পরিপূর্ণ আয়ুর্বেদিক জীবনযাপন করা হয় যে গ্রামে

এ উপমহাদেশের বহু মানুষই চিকিৎসার জন্য আয়ুর্বেদিক উপায় অবলম্বন করেন। এছাড়া আয়ুর্বেদিক পদ্ধতিতে শুধু চিকিৎসা নয়, জীবনধারণের বহু বিষয়ই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এ লেখায় রয়েছে আয়ুর্বেদের তেমন কিছু অজানা অধ্যায়। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।

আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একজন ব্যক্তিকে বিশ্লেষণ করে তার রোগ নির্ণয়ের জন্য প্রকৃতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রকৃতি হলো একজন ব্যক্তির শারীরিক ও মানসিক সংবিধান। এতে ত্রিদোশা কাজ করে। এগুলো হলো- ভাটা, পিত্তা ও কাফা। আয়ুর্বেদিক নানা বিষয় বর্তমান নাগরিক জীবনযাপনের মাধ্যমে পাওয়া যায় না। এ চাহিদা মেটাতে তৈরি হয়েছে আয়ুর্বেদিক ভিলেজ।

‘কৈরালি হেলথ ভিলেজ’ নামে এ আয়ুর্বেদিক ভিলেজ মূলত একটি রিসোর্ট। এ আয়ুর্বেদিক ভিলেজে রয়েছে ৫০ একর জায়গা। সবুজ গাছপালা আচ্ছাদিত এ স্থানটি ভারতের কেরালা রাজ্যে অবস্থিত। এখানে হাসপাতাল থাকলেও তা ঠিক হাসপাতাল হিসেবে উপস্থান করতে চান না কর্তৃপক্ষ। তারা একে বরং আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার স্বাস্থ্যকর স্থান হিসেবেই বর্ণনা করেন। অন্য যে কোনো বিলাসবহুল রিসোর্টের সঙ্গে এ স্থানটির পার্থক্য রয়েছে। এখানে যে কেউ আসতে পারে আয়ুর্বেদিক মতে ভালো থাকার জন্য। এখানে সারা বিশ্ব থেকে মানুষ আসছেন স্থূলতা, মানসিক চাপ, আথ্রাইটিস ও ত্বক সমস্যার সমাধানে। এ আয়ুর্বেদিক ভিলেজে রয়েছে পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও বিভিন্ন ধরনের আধুনিক আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা পদ্ধতি।

আয়ুর্বেদিক মতে তারা রোগীর নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও সে অনুযায়ী ব্যবস্থাপত্র দেন। এছাড়া রয়েছে আয়ুর্বেদিক নানা ওষুধ ও খাবারের সহজলভ্যতা। আয়ুর্বেদিক ভিলেজে রয়েছে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর খাবার ও নিরামিষ খাবারের বন্দোবস্ত। এসব খাবার একজন রোগীর স্বাস্থ্যের দিকে লক্ষ্য রেখেই তৈরি করা হয। স্থানীয় তাজা সবজি ও ফলমূল থেকে তৈরি হয় এখানকার প্রতি বেলার খাবার। প্রতিদিন ভোরে সূর্য ওঠার আগে এখানে তৈরি হতে হয়। এরপর ইয়োগা অনুশীলন করতে করতে সূর্যোদয়কে স্বাগত জানাতে হয়। এরপর আয়ুর্বেদিক নাশতা ও চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আয়ুর্বেদিক মেসেজের ব্যবস্থা করা হয়। সন্ধ্যায় থাকে মেডিটেশন ক্লাশ ও দিনশেষে আয়ুর্বেদিক নৈশভোজ।

শহুরে যে নাগরিকেরা নানা কারণে আয়ুর্বেদিক জীবনযাপন করতে পারেন না তারা এমন গ্রামে গিয়ে ২৪ ঘণ্টাই প্রকৃতির মাঝে থেকে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা নিতে পারেন। এখানে রয়েছে সু্ইমিং পুল, লাইব্রেরি, ব্যাডমিন্টন কোর্ট, ইনডোর খেলাধুলার ব্যবস্থা, আয়ুর্বেদিক রান্না শেখার ক্লাস, অ্যাস্ট্রোলজার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা। এখানে চিকিৎসকদের নানা আয়ুর্বেদিক বিষয়ে জ্ঞানদান করার জন্যও ব্যবস্থা রয়েছে। থাকার ব্যবস্থা হিসেবে এ আয়ুর্বেদিক ভিলেজে রয়েছে বহু কটেজ। এ কটেজগুলোর প্রত্যেকটির সঙ্গেই রয়েছে একটি ঝর্ণা। চোখ বন্ধ করলেও এ ঝর্ণা বয়ে যাওয়ার শব্দ পাওয়া যায়। এছাড়া বহু পাখিও ডাকাডাকি করে আয়ুর্বেদিক ভিলেজটিতে।



মন্তব্য চালু নেই