞ্জ থেকে দূরপাল্লার কোনো গাড়ি ছেড়ে যায়নি।
রাজশাহী জেলা বাস-ট্রাক মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ৬ দফা দাবিগুলো হচ্ছে- নসিমন, করিমন, ভূটভটি, পাওয়ারটিলার, ট্রাক্টরসহ অবৈধ যান চলাচল বন্ধ, সিএনজি, মাহেন্দ্র, থ্রিহুইলার, ইমা রুট পারমিট বহির্ভুত এলাকায় চলাচল বন্ধ ও রুট পারমিট প্রদান বন্ধ, লিজকৃত বিআরটিসি ও দ্বিতল বাস উপজেলা ভিত্তিক চলাচল বন্ধ, স্কেলের নামে অবৈধ চাঁদাবাজি বন্ধ, বিআরটিএর ট্যাক্স টোকেন ও ফিটনেস এর বর্ধিত ফি প্রত্যাহার এবং সব প্রকার পুলিশী হয়রানি বন্ধ করা।
গত ২১ মে রাজশাহী জেলা বাস-ট্রাক মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আয়োজনে মহানগরীতে অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশ থেকে রাজশাহী সড়ক পরিবহণ গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মনজুর রহমান পিটার এ ধর্মঘটের ডাক দেন। তিনি বলেন, তাদের ৬ দফা দাবি না মানা পর্যন্ত এ ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে।
মন্তব্য চালু নেই