পদ্মা-মেঘনার ৫ অভয়াশ্রমে কাল থেকে মাছ ধরা বন্ধ
জাটকা নিধন প্রতিরোধে পদ্মা-মেঘনার ৫টি অভয়াশ্রমে কাল ১ মার্চ থেকে আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ২ মাস ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এই দু’মাস চাঁদপুরসহ দেশের ৫টি অভয়াশ্রম এলাকায় মাছ আহরণ, পরিবহন ও বিক্রয় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
এই কর্মসূচি সফল করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা টাস্কফোর্স ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। প্রতিদিনই জাটকা নিধন না করার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে সভা সমাবেশ হচ্ছে।
এদিকে, জেলেদের মানবিক সহায়তার চাল বরাদ্দ মিলেনি এখনো। ফলে লাখ লাখ জেলে পরিবার ক্ষুধার্ত থাকলেও কাল থেকে নদীতে জাল ফেলবেন না।
শুধু মাত্র চাঁদপুরেই ৪১ হাজার ১শ ৮৯ জন তালিকাভূক্ত জেলে রয়েছেন। এদের জন্য অভয়াশ্রম চলাকালে খাদ্য সহায়তা হিসেবে ৬ হাজার ৫শ ৯০ দশমিক ২৪ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। বরাদ্দ মিললে এই চাল প্রতি জেলেকে ৪০ কেজি করে ৪ মাস দেয়া হবে।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি জেলেদের খাদ্য সহায়তার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পত্র দেয়া হয়েছে। পত্রে চাঁদপুর সদরে নিবন্ধিত ১৬ হাজার ৮শ ৩৬ জন জেলের জন্য ২ হাজার ৬শ ৯৩ দশমিক ৭৬ মেট্রিক টন চাল, হাইমচরের নিবন্ধিত ১৩ হাজার ৩৩ জন জেলের জন্য ২ হাজার ৮৫ দশমিক ২৮ মেট্রিক টন চাল, মতলব উত্তরে নিবন্ধিত ৭ হাজার ৭শ ২৬ জন জেলের জন্য ১ হাজার ২শ ৩৬ দশমিক ১৬ মেট্রিক টন ও মতলব দক্ষিণের নিবন্ধিত ৩ হাজার ৫শ ৯৪ জন জেলের জন্য ৫শ ৭৫ দশমিক ৪ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। তবে ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই বরাদ্দের পত্র পাওয়া যায়নি।
জেলেদের অভিযোগ, গত বছরও তারা ৪০ কেজির পরিবর্তে প্রতি মাসে ২৫ থেকে ৩০কেজি করে চাল পেয়েছেন।
অপরদিকে, সর্বক্ষেত্রে দাবি উঠেছে, নদীে থেকে যাতে জাটকা নিধন না হয় সে ব্যবস্থায় কঠোর হবে প্রশাসন। যদি জাটকা নিধনের পর আটক করা হয় তাহলে কোনো লাভ হবে না।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সফিকুর রহমান জানান, চাঁদপুরের মতলব উত্তর ষাটনল থেকে লক্ষ্মীপুর জেলার চরআলেকজেন্ডার পর্যন্ত মেঘনার ১শ কিলোমিটার, ভোলার চর ইলিশা থেকে চর পিয়াল মেঘনা নদীর শাহবাজপুর চ্যানেলের ৯০ কিলোমিটার ভোলার ভেন্দুরিয়া থেকে পটুয়াখালির চর রুস্তম পর্যন্ত ১শ কিলোমিটার, পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার আন্দার মানিক নদীর ৪০ কিলোমিটার শরীয়তপুর নূরিয়া হতে ভেদরগঞ্জ পর্যন্ত নিম্ন পদ্মার ২০ কিলোমিটার এলাকা সরকার অভয়াশ্রম ঘোষণা করেছে। এ ৫টি অভয়াশ্রমে ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা বন্ধ থাকবে। এ আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি আরো জানান, অভয়াশ্রম চলাকালে জেলেদের খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে। ইতোমধ্যে বৃহত্তর কুমিল্লা জেলার মৎস্য উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৯শ জেলেকে এবং ইকোফিস প্রকল্পের আওতায় ৩০৮ জন জেলেকে বিকল্প কর্মসংস্থানে সেলাই মেশিন, ছাগলসহ বিভিন্ন উপকরণ দেয়া হয়েছে।
মন্তব্য চালু নেই