নোয়াখালীর কিছু খবর
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে সন্ত্রাসী হামলা, ব্যবসায়ীদের ধর্মঘট
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার প্রবাসী পল্লীখ্যাত আমিশাপাড়া বাজারে ব্যবসায়ীদের উপর সন্ত্রাসী হামলা, নগদ টাকা, মালামাল লুট সহ বিভিন্নভাবে হয়রানির প্রতিবাদে ধর্মঘট ও মানববন্ধন করেছে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর ৬টায় থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দোকানটাপ বন্ধ রেখে এ কর্মসূচী পালন করে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানায়, বুধবার দিনগত রাত ৩টার দিকে আমিশাপাড়া বাজারে ব্যবসায়ী মন্টু মিয়া ভ্যানগাড়িতে করে কাঁচা মালা নিয়ে বাজারের দিকে আসছিলেন। এসময় একদল সন্ত্রাসী তার উপর হামলা চালিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে জখম করে। পরে সন্ত্রাসীরা মন্টুর সাথে থাকা নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বাজারের সবগুলো দোকানপাট বন্ধ করে দিয়ে ধর্মঘট পালন করে। পরে সন্ত্রাসীদের বিচারের দাবীতে মানববন্ধন করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দিলে দুপুর ১২টার দিকে তারা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে। আমিশাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও বাজার কমিটির সভাপতি আবুল খায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, স্থানীয় কয়েকজন সন্ত্রাসী বিভিন্ন সময় বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বিভিন্নভাবে চাঁদা আদায় করে আসছে। তাদের দাবীকৃত চাঁদা না পেলে ব্যবসায়ীদের মারধর সহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করে সন্ত্রাসীরা। সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফ উল ইসলাম জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ব্যবসায়ীরা তাদের ধর্মঘট তুলে নিয়ে দোকানপাট পুনরায় চালু করেছেন। ব্যবসায়ীদের অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
হিন্দু বাড়ীতে সন্ত্রাসী হামলা-ভাংচুর, আহত ১০
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার চরকিং ইউনিয়নে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হিন্দু বাড়িতে সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে বসতঘর ও আসবাবপত্রে ব্যাপক ভাংচুর করে। এসময় সন্ত্রাসীরা স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা, জমির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও বিভিন্ন মালামাল সহ প্রায় ১২ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। গতকাল উপজেলার চরকিং ইউনিয়নের পশ্চিম গামছাখালী গ্রামে এ হামলায় নারী-পুরুষ সহ ১০ আহত হয়েছে। আহতরা হলেন, রাজন চন্দ্র দাস (২৫), যূঁথী রানী দাস (৪৫), মৌ রানী দাস (১৬), মিনু রানী দাস বাসনা (৬৪), মো.আরিফ উদ্দিন (৩২) সহ ১০ জন। আহতদের উদ্ধার করে হাতিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা ও স্থানীয়রা জানান, বাড়ির মালিক রাজন চন্দ্র দাস সহ অন্যান্যরা দীর্ঘদির ধরে ওই বাড়িতে বসবাস করে আসছেন। কিছু দিন পূর্বে একই এলাকার রোকেয়া বেগম, বাবুল উদ্দিন, বেলাল উদ্দিন, মোছলেহ উদ্দিন, নাছির উদ্দিন সহ কয়েকজন লোক রাজন চন্দ্র দাসকে বলে এই বাড়ি জমিটির মালিক রোকেয়া বেগম। তাই বাড়ির মালিকও তিনি। ওই বাড়িতে থাকতে হলে তাদের চাঁদা দিতে হবে। চাঁদা না দিলে বাড়ি ও ভূমি থেকে উচ্ছেদ করারও হুমকি দেয়। এ নিয়ে এলাকায় কয়েকবার শালিসী বৈঠকও হয়েছে। তবে রোকেয়া বেগমের পক্ষ থেকে জমি সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। এর জের ধরেই ক্ষিপ্ত হয়ে সন্ত্রাসীরা রাজন চন্দ্র দাসের বাড়ীতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। এতে বাধা দিতে গেলে ১০ জনকে পিটিয়ে আহত হরা হয়। হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুস সামাদ জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ বিষয়ে হাতিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
উৎসাহ উদ্দীপনায় নোয়াখালীতে বই বিতরণ উৎসব
“বই হোক নিত্য সঙ্গী” শ্লোগানে শিশু-কিশোর শিক্ষার্থীদের মাঝে খুশির বারতা নিয়ে উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে নোয়াখালীতে বই উৎসব’২০১৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় জেলা শহর মাইজদীর লক্ষ্মীনারায়ণপুর পৌর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও এমএ রশিদ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অংশগ্রহনে এ বই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিও) আনোয়ার হোসেন সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে প্রাথমিক বিভাগের বই উৎসবের উদ্বোধন করে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, নোয়াখালী জেলা প্রশাসক বদরে মুনীর ফেরদৌস। এসময় আরো বক্তব্য রাখেন, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুর রব, সহকারি ভূমি কর্মকর্তা সামছুজ্জামান, জেলা আ’লীগের যুগ্ম সম্পাদক মমিন উল্লাহ বিএসসি, এমএ রশিদ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হুমায়ূন কবির প্রমুখ। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিও) আনোয়ার হোসেন সিদ্দিকীর জানান, জেলার সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ লাখ ৫১ হাজার ছাত্রছাত্রীর জন্য প্রয়োজন ২৫ লাখ ৩শত ৪৪টি বই। বই উৎসবের মাধ্যমে বর্তমানে ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৯৯৪টি বই বিতরণ করা হবে। বাকীগুলো হাতে এসে পৌঁছালে পরে বিতরণ করা হবে। জেলার উপকূলীয় চরাঞ্চলসহ সব স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের মাঝে এসব বই বিতরন করা হবে। অন্যদিকে, জেলা মধ্যামিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুর রব জানান, জেলার মধ্যামিক পর্যায়ে ১২টি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও ২৬৮টি বেসরকারি বিদ্যালয়ের এক লাখ ৬২ হাজার ৮৩ জন শিক্ষার্থীর জন্য ৩১ লাখ ৪৬ হাজার ৬টি বই বিতরণ করা হবে।
মন্তব্য চালু নেই