পদ্মা সেতু ইস্যুতে ভুলের মধ্যে ছিল বিশ্ব ব্যাংক
পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতি ষড়যন্ত্র খারিজ হলো এবং খুব শক্তভাবে প্রমাণ হলো দুর্নীতি কিছুই ছিল না। ইমেল ও রেকর্ডের মতো তথ্য মিথ্যা প্রমাণিত হলো। পদ্মা সেতু দুর্নীতি ইসুতে বিশ্ব ব্যাংক কয়েটা বছর বাংলাদেশের ওপর একটা অভিযোগ ঝুলিয়ে রাখল। দুর্নীতির অভিযোগ শুধু সরকারের বিরুদ্ধে নয়, দেশে প্রতিনিধি পাঠিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ তুলল।
পদ্মা সেতু নিয়ে আসলে কি চেয়েছিল বিশ্ব ব্যাংক? বিশ্ব ব্যাংকের এই চাওয়াটা কি দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে দেশি-বিদেশি যারা এ ঘটনায় জড়িত তাদের খুঁজে বের করতে হবে। পেছেনের দিকে যেতে হবে। দেখতে হবে কারা এর সাথে জড়িত ছিল।
পদ্মা সেতু প্রকল্পে কানাডীয় কোম্পানি এসএনসি- লাভালিনের শীর্ষস্থানীয় তিন কর্মকর্তার ঘুষ লেনদেনের ষড়যন্ত্রের প্রমাণ পায়নি দেশটির আদালত। আন্টারিও সুপিরিয়র কোর্টের বিচারক দুর্নীতি মামলাটি খারিজ করে তিন কর্মকর্তাকে খালাস দিয়েছেন। রমেশ শাহা, জুলফিকার আলী ভূঁইয়া ও কেভিন ওয়ালেস এই অভিযোগ থেকে খালাস পেয়েছেন। পদ্মা সেতু প্রকল্প পাওয়ার জন্য ঘুষ দেয়ার অভিযোগ ছিল এই তিনজনের বিরুদ্ধে।
এদিকে বিশ্ব ব্যাংক কতিপয় অভিযোগ শুনে যেভাবে বাংলাদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল, এর জন্য তাদের ধৈর্য ধরা উচিৎ ছিলো এমনটা মনে করছেন নাগরিক সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা।
এ প্রসঙ্গে মানবকণ্ঠের সম্পাদক আনিস আলমগীর বলেন, ‘বিশ্ব ব্যাংক তো একটি ব্যাংক। সেখানে যখন যেটা নির্দেশনা আসে, তখন তেমন চলে। তখন যিনি এর প্রধান ছিলেন তার সাথে ডক্টর ইউনূসের একটা সখ্যতা ছিলো। ডক্টর ইউনূস এ কাজটা করেছে। শেখ হাসিনা সরকারের পতন করার উদ্দেশ্যে তিনি এ কাজ করছেন। এই দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত হয়েছে। এটি যদি সত্য প্রমাণিত হতো, তাহলে এই সরকার কে দুর্নীতিবাজ সরকার হিসেবে আখ্যা দেওয়া হতো। যা চেয়েছিলেন ডক্টর ইউনূস।’
তিনি বলেন, গ্রামীন ব্যাংক থেকে ইউনূসকে সরিয়ে দেওয়ার কারণে আন্তর্জাতিক লবিং করেছিলেন। হিলারির সাথে ডক্টর ইউনূসের ইউক্লিপ্সের যে প্রমাণ আছে তাতে করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ।
পদ্মা সেতু প্রকল্পে ২০১২ সালে ১২০ কোটি ডলারের ঋণ চুক্তি বাতিল করে বিশ্ব ব্যাংক। যার কারণ হিসেবে বলা হয়, সেতুর কাজ পেতে বাংলাদেশি ও কানাডিয়ান ফার্মের কর্মকর্তা ও কিছু ব্যক্তি ঘুষ লেনদেনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়, যার প্রমাণ বিশ্ব ব্যাংকের কাছে রয়েছে।
এ অভিযোগ আসার পর বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন তৎকালীন সেতু সচিব মোশারফ হোসেন ভূইয়া, সুপারিন্টেন্ডেন্ট প্রকৌশলী কাজী মোহাম্মদ ফেরদৌস ও সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আহমেদ জাবেরের বিরুদ্ধে বনানী থানায় মামলা দায়ের হয়।
এসএনসি লাভালিনের স্থানীয় প্রতিনিধি মোহাম্মদ মোস্তফা ও সাবেক কর্মকর্তা মোহান্মদ ইসমাইল, রামেশ শাহা ও কেভিন ওয়ালেসের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।
বিশ্ব ব্যাংকের পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয়,পদ্মা সেতু পরামর্শকের কাজ পেতে এসএনসি লাভালিনের কর্মকর্তারা সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনসহ বেশি কিছু বাংলাদেশি কর্মকর্তা ঘুষ দেওয়ার ষড়যন্ত্র করেন।
এদিকে বাংলাদেশের দুদক ২০১৪ সালে আদালতে পেশ করে কোনো দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
পদ্মা সেতু ষড়যন্ত্র প্রসঙ্গে একাত্তর টেলিভিশনের সিও মোজাম্মল বাবু বলেন, কোনোভাবেই আমরা বিশ্ব ব্যাংককে শত্রু বলতে পারি না।যারা অপ্রচারের কাজটি করতে চেয়েছিল তারাই এর সাথে জড়িত। অভিযোগ যেহেতু উঠেছে এটা নিয়ে তদন্ত করা বিচার করা খুব বেশি অন্যায়ের কিছু না। তবে তাদের আরো ধৈর্য ধরা উচিৎ ছিল। এটা খারিজ হয়ে গেছে বলে তাদের সাথে আমাদের কোনো সম্পর্ক থাকবে না এটা ভাবার কোনো কারণ নেই। তারা বাংলাদেশকে শত্রু ভাবাপন্ন হয়ে এটা করেছে বিষয়টা তা না। তাদের সিদ্ধান্তটা খুব অপরিপক্ব ছিল।
মন্তব্য চালু নেই