পদ্মার চরে ভাষা আন্দোলন নিয়ে নান্দনিক শিল্পকর্ম
প্রমত্তা পদ্মার সে আগের রূপ নেই, নেই পানির স্রোত। শান্ত পদ্মায় জেগে ওঠেছে অসংখ্য বালুর চর। আর চরের এই প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করতে পদ্মার পাড়ে হাজির হন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। তবে মহান একুশে ফেব্রুয়ারিতে পদ্মার পাড়ে ঘুরতে আসলে চোখে পড়বে নদীর বালুচরে ভাষা আন্দোলনের নান্দনিক শিল্পকলা।
শনিবার বিকেলে বালুর চরে শহীদ মিনারসহ বাংলা বর্ণমালার ভাস্কর্য তৈরি করছে তরুণ-তরুণীরা। এরা সবাই রাজশাহী আর্ট ক্লাবের সদস্য।
এদের একজন হলেন রাজশাহী চারুকলা মহাবিদ্যালয়ের গ্রাফিক্স অ্যান্ড ডিজাইনের শিক্ষার্থী ফারজানা জ্যোতি। তিনি বাংলা স্বরবর্ণের ‘অ’ প্রথম অক্ষরের আকৃতি বালু দিয়ে ফুটিয়ে তুলছেন।
কাজের ফাঁকে ফারজানা জ্যোতি বলেন, পদ্মার চরে সারাদিনে অসংখ্য দর্শনার্থী ঘুরতে আসেন। তারা প্রাকৃতিক সোন্দর্য উপভোগ করে ফিরে যান। কিন্তু আমরা যে ভাষায় কথা বলি। সেই ভাষাটা সহজে অর্জন হয়নি। অনেক আন্দোলন ও ত্যাগের মাধ্যমে আমরা মায়ের ভাষা বাংলা পেয়েছি। তাই পদ্মার চরে ভাষার মাসে এই কাজ করতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করছি।
৮০ ফুট জায়গা নিয়ে পদ্মার চরে এই ভাস্কর্য তৈরি করা হয়েছে। তবে ভাস্কর্যের পাশেই পদ্মা নদীর পানি। তারপরই রাজশাহী মহানগরীর পদ্মা গার্ডেন সংলগ্ন এলাকায় নদীর পাড়। আর এই পাড়েই দর্শনার্থীদের জন্য সামিয়ানা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ছোট ঘর। এই ঘরে থাকবে ভাষা আন্দোলনের ছবি ও কিছু বইপত্র। এ ব্যাপারে আয়োজকদের মধ্যে মোহমেনা আফরোজা বলেন, অনেকেই ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস জানে না। নতুন প্রজন্মের অনেতেরই এর ইতিহাস সম্পর্কে ভালো ধারণা নেই। তাদের জন্য এই আয়োজন করা হয়েছে।
রাজশাহী আর্ট ক্লাবের সভাপতি হাসান ইমাম রাসেল বলেন, রাজশাহীর পিছিয়ে পড়া চারুকলা চর্চাকে এগিয়ে নিতে আমরা ২০১৫ সালে রাজশাহী আর্ট ক্লাব গঠন করি। সঙ্গে সঙ্গে মহান একুশে ফেব্রুয়ারিকে সামনে নিয়ে বালু ভাস্কর্যের আয়োজন করেছি আমরা। আশা করছি রাজশাহীর সকল মানুষের এ ব্যতিক্রমধর্মী চর্চাকে পছন্দ হবে এবং তারা উৎসাহিত হবে।
তিনি আরও বলেন, পরবর্তীতে যেনো আমরা এ চরটাকে নিয়ে ব্যপকভাবে পরিকল্পনা করতে পারি এবং এ কাজটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে পারি সেজন্য চেষ্টা করব, যাতে করে বিদেশি পর্যটকরা এ পদ্মার চর দেখতে ছুটে আসেন।
মন্তব্য চালু নেই